ইব্রাহিমের ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড সংগ্রহ আফগানিস্তানের

চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যেনো একের পর একের রেকর্ড গড়ার খেলায় মেতেছেন ক্রিকেটাররা। এবারের আসরে একের পর এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। ইংল্যান্ডের সর্বশেষ ম্যাচে দলটির হয়ে ১৬৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বেন ডাকেট। যা ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। সেই রেকর্ড স্থায়ী হলো মাত্র তিনদিন।
ডাকেটকে সাক্ষী রেখেই আজ ১৭৭ রানের ইনিংস খেললেন ইব্রাহিম জাদরান। তাতে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ পেয়েছে আফগানিস্তান। একই সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও এটি তাদের দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৫ রান সংগ্রহ করেছে আফগানিস্তান। ব্যাটিংয়ে বোলারদের কোনো পাত্তাই দিলেন না ইব্রাহিম জাদরান। ওপেনিংয়ে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত ঘোরালেন ছড়ি। মাঝপথে ইংলিশদের নাস্তানাবুদের উৎসবে তাকে সঙ্গ দেন হাশমতউল্লাহ শহীদি, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবি। তিন জনই ফিফটির সুযোগ হাতছাড়া করলেও দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৭ রান করেছেন ইব্রাহিম।
বাঁচামরার ম্যাচে আফগানিস্তানের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তবে নিজেদের জুটিকে বেশদূর নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তারা। ১৫ বলে মাত্র ৬ রান করেই আজ সাজঘরে ফিরে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তার বিদায়ে ১১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
রহমানুল্লাহ গুরবাজের পর দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান সেদিকুল্লাহ অটলও। ৪ বলে ৪ রান করে জোফরা আর্চারের শিকারের হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে মাত্র ১৫ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানরা।
১৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন রহমত শাহ ও ইব্রাহিম জাদরান। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আফগানিস্তান। তবে বেশিদূর এগোনোর আগেই এই জুটিকে থামান জোফরা আর্চার।
তার তৃতীয় শিকার হয়ে ৯ বলে মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান রহমত শাহ। তার বিদায়ে ৩৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান।
এরপরেই জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলতে থাকেন হাসমতউল্লাহ শহিদি ও ইব্রাহিম জাদরান। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে আফগানিস্তান। ইংলিশদের বিপক্ষে আজ ৬৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরান।
হাসমতউল্লাহ শহিদিও ছিলেন অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে। তবে মাত্র ১০ রানের জন্য ফিফটি মিস করেন তিনি। ৬৭ বলে ৪০ রান করে আদিল রশিদের বোল্ড হয়ে সাজঘেরে ফিরে যান হাসমতউল্লাহ শহিদি। তার বিদায়ে ভাঙে ১০৩ রানের জুটি।
হাসমতউল্লাহ শহিদির বিদায়ের পর আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন ইব্রাহিম জাদরান। ৬৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর ১০৬ বলে শতক তুলে নেন ইব্রাহিম জাদরান। যার মধ্যে রয়েছে ৬ টি চার ও ৩টি ছক্কা।
ইব্রাহিম জাদরানের সেঞ্চুরির বিদায়ের পর অর্ধশতকের পথে ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তবে ৩১ বলে ৪১ রান করে জেমি ওভারটনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় তাকে। মাত্র ৯ রানের জন্য অর্ধশতক মিস করেন তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ৭২ রানের জুটি।
এই জুটি ভাঙার পর ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ নবি। ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে জুটি গড়ে তিনিও চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন ইংলিশ বোলারদের ওপর। অন্যপ্রান্তে থাকা ইব্রাহিম জাদরানে ১৩৪ বলে পূর্ণ করেন দেড়শো রান।
তাকে সঙ্গ দিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন মোহাম্মদ নবিও। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ আউট হন জাদরান। ১৪৬ বলে ১৭৭ রান করেছেন তিনি।
দুই বল পরে সাজঘরে ফিরেছেন নবিও। ২৪ বলে ৪০ রান করেন তিনি। এতে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৫ রানের বড় পুঁজি পায় আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন জোফরা আর্চার। এ ছাড়াও লাইম লিভিংস্টোন দুটি, ওভারটন ও আদিল রশিদ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৬ ফেব্রুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন