পালানোর আগে আত্মীয়দের শেখ হাসিনার খুদে বার্তা, ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ১২ জুন ২০২৫, ১২:১৮| আপডেট : ১২ জুন ২০২৫, ১৫:০৯
অ- অ+

দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে স্বৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ছাত্র ও গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা হারায়। বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার পতনের মূল কারণ ছিল একগুঁয়েমি, অহংকার ও অতি আত্মবিশ্বাস।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ধীরে ধীরে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। ৩৬ দিন ধরে চলা এই আন্দোলনের প্রতি শেখ হাসিনার ছিল অবজ্ঞার মনোভাব। ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ বলে সম্বোধন করেন, যা আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢালে।

পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমন-পীড়নে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে প্রাণ হারান দুই শতাধিক মানুষ। সেনা নামিয়ে কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এতে করে জুলাই বিপ্লবে নিহত হয়েছেন ১৪২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ২২ হাজার জন।। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা আত্মীয়দের আগে থেকেই সাবধান করেছিলেন। ৩ আগস্ট বিকেলে তিনি নিকট আত্মীয়দের মুখে ও মেসেজে জানান, “পরিস্থিতি ভালো না, জীবন বাঁচাতে দেশ ছাড়তে হবে।” ওইদিনই তিনি হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠান—মাত্র চারটি শব্দে: ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’|

একজন সাবেক এমপি, যিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয়ে, জানান, শেখ হাসিনার এই নির্দেশেই বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা দেশ ছাড়েন। তবে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা মন্ত্রীদের এমন বার্তা পাঠানো হয়নি।

৪ আগস্ট কারফিউয়ের মধ্যেই শেখ লুৎফুর রহমানের বংশধর ওই সাবেক এমপি তার পরিবারসহ দেশ ত্যাগ করেন। পরদিন ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমান। পরে শেখ রেহানা লন্ডনে চলে যান।

এই সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ আত্মীয়ই নিরাপদ আশ্রয় নেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে। তবে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ। তিনি সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে।

শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের বহু নেতা ও মন্ত্রী বর্তমানে দুর্নীতি, অর্থপাচার, হত্যা-গুমের অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন।

৩ আগস্টই পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে শেখ হাসিনা আত্মীয়দের নিরাপত্তার নির্দেশ দেন। ঢাকায় ফিরেই তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে মৌখিকভাবে দেশ ছাড়ার কথা বলেন। এরপর তাপসও সিঙ্গাপুরে ফিরে যান।

এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনা নিশ্চিত হন, আন্দোলন দমন আর সম্ভব নয়। তাই আত্মীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোবাইলে পাঠান সেই বিখ্যাত চার শব্দের বার্তা—‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’। সবশেষে শেখ হাসিনা আত্মীয়দের বিদেশে নিরাপদে পাঠানোর পর নিজেও দেশ ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। এরপর থেকে হাসিনা ভারতেই অবস্থান করছেন।

(ঢাকাটাইমস/১২ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ইসরায়েলে পাল্টা হামলায় ১০০ ড্রোন পাঠাল ইরান
রাজবাড়ীতে শব্দদূষণ রোধে মোবাইল কোর্ট, হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ ও অর্থদণ্ড 
ইসরায়েলের হামলার কঠোর জবাব দিতে ইরানের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা
ইউএনডিপির এশিয়ান মেয়রস ফোরামে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের অংশগ্রহণ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা