গজারিয়ায় নিষিদ্ধ জালে বিপন্ন দেশীয় মাছ

নদীমাতৃক দেশের জনগণকে বলা হয় মাছে ভাতে বাঙালি। কারণ এ দেশের খাল, বিল, নদী, পুকুরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
আগে খেপলা জাল, চাই, দুয়ারি প্রভৃতি ছিল মাছ ধরার একমাত্র উৎস। কিন্তু কালের বিবর্তনে কারেন্ট জাল, ভেসাল আর চায়না জালের প্রভাবে আজ বিলুপ্তি পথে প্রায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ ও চরম হুমকির মধ্যে মাছের রেনু পোনাসহ বিভিন্ন রকমের জলজ প্রাণি। এসব অবৈধ ও নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছেন শিকারিরা।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা একটি বিস্তৃত এলাকা যার চারপাশে ছোট বড় অসংখ্য নদী। মেঘনা নদী মাছের একটা বিশাল চারণভূমি। এখানকার মেঘনার ইলিশ মাছের দেশব্যাপী সুনাম রয়েছে। এছাড়াও মেঘনা ও গোমতীর নদীর অসংখ্য মিঠা পানির মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হয়।
নিষিদ্ধ কারেন্ট ও বাধাই জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না জালের ফাঁদে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ। সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় নদ-নদীজুড়ে জেলেরা ব্যবহার করতে শুরু করেছে এই জাল।
নদ-নদীতে থাকা মিঠা পানির সব ধরনের ছোট বড় দেশীয় প্রজাতির মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীসহ এই জালে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, সিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ দেশীয় সব মাছ প্রযুক্তির চায়না জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে এলাকার নদ-নদী, খাল-বিল।
স্থানীয় পেশাদার জেলেরা জানান, চায়না জালে সব ধরনের মাছ ছেঁকে উঠে, সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায়, মৌসুমে মৎস্য শিকারিরা মাছ ধরতে এই চায়না জাল ব্যবহার করে। ফলে আমরা যারা চিরাচরিত দেশীয় জাল দিয়ে মাছ ধরতাম তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা ও অনেকে এই পেশা থেকে অন্য কোনো পেশায় চলে যাচ্ছে।
মো. নবী হোসেন জানান, আমরা আগে বিভিন্ন ভাবে মাছ ধরতাম যেমন জাল, খুচি, চাই দিয়ে অনেক মাছ পাইতাম এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। এখন চায়না জাল বা ম্যাজিক জাল দিয়ে জেলেরা মাছ শিকার করায় দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। এ জাল দিয়ে মাছ ধরা চলমান থাকলে কিছুদিন পর নদীতে আর কোনো মাছ পাওয়া যাবে না।
গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। এতে দেশীয় মাছ হচ্ছে বিলুপ্তির পথে। চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদেরকে নিরুৎসাহিত করা ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/৬ডিসেম্বর/জেবি/জেডএম)

মন্তব্য করুন