নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলের কোনোটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে টেকেনি

নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ১৪৪টি দলের কোনোটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রাথমিক ঘাটতি সংশোধনের সুযোগ হিসেবে এসব দলকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।
তিনি বলেন, “প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি পাঠানো হবে। পরে বাকি ৮২ দলকেও চিঠি দেওয়া হবে। প্রত্যেক দলকে ১৫ দিনের মধ্যে নিজেদের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।”
এর আগে ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। পরে সময় বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৪৪টি দল ১৪৭টি আবেদন করে। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো দলই প্রাথমিক বাছাইয়ে পাস করতে পারেনি। মূলত দলগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটি, নির্ধারিত সংখ্যক জেলা ও উপজেলা কমিটি এবং ভোটার সমর্থনের প্রমাণপত্রে ঘাটতি ছিল। আইন অনুযায়ী নিবন্ধন পেতে হলে একটি দলের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ জেলা, ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থন থাকতে হয়।
ইসির নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক আবেদন পাওয়ার পর কমিশন সেগুলো যাচাই-বাছাই করে। এরপর মাঠপর্যায়ে তদন্ত ও যাচাই শেষে শুনানি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। যথাযথ যোগ্যতা অর্জন করলে দলকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করে ইসি। নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নিজস্ব প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ৫৫টি দল নিবন্ধন পেয়েছিল, তবে শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। এগুলো হলো: জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি এবং জাগপা। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা পুনরায় নিবন্ধন পাওয়ার রায় পেলেও ইসি শুধু জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এবার কোনো ধরনের শিথিলতা রাখা হবে না। যোগ্যতার প্রমাণই হবে নিবন্ধনের একমাত্র ভিত্তি।
নিবন্ধনের আবেদন করেছে যেসব দল
যেসব দল ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে সেগুলো হলো-বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি) ও জাতীয় জনতা পার্টি।
এছাড়া বাংলাদেশ সর্ব-স্বেচ্ছা উন্নয়ন দল, কোয়্যালিশন-ন্যাশন্যাল পার্টি (সিএনপি), জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ-তিসারী-ইনসাফ দল, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপ), বাংলাদেশ জনতা পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ আজাদী পার্টি-বিএপি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ ইসলামিক জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট পার্টি (বিডিএম), বাংলাদেশ বেষ্ট পলিটিক্যাল পার্টি (বিবিপিপি), মানবিক বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএসডিপি) বাংলাদেশ আজাদী পার্টি (বিএপি), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), গণদল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (বিএনডিপি) ও ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছে।
এদিকে বাংলাদেশ গণবিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), জনতার দল, জাতীয় ন্যায় বিচার পার্টি, বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএনডিপি, বাংলাদেশ ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিআইডিপি), ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি (আইজিপি), জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দল-এনএফএফ, বাংলাদেশ নাগরিক কমান্ড, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ফেডারেশন, নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ জাতীয় দল (বিজেডি), জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাতীয় কৃষক শ্রমিক পার্টি, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল, বাংলাদেশ গ্রীন পার্টি, বাংলাদেশ পাবলিক এ্যাকশন পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণঅধিকার পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, নতুন ধারা বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ একাত্তর পার্টি, স্বাধীন বাংলা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট, জাগ্রত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক প্রজন্ম, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রজনতা পার্টি, খেলাফত ইসলাম, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার, বাংলাদেশ সলুশন পার্টি, বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পার্টি, বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি। এ ছাড়াও বাংলাদেশ রক্ষণশীল সমাজ (বিসিপি), জনতা কংগ্রেস পার্টি, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যানময় পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি (বাজাপা), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল, বাংলাদেশ জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক আন্দোলন পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, জাস্টিজ পার্টি বাংলাদেশ-জেপিবি, বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি (বি. জি. পি), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ কৃষক পার্টি (কেএসপি), জনতার কথা বলে, ভাসানী শক্তি পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল (বাজদ), ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, স্বাধীন জনতা পার্টি, আমজনতার দল।বাংলাদেশ শান্তির দল, সংবিধান বিষয়ক জনস্বার্থ পার্টি সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ গণঅভিযাত্রা দল, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি (এনএলপি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), জনতা মহাজোট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতার ঐক্য, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, নিউক্লিয়াস পার্টি, ইউনাইটেড বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন পার্টি (বিএনএলপি), বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম), বাংলাদেশ পাক পাঞ্জাতন পার্টি (বিপিপি), সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), ন্যাপ ভাসানী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), জাতীয় পেশাজীবী দল (এসপিপি), বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট (বি. জে. এফ.), বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি-ডিসিপি, ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশী জনগনের পার্টি, অহিংস গণ আন্দোলন, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি ও মুসলিম সেভ ইউনিয়ন নামের দলও আবেদন করেছে।(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/এলএম)

মন্তব্য করুন