বইপ্রেমীদের ভিড় ছুঁয়েছে প্রতিটি স্টল
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বইমেলায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এদিন মেলা প্রাঙ্গণের প্রতিটি স্টলেই ভিড় ছিল। যারা এত দিন অভিযোগ করেছে তাদের স্টলে লোক আসে না আজ তারা খুশি। মোট কথা বই বিক্রি আজ মেলায় যেকোনো দিনের চেয়ে ভালো ছিল।
চন্দ্রাবতী প্রাকশনীর প্রকাশক কামরুজ্জামান কাজল ঢাকাটাইমসকে বলেন, এবারের বইমেলা বেশ গোছানো। বইয়ের বিক্রিও অন্যবারের তুলনায় ভালো।’
সন্ধ্যার সময় এদিকে টিএসসির রাজু চত্বর থেকে, ওদিকে দোয়েল চত্বর থেকে মূল প্রবেশ গেট পর্যন্ত দীর্ঘ সারি বইমেলার প্রধান প্রবেশ গেট পর্যন্ত।
মঙ্গলবার সকালে প্রভাতফেরি শেষে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বইমেলায় চলে আসে ভাষাপ্রেমীরা। মুখে একুশের আল্পনা ও গায়ে কালো পোশাক ছিল তাদের। বাংলা ভাষার প্রতি মায়ার কারণেই বইমেলা এখন চেতনার অংশ হয়েছে।। সকাল আটটায় বইমেলার দ্বার খুলতেই বইপ্রেমীদের স্রোতে কানায় কানায় পূর্ণ হতে থাকে মেলা প্রঙ্গণ। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাষাপ্রেমীদের ভিড় আরও বাড়তে থাকে।
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, এই যে এত বইপ্রেমীরা বই মেলায় এসেছে এটাই তো ভাষা শহীদদের প্রতি শুদ্ধা জানানো। তারা বাংলা ভাষার বই কিনছে। এবারের বই মেলায় যে কোনো বারের চেয়ে বই বিক্রি ভালো হচ্ছে।
মেলা প্রাঙ্গণে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটছেন হেমায়েত উদ্দিন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, সকালে শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সোজা মেলায় চলে এসেছি। মাতৃভাষার ইতিহাস নিয়ে লেখা বই কিনে দেবো সন্তানকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা ধারণ করে বইমেলা। বিশ্বে আর কোনো দেশ নেই যেখানে এক মাস জুড়ে মেলা হয়।
আজ বই মেলার মূলমঞ্চে সকাল সাড়ে সাতটায় শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে ১২০ জন নবীন-প্রবীণ কবি কবিতা আবৃত্তি করেন। সভাপতিত্ব করেন কবি মোহাম্মদ সাদিক।
বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় বহুত্ববাদ: বাঙালি গৌরবময় উত্তরাধিকার শীর্ষক বক্তৃতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিাহাসবিদ ড. আবদুল মমিন চৌধুরী। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম।
এছাড়া সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল ফকির সিরাজের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী’। এছাড়া সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আবদুল জব্বার, ফকির আলমগীর, নমিতা ঘোষ, শিবু রায়, আবদুল হালিম খান এবং স্বর্ণময়ী মন্ডল। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), সাহেদ সরকার বাপ্পী (প্যাড), সুমন রেজা খান (কী-বোর্ড) এবং শাহরাজ চৌধুরী (গীটার)।
আগামীকাল বুধবার বই মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায় এবং চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ।
(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/জেআর/জেডএ)
মন্তব্য করুন