সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের পাশে দাঁড়ায়নি কোনো আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০০:৩০
অ- অ+

যিনি একসময় দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন, শত শত আইনজীবী যাঁর এজলাসে দাঁড়িয়ে বিচার প্রার্থনা করতেন— তিনি নিজেই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন নিঃসঙ্গভাবে। যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আব্দুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের পক্ষে বৃহস্পতিবার আদালতে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।

এদিন রাতে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালতে তাকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক মো. খালেদ হাসান। আদালতের কাছে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানানো হয়। শুনানির সময় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী অবস্থান নেননি।

আদালতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামসহ বিভিন্ন আইনজীবী সংগঠনের নেতারা। শুনানিকালে তারা সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বারের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, “খায়রুল হক ছিলেন হাসিনার কৃতদাস। তার হাত ধরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়েছে। সেই পাপের ফলেই আজ তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।”

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আজিজুল হক দিদার বলেন, “তিনি কলঙ্কিত এক প্রধান বিচারপতি। তার রায়ের জোরে হাজার হাজার মানুষ নির্যাতিত, গুম ও খুন হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনা পর্যন্ত তার কারণে স্বৈরাচারী রূপ নিতে বাধ্য হন।”

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, “তিনি এই হত্যার উসকানিদাতা। আমরা চাই, এই মামলায় তার সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।”

এ সময় খায়রুল হককে আদালতে বসা অবস্থায় হাসতে দেখা যায়।

ঢাকা বারের সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, “তিনি ছোটবেলা থেকেই পাপী ছিলেন। যিনি এত পাপ করেছেন, তার একা থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রধান বিচারপতির আসনে বসেও তিনি আসনকে কলঙ্কিত করেছেন।”

সব বক্তব্য শুনে বিচারক মো. ছানাউল্ল্যাহ বলেন, “মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করতে হয় তার কর্ম দিয়ে। আগে আপনারা বিচারকদের শ্রদ্ধা করতেন, আজ কেন করেন না—সেটা বলছে সময় ও বাস্তবতা। এই ঘটনা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।”

পরে শুনানি শেষে আদালত খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী এলাকায় যুবদল কর্মী আহাদকে গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় গত ৬ জুলাই নিহত আহাদের বাবা মো. আলাউদ্দিন যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয় এবং আরও ১ থেকে ২ হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এই মামলার ৪৪ নম্বর আসামি।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এলএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আসিয়ানের যুদ্ধবিরতির উদ্যোগে থাইল্যান্ডের অনীহা, হতাহত বাড়ছে সীমান্তে
দগ্ধদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক: বার্ন ইনস্টিটিউট
মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত
মির্জাপুরে টনসিলের অস্ত্রোপচারের পর শিশুর মৃত্যু  
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা