রাষ্ট্রীয় অবদানের কোটায়

শেখ হাসিনার গাড়ির চালকরাও নেন প্লট বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪৭
অ- অ+

ঢাকার কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে রাষ্ট্রীয় অবদানের নামে শতাধিক প্লট বরাদ্দের পেছনে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য উদঘাটন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দপ্তরের ১৫ জন গাড়িচালকের নামেও প্লট বরাদ্দের চিঠি পাঠানো হয়েছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীতে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত এক এনফোর্সমেন্ট অভিযানে এসব তথ্য উঠে আসে। পরদিন আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ অভিযান পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ‘জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য অবদান’র ছায়ায় রাজউকের আওতাধীন ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে শতাধিক প্লট দেওয়া হয়েছে যাদের অনেকেই প্রকৃতপক্ষে এসব অবদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার দপ্তরের ১৫ জন গাড়িচালকের অনুকূলে তিন ও পাঁচ কাঠা করে প্লট বরাদ্দের নির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে রাজউক চেয়ারম্যানকে ১৫ জন গাড়িচালকের নামে প্লট বরাদ্দের নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে প্রতি দুইজন চালকের জন্য একটি তিন কাঠার প্লট এবং তিনজন চালকের জন্য একটি পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ দিতে হবে।

গাড়িচালক যাদের নাম রয়েছে:

প্লট পাওয়া চালক হলেন— ভিভিআইপি গাড়িচালক সাইফুল ইসলাম, সফিকুল ইসলাম, ভিডিআইপি অ্যাম্বুলেন্সচালক নূরুল ইসলাম লিটন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের গাড়িচালক রাজন মাদবর, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিবের গাড়িচালক মাহবুব হোসেন, একান্ত সচিব-১-এর গাড়িচালক মো. শাহীন, একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক মতিউর রহমান, সহকারী একান্ত সচিব-১-এর গাড়িচালক নূর হোসেন বেপারী, সহকারী একান্ত সচিব-২-এর গাড়িচালক বোরহান উদ্দিন, বিশেষ সহকারীর (মশিউর রহমান হুমায়ুন) গাড়িচালক বেলাল হোসেন।

তাছাড়া চিফ ফটোগ্রাফারের গাড়িচালক মিজানুর রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-১-এর গাড়িচালক বাচ্চু হাওলাদার, তার একান্ত সচিব-১-এর শাখার নথিপত্র পরিবহনের দায়িত্বে নিয়োজিত গাড়িচালক নুরুল আলম, বিশেষ সহকারীর (ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া) গাড়িচালক নুরনবী (ইমন) এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২-এর গাড়িচালক মো. শাহীন।

তবে এই চালকরা প্রকৃতপক্ষে প্লট পেয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্ভবত তারা পেয়েছেন, কারণ সেই সময় সরকার ছিল আওয়ামী লীগের। তবে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না; তদন্তে বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে।’

দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম জানান, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দের নথিপত্র পর্যালোচনার সময় ২০০৯ সালের বরাদ্দ নীতিমালার আলোকে ৯৩৪টি প্লট বরাদ্দের তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু নীতিমালার ১৩(এ) ধারাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা লঙ্ঘন করে এসব বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এনফোর্সমেন্ট টিম পুরো বিষয়টির বিস্তারিত রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করছে। পর্যবেক্ষণের পর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হবে।’

দুদক সূত্র বলছে, তদন্ত প্রসারিত হলে আরও বিস্তৃত অনিয়মের চিত্র সামনে আসতে পারে।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আসিয়ানের যুদ্ধবিরতির উদ্যোগে থাইল্যান্ডের অনীহা, হতাহত বাড়ছে সীমান্তে
দগ্ধদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক: বার্ন ইনস্টিটিউট
মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত
মির্জাপুরে টনসিলের অস্ত্রোপচারের পর শিশুর মৃত্যু  
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা