আমাদের লড়াইটা কেবল বাংলাদেশে নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী: নাহিদ ইসলাম

আমাদের লড়াইটা কেবল বাংলাদেশে নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের লড়াই শেষ হয়নি। আমাদের লড়াই মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদ বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে শুরু করেছিলাম। আমরা নতুন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। সেই লড়াই এখনো শেষ হযনি। কারণ আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ পাইনি। জনগণের পাশে আমাদেরকে আবারো দাঁড়াতে হবে। এলাকায় এলাকয় যে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি আবার নতুন করে শুরু হচ্ছে, মুজিববাদ পুনর্বাসিত হচ্ছে, চাঁদাবাজ-দখলদারিত্বের রাজনীতি ফিরে আসছে, আমাদেরকে সেই রাজনীতি ঠেকিয়ে দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় পদযাত্রা শেষে হবিগঞ্জ শহরের এম. সাইফুর রহমান অডিটোরিয়ামের সামনে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি কয়েকদিন আগে যৌথবাহিনী দ্বারা যুবদলের একজন কর্মীকে হত্যা করা হযেছে। আমরা সেই হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা যেমনভাবে চাঁদাবাজির বিরোধিতা করি, তেমনভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডেরও বিরোধিতা করি।
আমরা হবিগঞ্জের স্বাস্থ্য সমস্যার কথা জানি। কিছু হলেই ঢাকা বা সিলেট যেতে হয়। হবিগঞ্জের দূর-দূরান্ত থাকা মানুষেরা স্বাস্থ্যসেবা পায় না। হবিগঞ্জের তরুণরা কর্মসংস্থান পায় না। আমরা নতুন বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার সকল সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে চাই। যেখানে স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করা হবে। তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। লুটেরা-দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা হবে।বাংলাদেশের মুসলিমদের প্রতি ভারতের হিন্দুত্ববাদের হিংসা ছড়িয়ে আছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের এই লড়াইটা কেবল বাংলাদেশে নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী। আমরা দেখেছি বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা হচ্ছে। ভারতীয় মুসলিমদের বাংলাদেশি বলে পুশইন করা হচ্ছে। আমাদের তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এনসিপি পশ্চিমাঞ্চলের মূখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মূখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি।
আখতার হোসেন বলেন, আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের কথা বলি, সম্প্রীতির কথা বলি, পরিস্থিতির উপর রাজনীতির কথা বলি। হাট-মাঠ-বাজারে চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের রাজনীতির পরিবর্তে জনগণের স্বার্থে নীতিনির্ধারণের জন্য পরিস্থিতির উপর রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। এই নতুন বাংলাদেশে আমরা রাজনৈতিক খেলা দেখতে চাই না।
নতুন বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে পেছন থেকে টেনে ধরে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। বিচার বিভাগের কাছে আওয়ামী দোসরদের সোপর্দ করতে হবে। এই বাংলাদেশকে গড়তে হলে একটা নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। আমরা আহ্বান জানাই- বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হলে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখতে হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, হবিগঞ্জ জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ উদ্দিন তারেক ও হবিগঞ্জ পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
এর আগে এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হবিগঞ্জ এসে পৌঁছায় এনসিপির পদযাত্রা। এরপর হবিগঞ্জ সার্কিট হাউজে এনসিপি নেতারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৭ শহীদ পরিবার ও আহতদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা শহীদ পরিবার ও আহতদের সাথে থাকার আশ্বাস দেন। এরপর সার্কিট হাউজের সামন থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে এম. সাইফুর রহমান পৌর টাউন হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
(ঢাকা টাইমস/২৪জুলাই/এসএ)

মন্তব্য করুন