সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার করার ওপর গুরুত্বারোপ আমীর খসরুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২৫, ২২:২৪
অ- অ+

বাংলাদেশি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনা শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার বিকালে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নিয়ে আমরা আজকে শিল্পপতিদের সাথে কথা বলেছি, বিশেষ করে রপ্তানিকারক বড় বড় শিল্পপতি যারা জড়িত আছেন তাদের সাথে কথা বলেছি, বিজনেস লীডার যারা আছেন তাদের সাথে কথা বলে তাদের মতামত শুনেছি, তারা (শিল্পপতি-ব্যবসায়ীরা) সবাই মনে করছেন এই নেগোসিয়েশনটাকে শক্তিশালী করতে হবে।

এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে, এখানে ইন্ডাস্ট্রির একটি বিষয় আছে, গার্মেন্টস সেক্টর একটা বড় বিষয় আছে, এ্যাপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি বিষয় আছে, এখানে নিরাপত্তাজনিত কিছু বিষয় চলে আসছে এবং সেখানে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের একটা বিষয় আছে একটা বিষয় আছে সেই বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। আমরা আশা করছি, দেশের স্বার্থে, আমাদের দেশের আগামী দিনের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান অনেক কিছু জড়িত। এটাকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই এর একটা সুষ্ঠু সমাধান দরকার এই আজকে আমরা আলোচনায় বসেছি।

সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে চেষ্টা করব উনাদের (ব্যবসায়ীদের) মতামতগুলোসহ আমাদের বিষয়টা সরকারকে জানাব।

এখানে মনে রাখতে হবে, সমন্বিত একটা বিষয় আছে। আসলে বিষয়টা এককভাবে কিছু করার বিষয় নয়, সমন্বিতভাবে চেষ্টা করতে হবে যাতে এ থেকে আমাদের অর্জন করা যায় সেই চেষ্টা আমাদের থাকবে।

৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে তারা ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এরপর থেকে সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিষয়টি আলোচনায় বসে।

বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে পোশাক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, শুল্কের বিষয়ে বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসার চেষ্টা করছে। সেজন্য আলোচনাও চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শেষে দেশে ফিরে গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বসিরউদ্দিন বলেন, ‘আলোচনা ইতিবাচক’ তিনি বলেছেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়ে গেছে। সেগুলো আলোচনা করে অতি দ্রুত আমরা তৃতীয় দফার আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত যাচ্ছি। আশা করছি, আল্লাহর রহমতে ভালো ফল আসবে।

সরকারের আলোচনার মধ্যে ব্যবসায়িক নেতারা বিকালে বনানীর হোটেল সেরিনায় ব্যবসায়িক নেতাদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সাথে বৈঠক করলেন।

বৈঠকে ব্যবসায়িক নেতাদের ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি একে আজাদ ও সিমিন রহমান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, বিজেএমইএ‘র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড এন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকিন আহমেদ, বিকেএমইএ‘র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ‘র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, লেদার গুড়স এন্ড মেন্যুফেকচারস এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ নিজাম মনসুরসিরামিক মেন্যুফেকচারস এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাইনুল ইসলাম, ইকোনমিক জোনস ইনভেস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ জাব্বার, বাংলাদেশে টেরি টাওয়াল এন্ড লেলিন মেন্যুফেকচারস এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন ছিলেন।

আমীর খসরুর সাথে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাসভীরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদি আমিন ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, টোটাল এক্সপোর্টের একটা বিশাল আমরা যুক্তরাষ্ট্রে এক্সপোর্ট করি। সেখানে গার্মেন্টসের একটা বিশাল অংশ যায়। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্যে যায় তার সাথে জড়িত প্রায় ১৫/১৬ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি নয়, এটা সাথে অনেক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সস্পৃক্ত।

গার্মেন্টস সেক্টারে সাথে আরও অনেক খাত জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি আজকে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪শ বিলিয়ন ডলার এর সাথে আমাদের রপ্তানির পণ্যে যেটা যুক্তরাষ্ট্রে হয় এর একটা বিশেষ অবদান রয়েছে এটা আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে। আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। এটার সমাধান যদি সঠিকভাবে করতে না পারি তাহলে আমাদের অর্থনীতির সাথে জড়িত সবাই এ্যাফেক্টেড হবে।

(ঢাকা টাইমস/১৫জুলাই/জেবি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আজ মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ
উত্তরায় উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া দুই ফায়ারফাইটার আহত, শঙ্কামুক্ত
র‌্যাব সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে ‘মাদক ও মানি লন্ডারিং’ বিষয়ক আলোচনা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা