ভারতের সামরিক অভিযানের দ্রুত, দৃঢ় ও কঠোর জবাব দেওয়া হবে: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত সামরিক অভিযানের দুঃসাহস দেখালে তাদের দ্রুত, দৃঢ় ও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনির।
বৃহস্পতিবার দেশটির আন্তঃবাহিনীর পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিবৃতি জানিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মংলা স্ট্রাইক কর্পস পাঞ্জাবের ঝিলামে ‘হ্যামার স্ট্রাইক মহড়া’ চালিয়েছে। সেখানে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন মুনির।
এ সময় যেকোনো মূল্যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর অদম্য সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে একটি ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো অস্পষ্টতা নেই। ভারতের যে কোনো সামরিক দুঃসাহসের দৃঢ়, দ্রুত ও কঠোর জবাব দেওয়া হবে। পাকিস্তান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আমাদের প্রস্তুতি এবং সংকল্প অত্যন্ত দৃঢ়।’
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা এ মহড়ায় অংশ নেন। বাহিনীর হাতে থাকা উন্নত যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শন করা হয় সেখানে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘শত্রুপক্ষের সম্ভাব্য আগ্রাসনের জবাবে সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া জানাতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত- এমন একটি বার্তা দিতে চেয়েছে ইসলামাবাদ।’
এর আগের দিন বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতীয় বাহিনীর ‘উসকানিমূলক’ গুলির জবাবে কিয়ানি ও ম্যান্ডাল সেক্টরে একটি ভারতীয় চৌকি ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।
এদিকে বুধবা এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন, পাকিস্তান আগে থেকে যুদ্ধ শুরু করবে না। কিন্তু ভারত যদি করে তাহলে তাদের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “বিশ্ব নেতারা সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছেন। সরকার এবং জাতির পক্ষ থেকে আমি স্পষ্ট করেছি, পাকিস্তান প্রথমে কোনো ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেবে না, যুদ্ধ শুরু করবে না। কিন্তু যদি ভারতীয় পক্ষ থেকে এমন কিছু হয়। আমরা অত্যন্ত শক্তির সাথে জবাব দেব।’
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিলের ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন এবং ২০০০ সালের পর থেকে এটি বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক সশস্ত্র হামলাগুলোর মধ্যে একটি। এই হামলায় ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। যদিও এই দাবি ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে টানা ৭ম দিনের মতো গুলি বিনিময়ের চলছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, উরি এবং আখনুর সেক্টরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালাচ্ছে দুপক্ষই।
(ঢাকাটাইমস/০১মে/এমআর)

মন্তব্য করুন