নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ বলেনি যুক্তরাষ্ট্র: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে, দুদেশের স্বার্থই আছে এখানে।”
রবিবার সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। আমরাও তাদের সঙ্গে কাজ করব। আমরা কারও গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করব না। সারা দুনিয়া এখন সংকটে চলছে। এ মুহূর্তে কারও গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করে লাভ নেই। কিন্তু কারো সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নয়ন হোক সেটা চাই। এটা যার যার স্বার্থের জন্য, এটা আমাদেরও প্রয়োজন। আমেরিকারও ইন্টারেস্ট আছে, সবার ইন্টারেস্ট আছে, আমাদেরও আছে।”
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনের পর ম্যাথিউ মিলার বক্তব্যে দুধরনের কথা বলেছেন। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এটাও বলেছে বাংলাদেশের প্রতি অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক রাখা আমাদের দায়িত্ব। সেখান থেকে সম্পর্ক রাখি এবং সম্পর্ক রাখার অঙ্গীকার আছে এবং সেটা করে যাব।”
“নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে তারা আগেও বলেছে। তবে তারা বলেনি নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে।” বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হয়নি, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর চেয়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কী হবে আমরা তা জানি না। বিএনপি নির্বাচনে এলো না, তার মানে কি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হলো না?”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করব না। সম্পর্কটা থাকুক। এখানে আমেরিকারও স্বার্থ আছে, আমাদেরও আছে।”
এর আগে সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে।
আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চীন ভূমিকা নিতে পারে। ১১-১২ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে। এটা বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত বোঝা। এমনিতেই বিশ্বে সংকট চলছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আসা সাহায্যও আগের থেকে অনেক কমে গেছে। এত লোককে খাওয়ানো বাংলাদেশের পক্ষে অনেক বড় বোঝা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করে মিয়ানমার যেন তাদের নাগরিকদের ফেরত নেয় সে বিষয়ে চীন ভূমিকা রাখতে পারে। জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, তারা চেষ্টা করবেন এবং সহযোগিতা জোরদার করবেন।”
মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ অচলাবস্থা, আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাত, যার রেশ আমাদের সীমান্তে এসে গেছে। গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। জনমনে আতঙ্ক তো ছড়ায়। যুদ্ধটা তাদের অভ্যন্তরীণ। কিন্তু সীমান্তে গোলাগুলির আওয়াজ আমাদের এখানে যখন চলে আসে স্বাভাবিক কারণে ভয়ভীতিও আসতে পারে। এজন্যে চীনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি।”
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, “নির্বাচনে চীন সাপোর্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। পালাক্রমে অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন।”
ভূরাজনৈতিক কৌশলের কারণে এখানে ভারত ও চীনের একটা শক্তি বলয় আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ভারত ও চীনের কনফ্লেক্ট অব ইন্টারেস্ট আছে। এটা তাদের বিষয়। আমরা আমাদের স্বার্থ নিয়ে আছি, আমরা যেন তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্ত না হই। মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আমির সংঘাতে আমাদের কিছু কিছু ক্ষতি তো হচ্ছে। আকাশসীমা লঙ্ঘন হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের চমৎকার সম্পর্ক। এক্ষেত্রে তারা কিছু করতে পারে কি না বলেছি।”
চীনের অর্থায়নে চলমান মেগা প্রজেক্টগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। বলেন, “বিআরটি প্রকল্প নিয়েও কথা হয়েছে।”
ঢাকাটাইমস/৪ফেব্রুয়ারি/জেএ/এফএ