১৪ মাস পর চালু কালুরঘাট সেতু, অনুমতি নেই যেসব যানবাহনের

১৪ মাসের বেশি সময় সংস্কারের জন্য বন্ধ রাখার পর অবশেষে খুলে দেওয়া হলো চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু। রবিবার সকাল ১০টা থেকে এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। যদিও ৮ ফুটের বেশি উচ্চতার কোনো যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচলের অনুমতি পাচ্ছে না।
সংস্কারকাজের জন্য গত বছরের ১ আগস্ট কালুরঘাট সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন পর সেতুটি চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে। তাদের দাবি, নতুন সেতুর নির্মাণকাজ যেন দ্রুত শুরু হয়।
রবিবার সকালে এই সেতু দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পো, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা যায়। সেতুর এক পাশে হেঁটে চলাচলের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেটি দিয়ে অনেক পথচারীকে সেতু পার হতে দেখা যায়। প্রথমবার ওয়াকওয়ে তৈরির ফলে সবার মাঝে কৌতূহলও বেড়েছে।
এর আগে শনিবার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম জানান, কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। রবিবার সকালে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দিতে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল গাড়ি চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
কর্ণফুলী নদীর ওপর স্থাপিত একটি পুরাতন রেল ও সড়ক সেতু এটি, যা একসময় চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাংশকে দেশের অবশিষ্টাংশের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচিত ছিল। ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে জানালীহাট এবং গোমদন্ডী রেলস্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে স্টিল কাঠামোর ওপর নির্মিত একটি সাধারণ সেতু হিসেবে কালুরঘাট সেতুটি তৈরি করা হয়।
কালুরঘাট সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩৯ মিটার। চট্টগ্রাম ও দোহাজারী থানার মধ্যে ট্রেন চলাচলের উদ্দেশ্যে ১৯৩১ সালে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। এর ৩১ বছর পর ১৯৬২ সালে জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সেতুটিতে পাটাতন স্থাপন ও কার্পেটিং করে এটিকে রেলসেতুর পাশাপাশি একটি সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়।
পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুতে বড় ধরনের সংস্কারকাজের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। কাজ শুরু হয় গত বছরের ১ আগস্ট। এ জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে ৪৩ কোটি টাকার চুক্তি করে রেলওয়ে।
চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থ ছাড়ে জটিলতা, বৃষ্টিসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় সেতুর সংস্কারকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি। এরপর গত বছরের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে বন্ধ থাকে অন্যান্য যান চলাচল।
অবশেষে কারিগরি সব দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রবিবার কালুরঘাট সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ৯৩ বছরের পুরনো এই সেতুটি চালু হওয়ার মধ্যদিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের মানুষের প্রতিদিনের দুর্ভোগের অবসান হলো।
(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/এজে)

মন্তব্য করুন