নুরুল হুদা গ্রেপ্তারের পর আত্মগোপনে যান হাবিবুল আউয়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ জুন ২০২৫, ১৭:৫৮| আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ১৮:০০
অ- অ+

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীর মগবাজারের একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে। আরেক সিইসি নুরুল হুদাকে গত রোববার মব সৃষ্টি করে জনতা পুলিশে দেওয়ার পরই আত্মগোপনে যান আউয়াল।

ডিবি পুলিশ বলছে, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে হাবিবুল আউয়াল আত্মগোপনে রয়েছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মগবাজারে তার অবস্থান শনাক্তের পর নজরদারিতে রাখা হয়। আজ (২৫ জুন) দুপুরে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অ্যাডমিন ও গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ছিলেন। এই নির্বাচন দেশে ডামি প্রার্থী নির্বাচন বলে পরিচিত।

হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে জানিয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বলেন, মামলার এজাহারে ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও নির্বাচনের আয়োজন এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে না পারা, শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত ডামি প্রার্থী ও জাতীয় পার্টিকে দিয়ে নির্বাচন করানো, এমনকি নির্বাচনের দিনে ভোটের পরিসংখ্যান নিয়ে দ্বিচারিতা করার অভিযোগ করা হয়।

ভোটের পরিসংখ্যান নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দেওয়া, পরবর্তী সময়ে সাংবিধানিক পদে থেকে সংবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে জয়ীপ্রার্থীদের গেজেট প্রকাশ করা- এসব অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, মগবাজারের যেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, সেটি মূলত তার বাসা নয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি তিনি সেখানে আত্মগোপনে রয়েছেন। সেখানে নজরদারির মধ্যেই আজ তাকে ডিবি পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে।

গত ২২ জুন আরেক সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তারের পর হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ।

তিনি কি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন জানতে চাইলে ডিএমপির এ যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, যেহেতু আমরা তাকে একটি ভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছি, অর্থাৎ তার অবস্থান নিজ বাসগৃহে ছিল না। আমরা বলতে পারি যে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানী শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লগি আমলের নির্বাচন কমিশনের তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ আসামি ২৪ জন। অন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলেন ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সিইসি রকিব উদ্দিন।

মামলায় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে ডিএমপি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে চাইলে নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ নিচ্ছি। যেহেতু মামলা হয়েছে, অভিযুক্ত সবার বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা আছে। অবস্থান শনাক্ত হলেই গ্রেপ্তার করতে পারব।

মগবাজারে কার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাসাটি কার সেটি তদন্ত করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে সংবিধান লঙ্ঘন, অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলার মোট আসামি ২৪ জন। এর মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ১২ জন নির্বাচন কমিশনার ও পুলিশের সাবেক চার আইজিপি।

গত ২২ জুন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

ওই দিন রাতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত সোমবার তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আবদুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নূরুল হুদা, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, সাবেক ডিজি র‍্যাব ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল আলম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/এলএম/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩২৬
৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ দিবস ঘোষণা
পতিত আ.লীগের চাঁদাবাজ-দখলদাররা বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে: আমিনুল হক
মব জাস্টিসে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সরকারের উপর আস্থা ফিরেছে: কাজী মামুন 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা