রেলস্টেশন নাকি বাজার?
শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে ও স্টেশনের চারপাশে প্রতিদিন চলে পণ্য কেনাবেচা। স্থায়ী ও অস্থায়ী শতাধিক দোকানের কারণে যাত্রীদের যাতায়াতে ঘটছে বিঘ্ন অনেক সময় হকারদের উৎপাতে যাত্রীরা প্লাটফর্মে দাঁড়াতেও হিমশিম খায়।
অভিযোগ উঠেছে হকারদেরকে এখানে বসতে সহযোগিতা করেছে রেলওয়ে পুলিশই। প্রতিদিন নির্ধারিত অংকের টাকা তুলে ভাগাভাগি করেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরাই। এ কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি হলেও দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন তারা।
চাঁদপুরের বাসিন্দা শাহেদ আলম বলেন, ‘হকারদেও কারণে ট্রেনে উঠা বা ট্রেন থেকে নামা-দুটোই এখন বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ট্রেনে উঠার সময় অনেক বেশি যাত্রী থাকে যখন, তখন হকারদের কারণে ঠিক মত হাঁটাও যায় না।’ এই যাত্রী বলেন, ‘আমি বুঝি না, আমাদের জন্য এই প্লাটফর্ম, নাকি হকারদের জন্য।’
রেল লাইনের ওপরও ভ্রাম্যমাণ হকাররা বসে পণ্য নিয়ে। ট্রেন আসতে দেখলে তারা তাড়াহুড়া করে লাইন থেকে সরে যায়। কোনো একদিনের সামান্য অসাবধানতা যাত্রী, পথচারী বা ভ্রাম্যমাণ ক্রেতাদের জীবন হুমকিতে ফেলতে পারে।
সম্প্রতি চাঁদপুর পৌরসভার ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত করার পর এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্টেশনকে ঘিরে রেল লাইনের দুই পাশে বাক্স বা চটি বসিয়ে উপরে প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে মালামাল রেখে ব্যবসা করছে হকাররা।
এর আগে হকারদের মালামালে আগুন লেগে কোর্ট স্টেশন গেইট ঘরটি পুড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সে সময় রেলওয়ে পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় কিছুদিন স্টেশনটি হকার মুক্ত ছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ফিরতে থাকেন হকাররা। ধীরে ধীরে তাদেও সংখ্যা বেড়ে যায় আগের চেয়ে বেশি।
স্টেশন মাস্টার শাহজাহান ঢাকাটাইমসকে জানান, হকার উচ্ছেদেও জন্য তারা একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি বলেন, ‘এ সমস্যার সমাধান আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হকার বলেছেন, রেলওয়ে পুলিশকে ঘুষ দিয়েই দোকান বসিয়েছেন তারা। তবে চাঁদপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উছমান গণি পাঠান বলেন, ‘হকারদের কাছ থেকে রেলওয়ে পুলিশের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি অবাস্তর। এর আগেও আমরা এদেরকে উচ্ছেদ করেছি। সহসা আবারও উচ্ছেদ করা হবে।’
ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন