পটুয়াখালীতে রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের দুই খুঁটি রেখেই নির্মাণকাজ শেষ
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের উত্তর চরমোন্তাজ গ্রামের একটি সড়কের মাঝে বিদ্যুতের দুটি খুঁটি রেখেই শেষ করা হয়েছে সড়কের নির্মাণকাজ। ফলে ওই সড়কে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রী ও যানবাহন চালকরা। ফলে যান চলাচলের ব্যাঘাতসহ বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। স্থানীয়দের দাবি খুঁটি দুইটি সরিয়ে অন্যত্র স্থাপনের।
স্থানীয়রা জানায়, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী ও চরমার্গারেট গ্রামবাসীদের সহজে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যাতায়াতের পথ এই সড়ক। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ. মতিনের বাড়ি সংলগ্ন খালের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় ৬ মাস আগে ঠিকাদার সেতু ও সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেছে। তবে সেতুর আর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলেও সেতুর পশ্চিম পাড়ে সংযোগ সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সড়কের পশ্চিম পাড়ের ঢালে ও চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়ে গেছে।
ঠিকাদার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরিয়ে কাজ শেষ করে চলে গেছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যাত্রী ও চালকদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
ওই সড়কের মোটরসাইকেল চালক ইউসুব মাতুব্বর জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আমাদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে হয়।সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকার কারণে দিনে যেমন-তেমন গাড়ি চালানো গেলেও রাতে ইজিবাইক, টমটম কিংবা উল্কা অনেক সময় যেতে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। সড়কের ওপর থেকে এ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো হলে আমাদের কষ্ট লাঘব হবে। ওই এলাকার বাসিন্দা বাহাদুর প্যাদা বলেন, এ সড়ক দিয়ে আমার মাদরাসায় অনেক শিক্ষার্থী আসা-যাওয়া করে। এই সড়ক দিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচল করে। এর মধ্যে একটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ভয়ে তাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এ সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দ্রুত সরিয়ে নিলে আমরা শঙ্কামুক্ত হব। চরমোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান একে সামসুদ্দিন আবু বলেন, সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে পথযাত্রী ও যানবাহন চালকদের। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন-উপজেলা সংযোগ সড়কের অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় ৬৬ মিটারের একটি সেতু ও ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৬ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এ সড়ক সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মো. জামাল হোসেন জানান, দরপত্র অনুযায়ী সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার পর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কালে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সড়কের ওপর চলে আসছে। এলজিইডি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে খুঁটি দুইটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিসের কোনো তৎপরতা দেখেনি। এছাড়াও দরপত্রে বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দও ছিল না। তাই যেখানের খুঁটি সেখানে রেখেই তাদের কাজ শেষ করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আসলে চরমোন্তাজ ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণের রয়েছে ভোলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিষয়টি তাদের অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভোলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর চেষ্টা চলছে।
ভোলার দক্ষিণ আইচা পল্লী বিদ্যুতের সাব-জোনাল অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. কাওসার আহমেদ বলেন, চরমোন্তাজে সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি থাকার বিষয়টি তার জানা নেই। তবে বিদ্যুতের খুঁটি সরানো একটু সময়ের ব্যাপার। দরপত্র আহ্বান ও ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। এলজিইডির চিঠি পাওয়ার পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।
(ঢাকা টাইমস/১৭মে/এসএ)
মন্তব্য করুন