যেকোনো সময়েই নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত: মির্জা ফখরুল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১০ জুন ২০২৫, ১৮:৩৭
অ- অ+

যেকোনো সময়েই নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত আছে বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় দলের এই প্রস্তুতির কথা জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো বলেছি, আপনি যদি ইলেকশন কালকে করতে পারেন, আমরা কালকেই রেডি। বিএনপি নির্বাচনের দল বিএনপি অলওয়েজ রেডি ফর ইলেকশন। কারণ এটা (বিএনপি) নির্বাচনের দল, নির্বাচন করেই বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ভাই, আমি তো বিপ্লবী দল নই। আমাদের পরিষ্কার কথা, আমরা কোনো বিপ্লবী দল নই, আমরা নির্বাচন করেই জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চাই। যখন সবাই চাইবে একমত হবে তখন নির্বাচন হবে অসুবিধা নাই।’

চোখের অস্ত্রোচারের জন্য থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে সফল অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন ঈদের আগের রাতে। পরের দিন ঈদে নামাজ শেষে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেছেন তিনি। সাংবাদিকদের সাথে ঈদের পরে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আসেন বিএনপি মহাসচিব। রাজনীতি, নির্বাচন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সাথে তারেক রহমানের বৈঠক, নির্বাচনের শরিকদের সাথে আসন সমঝোতা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, সংস্কার কমিশনসহ নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘সজ্জন ব্যক্তি’ হিসেবে পরিচিত মির্জা ফখরুল।

‘ডিসেম্বরেই নির্বাচন খুবই সম্ভব’

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দল বলেছে যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব এবং এটা খুবই সম্ভব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব বলেছে এই কথা। আমি বিশ্বাস করি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব।

জামায়াতে ইসলামী বলেছেন এপ্রিলে নির্বাচন হতে পারে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিয়ে আপনাদের বক্তব্য কি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে ডেমোক্রেসি মূল কথা হচ্ছে আপনি আমার সাথে ভিন্নমত পোষণ করবেন, আমি আপনার সাথে ভিন্নমত পোষণ করব। কিন্তু তাই বলে আমি মনে করব না যে, আপনি আমার শত্রু, তাই বলে আমি মনে করব না যে, আপনি দেশদ্রোহী হয়ে গেছেন, আপনি গণতন্ত্র বিরোধী হয়ে গেছেন আমি মনে করব, এটাই গণতন্ত্রের বিউটি।

আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনার মতামত প্রকাশের অধিকারকে নিশ্চিত করা দ্যা ইজ দি রিসপোসেবিলিটি এজ এ ডেমোক্রেট এই জায়গাটা অনেককে বুঝানো সম্ভব হয় না। ডেমোক্রেসিটা আসলে আপনাকে একটু চর্চা করতে হবে, আপনার কালচারের মধ্যে আনতে হবে আপনার বাসায়, আপনার পরিবারে, আপনার সমাজে সব জায়গায় আনতে হবে। সেটা আমরা করতে পারিনি ওই জায়গাটা শুরু করা যাক লেট আস স্টার্ট।

‘এপ্রিলে নির্বাচন: বিএনপির অবস্থান কি হবে’

মির্জা ফখরুল বলেন, দেখুন এই ব্যাপারে আমরা পার্টিগতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা আশা করছি যে, সরকারের একটা বিবেচনা করতে কিছুটা বলা যেতে পারে বাস্তবতার প্রেক্ষিতেই তারা বিবেচনা করবেন।

সময়টা (এপ্রিল) তো ঠিক না। আমি প্রথম দিন বলেছি, টাইম ইজ নট গুড ফর ইলেকশন। এপ্রিল মাস আপনার রোজার মাস, রোজ শেষ হবে, ঈদ শেষ হবে এর কয়েকদিন পরে নির্বাচন। আপনি ভাবেন রোজার মাসটায় প্রার্থীদের কী অবস্থা হবে রাজনৈতিক কর্মীদের কী অবস্থা হবে? আমি নিজেই এখন চিন্তিত যে, প্রত্যেকদিন আমাকে ইফতার পার্টি করতে হবে। ইটস নো জোক এটা বিরাট ব্যাপার প্রার্থীদের ব্যয় দ্বিগুন হয়ে যাবে এবং এই ক্ষেত্রে আমরা চিৎকার করি অর্থ ব্যয় কমাতে হবে ওই সময় হলে তো ব্যয় বাড়বে।

তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, ওই সময়ে প্রচণ্ড গরম থাকবে আবহাওয়া, ঝড়-বৃষ্টি আছে দিনের বেলা আমাদের যে নির্বাচনি কালচার জনসভা করতে হয় সেই জনসভায় লোকজন আনাটাই মুশকিল হবে রোদ্রে মধ্যে কে আসবে? রাত্রিবেলা মিটিং করতে হবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ সময়ে ডিসেম্বর-নভেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়েছে। দুইবার বোধহয় হয়েছে ভিন্ন সময়ে দুই ইলেকশনই ঝামেলা ছিল।

তারপরেও আমি মনে করি, নির্বাচন বেশি প্রয়োজন। অনেকে আবার আমাকে ভুল বুঝবেন, সংস্কার চাই না, নির্বাচন চাই এই যে একটা আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা অপপ্রচার এর কোনো যুক্তি নাই। আমরা তো বহু আাগেই সংস্কারের কথা বলেছি বহু আগেই বলেছি যে, এই ব্যবস্থা চলবে না সেই ব্যবস্থা পরিবর্তনে আমরা ম্যাডাম খালেদা জিয়া এই রুমে বসে ভিশন-২০৩০ তৈরি করেছেন ৭/৮ ধরে আলোপ-আলোচনা-বির্তক করে করে। তারপরে আমরা ২৭ দফা দিয়েছিলাম এবং সব শেষে যুগপৎ আন্দোলনের রাজনৈতিক শরিকদের সাথে কথা বলে ৩১ দফা দিয়েছি।

‘নতুন দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে তারেক রহমানের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে কিনা, আপনি কি আশা করছেন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খুবই ইতিবাচক মানুষ এবং আমি সবসময়ে পজেটিভ দিকটাই দেখতে চাই, ব্রাইট দিকটা দেখতে চাই তাতে করে আমি মনে করি এই একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অনেক সুযোগ তৈরি হতে পারে।

সেই সুযোগগুলো তৈরি করার সুযোগ এসেছে আমাদের এই দুই নেতার। দিস ইজ এ প্রোপার টাইম, প্রোপার ভেন্যু, প্রোপার প্লেস যেটাতে নতুন একটা দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে আর কি।

‘সরকারের আন্তরিকতা অভাব নেই’

তিনি বলেন, একটা বিশেষ মুহুর্তে এসে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন, তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একথা বললে অস্বীকার করা হবে না যে, আমরাই দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে তাদের অভিজ্ঞতা যথেষ্ট নয় তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবাই অত্যন্ত অভিজ্ঞ মানুষ, পন্ডিত লোক, উইজডোম সব আছে কিন্তু পলিটিক্যাল উইজডোম যে পুরোপুরি আছে সেটা বলা যাবে না।

‘বাট এট দা সেইম টাইম দে হেভ গোট দা সিনসিয়ারিটি তাদের আন্তরিকতার অভাব আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না তারা কাজ করতে চান, কাজ করছেন। দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন হতে পারে। তবে এখানে একটা ইউনিক যে এখানে একটা চাপ আছে। চাপটা হচ্ছে, আপনারা জানেন যে, এখানে নতুন নতুন রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার সৃষ্টি হচ্ছে, নতুন নতুন রাজনৈতিক চিন্তা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করে একটা জায়গায় নিয়ে আসা এটাও বড় একটা চ্যালেঞ্জিং জব কিন্তু। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে দুই নেতার মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে একটা বড় সমাধান হয়ে যেতে পারে। একেবারে মুহুর্তের মধ্যে বাংলাদেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, ১৫ বছরের একটা ফ্যাসিস্ট শাসক আওয়ামী লীগ সব প্রতিষ্ঠান ধবংস করে দিয়েছে। সেই ইন্সটিটিউশনগুলোকে নতুন করে বিল্ডআপ করা একটা ছেলে খেলা নয়। আমি এই কথাটা বার বার বলার চেষ্টা করি, এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ জাতির জন্য।

সবাই আশা করেন যে, এটা ঠিক হচ্ছে না, ওটা ঠিক হচ্ছে না। এতো সোজা? একটা রাষ্ট্রকে একটা যন্ত্রকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এখান থেকে আবার নতুন করে সুস্থ ভালো জিনিস নিয়ে আসবেন এটা এতো সহজে হয় না ইটস টেক টাইম। ভালো কথা হচ্ছে যে, সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন, রাজনৈতিক দলগুলোও চেষ্টা করছে আমি কাউকেই অভিযুক্ত করতে চাই না, কারো বিরুদ্ধে বলতে চাই না আমি মনে করি এভরি বডি ট্রাইং দেয়ার বেস্ট। মি বি যে, হয়ত পথ ভিন্ন, চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন হতে পারে, কথা-বার্তা ভিন্ন হতে পারে না। কিন্তু সবার চেষ্টা আছে।

‘জাতীয় ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি মনে করি যে, এই সময়টা গণতন্ত্র উত্তরণের যে কালটা, ট্রান্সজিশনটা এটাতে সকলের আমাদের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। প্রত্যেকটা কথা আমাদের সাবধানে বলা উচিত। প্রত্যেকটি কথা এমনভাবে আমরা বলব, যে কথাগুলো এই যে একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার যে যাত্রা এটা যেন বিঘ্নিত না হয়, ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

জাতীয় ঐক্য এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । যখন আমরা আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি তখনও বলেছি জাতীয় ঐক্যের কথা এখনো আমরা বলছি যে, জাতীয় ঐক্য হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আমাদের সামনে দিকে এগিয়ে যাওয়ার।

‘টিক মার্ক দিয়ে কি রাজনীতি হয়?’

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো তারা যেভাবে জানতে চেয়েছে এটা অনেকটা স্কুলের টিক মার্ক দিয়ে। টিক মার্ক দিয়ে কি রাজনীতি হয় নাকি। এটা একটা অসম্ভব ব্যাপার। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী পরপর দুইবারের বেশি কেউ হতে পারবেন না। আবার বলেছি যে, একবছর বাদ দিয়ে আরেকবার হতে পারবেন। অর্থাৎ থ্রি টাইস। আমরা তো একথা বলিনি যে, তারপরেও হতে পারবেন।

আমরা বলছি যে, দুইটা হাউজ দরকার। ইটস এ মেজর রিফর্ম। আমরা বহু আগে থেকে বলেছি যে, কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট দরকার হবে। তখন তো সব উড়িয়ে দিয়েছে ড্যাম ইস্যু, অমুক ইস্যু, তমুক ইস্যু। এমনকি বিদেশিরা আমাকে নিজে বলেছে যে, গুড় টক এবাউট দিস ইস্যু… এটা প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশে যে, কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট ছাড়া বাংলাদেশে আপাতত একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।

‘বিএনপি ইজ রিয়েলিটি’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কেমন জানি একটা নেগেটিভ প্রচারণা বিএনপির বিরুদ্ধে চলছে। কিন্তু কারণটা কি? আমরা তো নতুন নতুন সংস্কারের কাজ করেছি তো, পরিবর্তন আনার কাজ করেছি তো। এখন আমি জানি না কিছু কিছু মানুষ আছেন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য বলেই যাচ্ছেন।

বাস্তবতা হচ্ছে যে, বিএনপি ইজ এ রিয়েলিটি। বিএনপি এমন একটা দল একে যতকিছুই বলুক তাকে সহজেই শেষ করা যায় না, কখনই যায়নি। বিএনপির জন্মের পর থেকে অনেকবার চেষ্টা হয়েছে তার বড় প্রমাণ জিয়াউর রহমান বেগম খালেদা জিয়া। ১৫ বছরে তো আমরা বিলিন হয়ে গিয়েছিলাম প্রায় ভাবছে যে, বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, বিএনপি খন্ড-বিখন্ড হয়ে যাবে কত লেখালেখি কতকিছু পারে নাই তো। একটা লোক ছাড়া দুইটা লোক নিতে পারে নাই তাই না। সব নেতাকর্মীদের ভেড়ারপালের মতো জেলে ঢুকিয়েছে, অত্যাচার করেছে, ছাত্র-যুবকদের নখ তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে, গুম করেছে তারপরেও তো নিতে পারেনি। বিএনপি ইজ দেয়ার, ভেরিমাচ দেয়ার।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ‘জাতিকে বিভক্ত’ না করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটা বিষয় জাতি ইউনাইটেড যে, আমরা গণতন্ত্র চাই, রেস্ট্রোরেশন অব ডেমোক্রেসি চাই, আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চাই, আমার ভোটটা আমি দিতে চাই ভোট দিয়ে আমি প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চাই। সংস্কার চাই।

অযথা ডিভিশনটা করবেন না। আমরা যদি ডিভিশনটা করি তাহলে আমাদের জাতির যারা শত্রু বাইরে যারা আছে তারা এই সুযোগটা বেশি করে পাবে।

‘কেয়ারটেকার সরকার কেন দরকার’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কেয়ারটেকার ব্যবস্থা বাতিলের পর ম্যাডাম সেদিনই বলেছিলেন যে, একটা বীজ বপন করা হলো চিরস্থায়ীভাবে অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা রাজনীতিতে। আমরাও একইভাবে সেই কথা বলে গেছি। কেয়ারটেকার কেন দরকার? বার বার করে আমাদের পশ্চিমারা কিছুটা বলা যায় যে, আমাদেরকে কি আপনারা হিউমোলেটেড করার চেষ্টা করছেন। কারণ ওদের দেশে এগুলো নাই।

আমি বলেছি, তুমি তো এটা বুঝবা না এটা। আমাদের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। কারণ এখানে উই ডোন্ট ট্রাস্ট ইজ আদার আমরা একটা দল আরেকটা দলকে বিশ্বাস করি না। যে যখন আমরা ক্ষমতায় যাই দখল করার চেষ্টা করি। সেজন্যেই ওইসময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকাটাই একটা সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের একমাত্র জায়গায়। তখন তো ওরা (পশ্চিমারা) উড়িয়ে দিয়েছে এখন তো দেখছে দিস ইজ ট্রু। ওরাই এখন বলছে যে, এটার দরকার হবে। এখন সকল রাজনৈতিক দল বলছে, লাগবে এটা।

নির্বাচনের সময় চলে আসায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘কেয়ারটেকার সরকারের ব্যবস্থায় চলে যাওয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম কথাটা, ইলেকশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য দেয়ার সুড বি এ কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাঠামো কি থাকবে না থাকবে ইলেকশনটা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হওয়া উচিত।

সেই সময়ে কিছু রাজনৈতিক দল সমালোচনাও করেছে যে, আমি এখানে ১/১১ আনতে চাই, অমুক আনতে চাই বলেছেন অনেক। এটা হয়েছে অভিজ্ঞতার অভাবের কারণে। আমি যে কথাগুলো বলেছি, অভিজ্ঞতার আলোকে। আপনাদের মনে আছে, ৫ আগস্টের পরে আমরা নয়া পল্টনে একটা জনসমাবেশে বলেছিলাম যে, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি তুলেছিলাম। এটা নিয়ে আমাকে যথেষ্ট সমালোচনা ফেইস করতে হয়েছে যে, এখন বিএনপি নির্বাচন চায়, অমুক চায়-তমুক চায়। এটা থেকে প্রমাণিত হচ্ছে, ওই নির্বাচনটা আমরা দ্রুত চাই কী কারণে? একটা ইলেকটেড সরকার দরকার।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমার বাসায় কয়েকজন ইনভেস্টর বড় ব্যবসায়ী তারা এসেছিলেন তাদের দুঃখের কথা বলতে। দুঃখের কথা কি? তারা কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছেন না তারা কি করবেন বুঝতে পারছেন না এবং ব্যাংকগুলো তাদের সঙ্গে সেইভাবে সহযোগিতাও করছে না।

এই জিনিসগুলো খুবই এলার্মিং। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যদি স্থবির হয়ে পড়ে তাহলে কিন্তু আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। এর কারণটা হচ্ছে, দেয়ার ইজ নো ইলেকটেড গর্ভমেন্ট নাই এবং বিদেশিরা বলছে যে, নির্বাচিত সরকার না থাকলে আমরা ইনভেস্টমেন্ট করব না এই গুলো হচ্ছে বাস্তবতা।

