পটুয়াখালী জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল

অফিস সহকারী দিয়ে চলছে চিকিৎসা 

রিপন দাস, পটুয়াখালী
  প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:১২| আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:৩৬
অ- অ+

নেই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, নেই ভেটেরিনারি সার্জন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে চলছে হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসা। আর এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের খামারি ও পশু পালনকারীরা।

পটুয়াখালী জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল ঘুরে এবং চিকিৎসাসেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় আরও নানা হতাশার চিত্র।

এই দপ্তরে পশু চিকিৎসা ও লালন-পালনের বিষয়ে পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন না লোকজন। পাচ্ছেন না কোনো পরামর্শ। অসুস্থ পশু-পাখির চিকিৎসার জন্য ঘুরতে হয় দ্বারে দ্বারে। অনেকে অভিযোগ করেন, চার-পাঁচবার পশু হাসপাতালে এসেও টিকা পাননি তারা। আবার অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর টিকা পেলেও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম দিতে হয়।

সদর উপজেলার লোহালিয়ার বাসিন্দা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার পিভিআর ভ্যাকসিনের খুব দরকার হয়। অনেকবার এসে অনেক অনুনয়-বিনয় করে জাহাঙ্গীর স্যারকে বলে একটি ভ্যাকসিন দিতে রাজি করাই। কিন্তু আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা নেন। অথচ সরকার নির্ধারিত দাম ৭০-৮০ টাকা। তার নাকি ২৫০ টাকায় কেনা, তাই ৩০০ টাকার নিচে নেবেন না।’

এদিকে সদর উপজেলার ভুরিয়া থেকে আসা আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি এত দূর কষ্ট করে আমার গরু নিয়ে এসেছি। ডাক্তার আমার গরুটা না দেখেই একটা কাগজে ওষুধ লিখে দিয়ে বলে সামনে ওই দোকান থেকে নিয়ে যান।’

সরেজমিনে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক না থাকায় অসুস্থ পশুর চিকিৎসা দিচ্ছেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. জাহাঙ্গীর আলম। পশু-পাখির নাম রেজিস্ট্রারভুক্ত না করেই দায়সারাভাবে কাগজে লিখে দিচ্ছেন ওষুধ।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জনবল না থাকায় আমি বাড়তি দায়িত্ব পালন করছি। ভেটেরিনারি ডাক্তার থাকলে আমাকে পশুর চিকিৎসা করতে হতো না। এই হাসপাতালে ঝাড়ু দেওয়া থেকে শুরু করে সব কাজ করতে হয় আমাকে।’

পটুয়াখালী জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী দেখা যায়– হাসপাতালে একজন ভেটেরিনারি অফিসার, একজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, একজন গাড়িচালক, একজন অফিস সহায়ক ও একজন এনিমেল অ্যাটেনডেন্ট– মোট সাতজন থাকার কথা। আছেন মাত্র দুজন।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যানুযায়ী পটুয়াখালীতে ভেটেরিনারি হাসপাতাল এই একটি। আর জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে মোট প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নয়টি। এসব দপ্তরে জনবল কাঠামো অনুযায়ী ৯৪ জন থাকার কথা, আছেন ৩৮ জন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি মাসখানেক হলো এখানে এসেছি। এখানে জনবল সংকট অনেক। পটুয়াখালীর প্রতিটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরে জনবল সংকট রয়েছে। এখানে একটি হাসপাতাল আছে সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো ডাক্তার, সার্জন, অফিসার নেই। আছেন শুধু একজন ড্রাইভার ও অফিস সহকারী। এখানে একজন অফিস সহকারী দিয়ে কাজ চলছে।‘

মাঠ পর্যায়ে খামারি ও পশু পালনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা কার্যক্রম প্রায় নেই জেলার ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের। ফলে কোনো কোনো এলাকার মানুষ জানে না প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/মোআ/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিএনপি একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
ঢাকা-বেইজিং অংশীদারিত্ব এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে: চীনা রাষ্ট্রদূত
বেইলি রোডে ৩৪ কোটি দামের কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিদেশি মদসহ ৪ জন আটক
দেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২৮২০ ডলার, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা