কুমেক হাসপাতাল: চিকিৎসার বদলে অব্যবস্থাপনায় লাশ হয়ে ফিরলেন গনি মিয়া

সপ্তাহখানেক আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে (কুমেক) হাসপাতালে হাতের অপারেশনের জন্য এসেছিলেন গণি মিয়া। দুদিন ধরে চিকিৎসা সেবার জন্য দৌড়ঝাঁপ করেও সিট না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। অবশেষে দালালের খপ্পরে পড়েন তিনি। ৫০০ টাকার বিনিময়ে বারান্দায় একটি বেড জোগাড় করেন। এরপর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু কুমেকের ওয়ার্ড মাস্টারের অব্যবস্থাপনা, সেবার অভাব এবং দুর্বিষহ পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসার পরিবর্তে ফিরলেন লাশ হয়ে।
গত শুক্রবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে গনি মিয়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের পঞ্চম তলার বারান্দা থেকে খোলা জানালা দিয়ে নিচে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত ওসমান গনি (৪৭) কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হাতের অপারেশনের জন্য গত এক সপ্তাহ ধরে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা পলাতক রয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাতে হঠাৎ তারা একটি বিকট শব্দ শোনার পর নিচে গিয়ে গনি মিয়ার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা দ্রুত পালিয়ে যান এবং ওয়ার্ড মাস্টার বিল্লাল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে এই বেডটি সরিয়ে নেন।
গনি মিয়ার স্ত্রী কোহিনুর বেগম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, "আমার স্বামী চিকিৎসা নিতে এসেছিল, কিন্তু হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে সে জীবন হারিয়েছে। পাঁচ তলার বারান্দায় তাকে সিট দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। আমি এর বিচার চাই!"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার বিল্লাল হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাইনুল ইসলাম বলেন, “এখনো বিস্তারিত জানা নেই।”
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
(ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/এফএ)

মন্তব্য করুন