কাশিয়ানীতে ৭ শিক্ষকের স্কুল থেকে ২০ শিক্ষার্থীর কেউ পাস করেনি

কাশিয়ানী প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ
  প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২৫, ২০:১৩
অ- অ+

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার শ্রীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া ২০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজনও পাস করতে পারেনি।

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত হয় ঢাকাসহ দেশের সব বোর্ডের এসএসসির ফল।

শ্রীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফলাফল তালিকা অনুযায়ী, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন এক বিষয়ে, পাঁচজন দুই বিষয়ে, সাতজন তিন বিষয়ে, একজন চার বিষয়ে এবং একজন সব বিষয়ে ফেল করেছে।

জানা গেছে, এবার উপজেলার ৩৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮টি বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ২৮৯ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। একমাত্র শ্রীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কেউ পাস করতে পারেনি।

এমপিওভুক্ত এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।তাদের বিপরীতে শিক্ষক আছেন প্রধান শিক্ষকসহ ৭ জন।

ফল বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।

শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা রমেশ মণ্ডলের মেয়ে এ বছর এই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত ও সময়মতো স্কুলে আসেন না। কেউ কেউ বেলা ১১টার দিকে এসে স্বাক্ষর করে চলে যান। কেউ কেউ থাকলেও তারা চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। শিক্ষার্থীদের পড়ানোর প্রতি তাদের আগ্রহ নেই।’

এলাকার বাসিন্দা পারভেজ মুন্সী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এবার এ স্কুল থেকে কেউ পাস করেনি। এটা আমাদের এলাকার জন্য খুবই লজ্জার ও দুঃখজনক। শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। তারা এলাকার ‘গ্রাম্য রাজনীতির’ সাথে জড়িত ‘

এলাকায় দুটি গ্রুপ রয়েছে, শিক্ষকরাও দুই গ্রুপে বিভক্ত- এমন তথ্য দিয়ে পারভেজ মুন্সী বলেন, ‘শিক্ষকদের কিছু বললে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এছাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত। শিক্ষকদের গাফিলতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে এই ফল বিপর্যয় ঘটেছে।’

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু বিশ্বাস বলেন, ‘স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম। অভিভাবকরা অসচেতন। আমরা অভিভাবকদের একাধিকবার ডাকলেও তারা স্কুলে আসেননি। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের কারণে এবার হয়তো অটো পাস দিতে পারে এ ধারণা থেকে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করেনি। আশা করি আগামী দিনে এমন আর হবে না। বদনাম ঘুচাতে পারব।’

গণিত শিক্ষক গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নেই। অবকাঠামো সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যেও আমরা সাতজন শিক্ষক অনেক কষ্টে পাঠদান অব্যাহত রেখেছি।’

এই ফল বিপর্যয়কে খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা বেগম বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষকদের পাঠদান ও শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ফল বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে নিরীহ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মী গ্রেপ্তার না করার আহ্বান বিএনপির
জামায়াতের সমবেশ উপলক্ষে বরাদ্দকৃত ট্রেন পরিচালনায় নিয়ম ভঙ্গ হয়নি : রেলপথ মন্ত্রণালয়
নারায়ণগঞ্জকে আর কোনো গডফাদারের কাছে বর্গা দিতে চাই না: নাহিদ
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা সেলিম প্রধানের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা