বিভিন্ন ফলের গায়ে স্টিকার লাগানো থাকে কেন জানেন?

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফলের গায়ে স্টিকার ব্যবহার করা হয় সেগুলোর গুণমান, দাম ও কী ধরনের প্রক্রিয়ায় ফলটি উৎপাদিত হয়েছে তা বোঝাতে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোনো নিয়ম নেই। বরং এ দেশে স্টিকার ব্যবহার করা হয় ফলের খুঁত ঢাকতে কিংবা ফলগুলোকে অন্য ফলের তুলনায় ভালো প্রমাণ করতে।
অনেক সময় এই ধরনের স্টিকার দেখিয়ে বেশি দামও চাওয়া হয় ক্রেতাদের কাছে। কাজেই ফলের গায়ে স্টিকার দেখেই সেই ফল ভালো বলে ভেবে নেওয়ার কোনো কারণ বাংলাদেশে অন্তত নেই বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বাজারে গেলেই চোখে পড়ে ফলের গায়ে লাগানো ছোট্ট স্টিকার। আম, আপেল, কমলালেবু নাসপাতিসহ প্রায় সব ধরণের ফলেই এই ছোট্ট স্টিকার লাগানো থাকে। বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করতেই জবাব মেলে, ‘এই ফলগুলো বিদেশি এবং গুণগত মান ভালো।’
ক্রেতারাও সেই বিশ্বাসে কিনে নেন ফলগুলো। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, কেন ফলের গায়ে স্টিকার লাগানো থাকে? এর আসল কারণ কী হতে পারে?
স্টিকার মারা মানে সেই ফল ভালো হবে এমন কোনো কথা নেই। কারণ প্রতিটি স্টিকারের আলাদা আলাদা অর্থ আছে। তাই বাজার থেকে স্টিকার লাগানো ফল কেনার আগে জেনে নিন, কোন স্টিকারের কী মানে। তাহলে সেই ফল কিনবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।
ফলের গায়ে লাগানো স্টিকারে যদি চার সংখ্যার কোড থাকে এবং সেটি শুরু হয় ৩ বা ৪ দিয়ে, তাহলে বুঝতে হবে এটি এমন কোনো জায়গায় চাষ হয়েছে যে জমিতে কৃত্রিম সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।
খাদ্যের গুণমান নির্ণায়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আইএফপিএস’ বলছে, স্টিকারে যদি চার সংখ্যার কোনো কোড থাকে, তাহলে এর অর্থ- ফলটি উৎপাদনে সাধারণ সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে।
স্টিকারে যদি ৫ ডিজিটের কোড থাকে এবং শুরুর সংখ্যাটি ৮ হয়, তার মানে ওই ফলটি জেনেটিক্যালি মডিফায়েড। সেক্ষেত্রে এই ফল শরীরে গেলে আপনার জিনের ক্ষতি হতে পারে। নিজেরা বটেই, শিশুদের এসব ফল থেকে দূরে রাখুন।
ফলের গায়ে লাগানো স্টিকারে যদি ৫ সংখ্যার কোড থাকে আর তা শুরু হয় ৯ দিয়ে, তাহলে বুঝবেন সেটি সম্পূর্ণ জৈব প্রক্রিয়ায় চাষ করা। যাতে কোনো কীটনাশক ও রাসায়নিক সার নেই। যা সবচেয়ে নিরাপদ।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত স্টিকারগুলো যে আঠা দিয়ে ফলের গায়ে লাগানো থাকে, তার উপরেও বিশেষ নজরদারি নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই এই ধরনের আঠায় ব্যবহৃত রাসায়নিক উল্টো ফল ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
অনেক সময়ে এসব স্টিকার বদলেও দেন অনেক অসাধু মানুষ। তাই চেষ্টা করুন, পরিচিত ফল বিক্রেতা বা বিশ্বাসযোগ্য কোনো দোকান থেকে ভালো করে জেনে বুঝে ফল কিনতে।
(ঢাকাটাইমস/১৭মে/এজে)

মন্তব্য করুন