এবার এনসিপির ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ মার্কা নিয়ে টানাটানি

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন শর্ত পূরণ হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত না হলেও প্রতীক বরাদ্দ পেতে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে গেছে।
শাপলা প্রতীক নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও নাগরিক ঐক্যের মধ্যে বিরোধ মীমাংসিত না হতেই এবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এনসিপির পছন্দের অন্য দুই প্রতীক মোবাইল ও কলম প্রতীক পাওয়ার দাবিতে একাধিক রাজনৈতিক দল এখন পাল্টাপাল্টি চিঠি দিচ্ছে কমিশনে।
নিবন্ধন প্রত্যাশী এনসিপি তাদের দলীয় প্রতীকের অগ্রাধিকারে রেখেছে ‘শাপলা’। ২২ জুন নিবন্ধন আবেদন জমা দেওয়ার সময় শাপলার সাথে আরও দুটি প্রতীক ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ চেয়েছে দলটি।
এর আগেই ১৭ জুন নিবন্ধিত দল নাগরিক ঐক্য তাদের ‘কেটলি’ প্রতীক পরিবর্তন চেয়ে শাপলা ও দোয়েল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে।
ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ‘শাপলা’ মার্কা তাদের প্রতীক তালিকায় না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এনসিপি বলেছে, আরও দুটি প্রতীক পছন্দ থাকলেও শাপলা ছাড়া তাদেরও কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে রাজনৈকিভাবে লড়বে।
এরইমধ্যে ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ প্রতীক তাদের বরাদ্দের জন্য আগেও আবেদনের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপা) ও জনস্বার্থে বাংলাদেশ।
জনস্বার্থে বাংলাদেশ দলের প্রেসিডেন্ট মো. বাবুল হোসেন ইসি সচিবের কাছে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘মোবাইল প্রতীক নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দল দেশে দীর্ঘ দিন যাবত প্রচার-প্রচারণা করে আসছে এবং নির্বাচন কমিশনও আমাদের দলের আবেদনে প্রস্তাবিত প্রতীকের ব্যাপারে অবগত আছে।’
চিঠিতে তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে বাংলাদেশ’ রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন আবেদন করে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর প্রতীক হিসেবে 'মোবাইল' চায়। গণমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম জাতীয় নাগরিক পার্টিকে মোবাইল প্রতীক হিসাবে বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে আমরা এরকম সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বিষয়টি সুরাহার জন্য আমাদের সাথে আলোচনা করতে নির্বাচন কমিশনকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
এদিকে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির মুখপাত্র কাজী শামসুল ইসলাম ইসি সচিবকে লেখা চিঠিকে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির জন্য ‘কলম’ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেছে। গত ২২ জুন সকল রাজনৈতিক দলের আবেদন শেষে সংবাদ মাধ্যম বরাতে জানা যায়, বেশ কয়েকটি দল দলীয় প্রতীক হিসেবে কলম চেয়েছে। যখন 'কলম' প্রতীক চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি, তখন অনেক রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আবেদনই করেনি। সুতরাং কলম প্রতীকের অগ্রণী দাবিদার একমাত্র বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি।
চিঠিতে বলা হয়, বিগত ২৮ নভেম্বর ২০২৪ জাগ্রত পার্টির জন্মলগ্নে রেজ্যুলেশন ও পরবর্তীতে গঠিত গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্রে দলীয় প্রতীক হিসেবে কলম ব্যবহার করা হয়। সবকিছু বিবেচনায় নৈতিকভাবে কলম প্রতীকের প্রথম দাবিদার ও হকদার একমাত্র বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি।
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সংসদ নির্বাচনের জন্য ১১৫টি প্রতীক চূড়ান্ত করতে বিধিমালা সংশোধন করেছে।
এ প্রতীক তালিকায় কলম ও মোবাইল ফোনও রয়েছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৪৪টি দলের ১৪৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এসব আবেদন যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। কয়েকটি ধাপ শেষে নিবন্ধন শর্ত পূরণ করলেই প্রতীকসহ দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত হবে এবার কটি দল নিবন্ধন পাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে ইতোমধ্যে বলেছেন, নিবন্ধন শর্ত পূরণ করার পরই দলগুলোকে প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি আসবে। এ ক্ষেত্রে দলের পছন্দ ক্রমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। একই প্রতীক একাধিক দল চাইলে, কমিশন স্বীয় বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়।
(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/এলকে)

মন্তব্য করুন