ফেনীতে সবজি বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে মুক্ত বাজার

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৪০

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার দাগনভূঞা বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রয়েছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে এর প্রভাব লক্ষণীয়। এ বাজারের দোকানিদের আড়তদার যে দাম নির্ধারণ করে দেয় সেই দামে বিক্রি করতে হয়। সবাই একদামে বিক্রি করবে, সবজি পঁচে যাবে ফেলে দিবে, তাও দাম কমাবে না।

সম্প্রতি দাগনভূঞা বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখিসহ এবাজার থেকে সবজি ক্রয় করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানায় অনেক সচেতন নাগরিক। যা দৃষ্টিগোচর হয় দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ও দাগনভূঞা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির। এরপর উনারা সম্মিলিতভাবে বাজারের সবজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় সপ্তাহে দুদিন শনিবার ও মঙ্গলবার পৌর শহরের ডাকবাংলো এলাকায় মুক্ত বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই মুক্ত বাজারে সকল ধরনের তাজা শাক-সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস নিত্যপ্রয়োজনীয় সব বিক্রি হয়। এ বাজারে নেই ভাড়া, নেই খাজনা, নেই কোনো সিন্ডিকেট। কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত সবজির সঠিক দাম পায় এবং বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ঠেকাতেই এই মুক্ত বাজার বসানো হয়েছে।

মুক্ত বাজারের সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, আগে আমরা সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেশি দিয়ে আড়তদার থেকে সবজি কিনে আড়তদারের নির্ধারণ করা দামে বাজারে সবজি বিক্রি করতে হতো। কিন্তু এখন মুক্ত বাজারে আমরা কুমিল্লার নিমসার বাজার থেকে পাইকারি সবজি কিনে নিয়ে এসে কম দামে বিক্রি করতে পারি। যা যেভাবে কেনা সেভাবে লাভ ধরে বিক্রি করছি আর মুক্ত বাজারে কোন ধরনের ভাড়া বাজারের খাজনাও দিতে হচ্ছে না। আগের তুলনায় আমাদের বিক্রি বেড়েছে কাস্টমারও সন্তুষ্ট।

কৃষক মো. আমিন উল্ল্যা বলেন, মুক্ত বাজার হওয়াতে আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। আগে আমরা আমাদের সবজিগুলা বাজারে আড়তদারের কাছে বিক্রি করে চলে যাওয়া লাগতো, আমাদের সবজির সঠিক দাম পাইতাম না। এখন মুক্ত বাজারে আমরা নিজেরা বসে নিজেদের সবজি বিক্রি করি আগের থেকে দামও বেশি পাই।

বাজারের ক্রেতা মাহমুদুল হাসান জানান, মুক্ত বাজার হওয়াতে আমরা সব জিনিসপত্র মুলামুলি করে কিনতে পারছি। আগে যে দোকানেই যেতাম একদাম ছিল। এখন গ্রামের অনেক কৃষকও দোকান বসিয়েছে যাদের কাছ থেকে আমরা তাজা শাক-সবজি কিনতে পারছি। এজন্য দাগনভূঞার মেয়র সাহেবকে ধন্যবাদ।

দাগনভূঞা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ইফতেখার শিবলু জানান, সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য এবং প্রান্তিক কৃষকরা যেন তাদের কৃষি পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারে সে লক্ষ্যেই মূলত এ বাজার বসানো হয়েছে।

দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফাঁরুক খান জানান, দাগনভূঞা একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। দীর্ঘদিন এবাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে মানুষ জুলুমের স্বীকার হয়েছে। গরীব, নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ ও কৃষকদের কথা চিন্তা করেই আমি মুক্ত বাজার করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ বাজারে কোনো প্রকার খাজনা দিতে হবে না। আমিসহ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্বে যারা আছেন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। আমি আশা করি মুক্ত বাজারের জন্য মানুষ উপকৃত হবে এবং কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজির ন্যায্য মূল্য পেয়ে সবজি উৎপাদন অব্যাহত রাখবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :