‘জ্বলবে আগুন শহরজুড়ে, হামলা-ছিনতাই বন্ধ না হলে’ স্লোগানে শিক্ষার্থীদের মিছিল

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া হামলা এবং ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার বরাবর পৃথক দুটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।
সোমবার (১৪ জুলাই) কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে বিকাল ছয়টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
পূবালী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিমের উপস্থিতিতে পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা 'তুমি কে আমি কে? কুবিয়ান কুবিয়ান', 'সন্ত্রাসের আস্তানা, এই কুমিল্লায় হবে না', 'কুবিয়ানদের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'কুবিয়ানদের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন শহরজুড়ে', 'কুবিয়ানদের ওপর হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই!', 'কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও' শীর্ষক স্লোগান দেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা চারটি দাবি জানান। দাবিসমূহ হলো— কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে টাউন হলে বাস রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ, অপরাধ দমনে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কুমিল্লা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থান সিসিটিভির আওতায় আনা, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন এবং অবৈধ চালকদের দৌরাত্ম্য কমাতে ও অপরাধ প্রবণতা রোধে সকল সিএনজি, মিশুক ও অটোরিকশা চালককে লাইসেন্সের আওতায় আনা ও নির্দিষ্ট ভাড়ার চার্ট নির্ধারণ করা।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম ভূঁইয়া বলেন, 'আমাদের একটাই পরিচয় আমরা কুবিয়ান। কুমিল্লাবাসী কুবিয়ানদের আলাদা ভাবে। তাদেরকে আমরা ম্যাসেজ দিতে চাই, কুবিয়ান এবং কুমিল্লাবাসীর পরিচয় একই। জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লার যে অবদান, সারাদেশে যে সুনাম তা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে হয়েছে। আমাদের উচিত সকলের এক হয়ে সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।'
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফ ভুঁইয়া বলেন, 'এই কিশোর গ্যাং সমাজের একটি ক্যানসার। আমি জেলা প্রশাসনকে বলতে চাই এই কিশোর গ্যাং শুধু কুবিয়ানদের সমস্যা না, এটা সমাজের সমস্যা। মাঝে মাঝে কিশোর গ্যাং দমনে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন দলীয় সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপে তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এবারও যদি প্রশাসন এমন কাজ করে, তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'
এবিষয়ে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, 'আপনারা দূর থেকে কিছু যৌক্তিক দাবি নিয়ে আসছেন, আমি দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে দেখব। যেসব জায়গায় ছিনতাইকারীর মতো অপরাধ বেশি ঘটে সেখানে আমরা টহল বৃদ্ধি করব।'
এর আগে গত ১২ জুলাই কুমিল্লা শহরের ঈদগাহ মাঠের পাশে ছিনতাইয়ের শিকার হন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরবিন্দু সরকার। গত ০৯ জুলাই শহরের সালাউদ্দিন নামক স্থানে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিম আহমেদ।
(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/এলকে)

মন্তব্য করুন