হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়া, গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গেলেন তারেক রহমান

দেশে ফেরার উদ্দেশে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গাড়ি চালিয়ে তাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যান।
আজ সোমবার (৫ মে) লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা নাগাদ) কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া।
বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে খালেদা জিয়াকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে পথের পাশে দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা ও বিদায় জানান।
আগামীকাল মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির চেয়ারপারসন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।
লন্ডন অবস্থানরত খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ম্যাডাম রওনা হবেন। লন্ডন থেকে ঢাকার যাত্রাপথে দোহায় যাত্রাবিরতি আছে। সিডিউল অনুযায়ী বিশেষ বিমানটি দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে স্থানীয় সময় রাত আড়াইটায়।
সেখানে জ্বলানি নেওয়ার জন্য এক ঘণ্টার যাত্রবিরতির পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবে খালেদা জিয়াকে বহনকারী বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।
এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন ও দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বরণ করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি। ঢাকায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’প্রস্তুত করা হয়েছে তার জন্য।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া ওই একই রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে কাতারের আমির এই বিশেষ বিমান পাঠিয়েছিলেন। এবারও সেই বিশেষ বিমানে করেই মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন তিনি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা আশা করছি সময়মতোই উনি (খালেদা জিয়া) ঢাকায় পৌঁছাবেন।’
মির্জা ফখরুল দলের তরফ থেকে অনুরোধ করেছেন, যানচলাচল যাতে নির্বিঘ্ন থাকে, সেজন্য নেতা-কর্মীরা যেন সড়কে না নামেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, কালকে এসএসসির পরীক্ষা আছে একটা সাবজেক্টে। আমি সকলকে অনুরোধ করতে চাই, রাস্তার ওপরে যেন কেউ না দাঁড়ায়। যারা অভ্যর্থনা জানাবেন তারা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে যেন ম্যাডামকে অভ্যর্থনা জানান। ‘
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরছেন তার দুই পুত্রবধূ— ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শার্মিলা রহমান। তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ঢাকায় থাকাকালে তার বাবার ধানমন্ডির বাসায় অবস্থান করবেন। তার নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
খালেদা জিয়া ও সৈয়দা শার্মিলা রহমান উঠবেন গুলশানের ৮০ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ফিরোজায়। সেখানে পুলিশ ও চেয়ারপারসনের সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
বাড়ির ভেতরের সব কক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সামনের সবুজ আঙিনায় ফুলগাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে পরিবেশ। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ম্যাডামের বাসা কমপ্লিটলি রেডি। বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা, বাসার আঙিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা কোনো কিছুই বাদ নেই। ম্যাডামের স্বজনরা সব কিছু তদারকি করেছেন। এখন আমরা সবাই ম্যাডামের অপেক্ষায় আছি।’
বেগম খালেদা জিয়া এই মুহূর্তে কেমন আছেন জানতে চাইলে শায়রুল কবির বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তিনি আগের চাইতে ভালো আছেন। আমরা আশা করছি, যথাসময়ে ম্যাডাম হিথ্রো বিমানবন্দরে থেকে বিমানে উঠতে পারবেন। দেশবাসী দোয়া করবেন ম্যাডাম যেন ভালোভাবে দেশে পৌঁছাতে পারেন। ম্যাডামের ছেলে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব নিজে ড্রাইভ করে ম্যাডামকে হিথ্রো বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন।’
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডনের ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/৫মে/জেবি/মোআ)

মন্তব্য করুন