‘বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব বিএনপির মতো করেই’

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব বিএনপির মতো করে দিয়েছে। বিএনপি যা বিশ্বাস করে, যেগুলো তার আদর্শ, যেগুলো আগেই ঘোষণা করেছে আমাদের ৩১ দফা অভ্যুত্থানের অনেক আগেই ঘোষণা করা। সুতরাং দ্যাট ইজ মাই পয়েন্ট।

তবে আলোচনা করে দুই-এক জায়গা ছাড়-টাড় দিতে হয় সেগুলোতে তো আমরা দিচ্ছি। আমরা তো পরিষ্কার বলেছি, যেগুলোতে ঐক্যমত্য হয় সেগুলো তোমরা করো, যেগুলোতে ঐক্যমত্য হবে না সেগুলো সংসদে চলে আসবে ইলেকশন মেনিফেস্টো হিসেবে পিপলস এক্সসেপ্ট করবে হয়ে যাবে কঠিন ব্যাপার তো না।

‘শরিকদের সমঝোতায় আসন ছাড়বে বিএনপি’

'শরিকদেরকে কিছু কিছু আসন বিএনপি ছেড়ে দেবে’ এরকম প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তো স্বাভাবিক এটা সংসদীয় রাজনীতিতে খুবই স্বাভাবিক, এটা ন্যাচারাল এটা হওয়া উচিত। আমরা আগে থেকে কমিটেড যে, আমরা নির্বাচনের পর একটা জাতীয় সরকার করব।

জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টিকে সমঝোতায় আসন দেয়া হবে এরকম আলোচনা আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এগুলো ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নাই। আলোচনা থাকতে পারে এই ধরণের কোনো আলোচনা হয়েছে বলে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আমার জানা নাই।

এটা পরের ব্যাপার যদি আলোচনা হয় হবে কিছু সেটা ডিফারেন্ট প্রশ্ন। রাজনীতিতে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শেষ কথা বলতে কিছু নাই। চরম বিরোধী দল তার সঙ্গেও এলায়েন্স হয়ে যায় আপনি ভারতে তাকিয়ে দেখন না যে, একেবারে কট্টর ডানপন্থি, কট্টর বামপন্থির মধ্যে এলায়েন্স হয়ে নির্বাচন হচ্ছে কারণ ওখানে সংখ্যার ব্যাপারটা ইম্পুরটেন্ট।

‘আওয়ামী লীগ তো নাই’

আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ তো নাই, ওরা তো নাই।

জাতীয় পার্টির বিষয়ে কী অবস্থান? জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা যে পার্টিগুলোর কথা বলছেন সেগুলোর সাথে সবচেয়ে বড় বিরোধ বিএনপির। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন, ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী বিএনপি।

একইভাবে জাতীয় পার্টির কাছেও আমরা ৯ বছর (এইচএম এরশাদের শাসনামলে) নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছি। তারপরেও আমরা যেটা বলে এসেছি সবসময় আমরা তো একমত হয়েছি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধে আমরা বলেছি যে, ঠিক আছে। আমরা যেটা পার্টি বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেয়া উচিত।

‘শিগগিরই তারেক দেশে ফিরবেন’

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক সাহেব নিশ্চয় দেশে ফিরবেন, অবশ্যই দেশে ফিরবেন।

কবে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিগগিরই ফিরবেন।

তবে দিনক্ষণ কোনো কিছুই বলেননি বিএনপি মহাসচিব।

‘খালেদা জিয়া মাচ বেটার’

মির্জা ফখরুল বলেন, আলহামদুলিল্লাহ উনি আগের চেয়ে শারীরিক দিক থেকে বেশ ভালো বলে মনে হয় ডাক্তারা তাই বলেছেন। সি ইজ মাচ বেটার।

(ঢাকা টাইমস/১০জুন/জেবি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সবুজবাগে ব্যবসায়ীকে হত্যার পর তিন টুকরো করে বালু চাপা, গ্রেপ্তার ১
বাংলাদেশের সবার দৃষ্টি এখন লন্ডনে
রাজধানীর যেসব জায়গায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করল ডিএমপি
পাচারকৃত সম্পদ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা আরও জোরদার করেছে বাংলাদেশ: শফিকুল আলম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা