গাজায় স্কুলে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ২২

গাজা শহরের একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধের সময় বন্ধ থাকা স্কুলটি বাস্তুচ্যুত লোকদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলেছে, তারা হামাসের একটি কমান্ড সেন্টারকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যা গোষ্ঠীটি ‘সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করতে’ ব্যবহার করছে বলে দাবি করছে দখলদার ইসরায়েল।
হামাস সামরিক উদ্দেশ্যে স্কুল এবং অন্যান্য বেসামরিক সাইট ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে।
হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, আল-জায়তুন এলাকায় শনিবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু ও ছয়জন নারী রয়েছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি একই মৃতের সংখ্যা জানিয়েছে এবং একজন মহিলা গর্ভবতী ছিলেন বলে জানিয়েছে ।
বিবিসি ভেরিফাই দ্বারা পরীক্ষিত হামলার পরের বেশ কয়েকটি গ্রাফিক ভিডিও এটিকে সমর্থন করে।
অন্য ফুটেজে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। কারো কারো পায়ের অংশ না থাকাসহ গুরুতর জখম দেখা যায়।
বিবিসি ভেরিফাই পটভূমিতে দেখা তথ্যের সঙ্গে স্যাটেলাইট এবং টার্গেট করা স্কুলের গ্রাউন্ড-লেভেল ইমেজের তুলনা করে অবস্থান নিশ্চিত করেছে।
আইডিএফ বলেছে, তারা বেসামরিক লোকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে।
আইডিএফ দাবি করছে, হামাস গাজা উপত্যকায় বেসামরিক অবকাঠামোর অভ্যন্তর থেকে কাজ করে এবং তার ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডের জন্য গাজার বেসামরিক জনগণকে শোষণ করার মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে।
এছাড়া শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে যে, দক্ষিণ গাজার মুসাবাহ এলাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গুদামকে ইসরায়েল টার্গেট করে তাদের চারজন কর্মীকে হত্যা এবং ছয়জনকে আহত করেছে। ঘটনাটি বিমান হামলা কি না তা স্পষ্ট করেনি মন্ত্রণালয়।
বিবিসি নিহত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য আইডিএফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে সর্বশেষ সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্য স্কুলগুলো বেশ কয়েকবার আঘাত পেয়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিএ) বলেছে যে নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের আল-জাউনি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার ছয় কর্মী নিহত হয়েছে, যা হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইউএনআরডব্লিএ বলেছে, ৭ অক্টোবর থেকে স্কুলটিতে পঞ্চমবারের মতো হামলা হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা স্কুল থেকে হামলার পরিকল্পনাকারীদের ওপর সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে। সামরিক বাহিনী বলেছে, নিহতদের মধ্যে নয়জন হামাসের সশস্ত্র শাখার সদস্য এবং তাদের মধ্যে তিনজন ইউএনআরডব্লিএ কর্মী।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।
এর পর থেকে গাজায় অব্যাহত হামলা চালিয়ে ৪১ হাজারেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এফএ)

মন্তব্য করুন