গার্ডিয়ান, রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরায় শোকাবহ মাইলস্টোন দুর্ঘটনা

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ জেট বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নড়ে চড়ে বসেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুলের শিক্ষার্থী। এছাড়া আগুনে দগ্ধ ও গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।
ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে— ‘বাংলাদেশের স্কুলে বিমান বাহিনীর জেট বিধ্বস্ত, কমপক্ষে ১৯ জন নিহত’।
রয়টার্স বলছে— ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমান কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত, আহত হয়েছেন আরও অনেকে’।
সিএনএন, তাদের প্রতিবেদন ও ভিডিওতে দুর্ঘটনার ধ্বংসযজ্ঞ এবং উদ্ধারকর্মীদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছে শিরোনামে— ‘ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জেট বিধ্বস্ত, কমপক্ষে ১৯ জন নিহত’।আল জাজিরা, শুধু মূল সংবাদ নয়, তাদের ‘এক্সপ্লেইনার’ বিভাগে ‘বাংলাদেশে বিমান দুর্ঘটনা: আমরা যা জানি, সর্বশেষ খবর কী?’ শিরোনামে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে— ‘বাংলাদেশের স্কুল ক্যাম্পাসে সামরিক প্লেন বিধ্বস্ত, কমপক্ষে ১৯ জন নিহত’, আর দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট শিরোনামে বলেছে— ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমান স্কুলে বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন নিহত, বেশিরভাগই শিশু’।
ভারতের এনডিটিভি টেলিভিশনে ‘ঢাকায় কলেজে জেট বিমান বিধ্বস্ত, ১৯ জন নিহত’ শিরোনামে ৯ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি বিশ্লেষণমূলক ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করেছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানটি বেলা একটার কিছু সময় পর স্কুলের ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ, বিজিবি, র্যাব যৌথভাবে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। আগুনে পুড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জাতীয় শোক ও শোকপ্রকাশ:
হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। একইসাথে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ এবং ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার দেশব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন