রাজধানীর কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীতে ভোটার উপস্থিতি কম। ঢাকার বেশ কয়েকটি আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আগের মতো নারী-পুরুষ ভোটারদের লাইন নেই। ভোটকক্ষ পুরো ফাঁকা। কেন্দ্রের ভেতরে নৌকা মার্কা ছাড়া অন্যান্য মার্কার পোলিং এজেন্ট দুই থেকে তিনজন। কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের নেতাকর্মীদেরও কোনো উপস্থিতি নেই। ভোটার সংখ্যা কম এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যথেষ্ট অংশগ্রহণ না থাকায় কোনো ধরনের উত্তেজনাও দেখা যায়নি।
রবিবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-১০, ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৫ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশিক ইমাম। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরেছি। ভোটার উপস্থিতি কম দেখতে পাচ্ছি।’
ঢাকা-১৫ আসনে রোটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজে মোট দুটি কেন্দ্র। এখানে কেন্দ্র ১৪-তে পুরুষ ভোটার ২১৪৮ জন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৭২টি। এই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন বলেন, শীতের দিন বলে হয়তো ভোটার তুলনামূলক কম।
ঢাকা-১৪ আসনের রূপনগরের মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ভোটকেন্দ্রেও নেই কাঙ্ক্ষিত ভোটার। এখানে বিভিন্ন ভোটকক্ষ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায়, একেকটি কক্ষে দুপুর পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১৫ থেকে ৩০টি।
ভোটকেন্দ্রে একটি পরিবারের সঙ্গেও কথা হয়। দুই সন্তানকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছেন মা-বাবা। এই পরিবারটি জানায়, তাদের ছোট মেয়ে এবার প্রথম ভোটার, তাই আনন্দ নিয়েই এসেছেন তারা। সারাজীবন আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করায় এবারেও ভোট দিয়েছেন নৌকায়।
ষাটোর্ধ্ব বছর বয়সের ভোটার মুজিবুল হাসান বলেন, ‘একপক্ষ তো ভোট বর্জন করেছে তাই আমরা আগের মতো লাইন দেখতে পারছি না। এতে নিরিবিলি ভোট দিতে পেরেছি। কে এলো কী এলো না, তার চেয়ে বড় কথা ভোট আমার অধিকার।’
ঢাকা-১৫ আসনে শেরে বাংলা নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট চারটি ভোটকেন্দ্র। নারী-পুরুষ মিলিয়ে এই কেন্দ্রে দুপুর পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ১৫০। রিটার্নিং অফিসার নাসিরউদ্দীন বলেন, এখনও মন্দা যাচ্ছে। আশা করছি দুপুরের পর বাড়বে।
ঢাকা-১০ আসনের সিটি কলেজের ৩৩ ও ৩৫ নম্বর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ঘুমিয়ে, পেপার পড়ে ও গল্প করে সময় কাটাতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রার্থীদের এজেন্টরাও অলস সময় পার করছেন।
ঢাকা-১০ আসনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এজেন্ট আছে নৌকাসহ ২-৩ জনের।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই দুটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ৩৩ নম্বর কেন্দ্রের ১ নম্বর ভোট কক্ষে এক নারী পোলিং অফিসার বেঞ্চের ওপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন। ভোটার না থাকায় এই কক্ষে দায়িত্বরত বাকিরাও অলস বসে আছেন।
৩৩ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোসাদ্দেক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঢাকা-১০ আসনে ৩৩ নম্বর কেন্দ্রে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৯৪টা ভোট পড়েছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৩৩৩ জন।’
এছাড়া ৩৫ নম্বর কেন্দ্রেও ভোটার উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ১৬৮টি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার সৌমিত্র সরদার। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে লাঙ্গলের কোনো এজেন্ট নেই। নৌকাসহ ২-৩ প্রার্থীর এজেন্ট আছে।’
এসব কেন্দ্রের বাইরে নৌকা সমর্থকদের ভিড় দেখা গেছে। কেন্দ্রের বাইরে ভোটার স্লিপ দিয়ে সহায়তা করছেন তারা। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের চেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের ব্যাজ পরা কর্মীর সংখ্যা অনেক বেশি দেখা গেছে।
(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/এসআরপি/কেএম)

মন্তব্য করুন