কেনিয়ায় দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে বিকেএমইএ
বাংলাদেশের নিট শিল্পের বাণিজ্য সম্প্রসারণ নতুন বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে কেনিয়ার প্রতিনিধি দলের সাথে দ্বি-পাক্ষিক এবং বহু-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্থাপন করার বিষয়ে বিকেএমইএর অভ্যর্থনা ও আলোচনা সভা হয়েছে।
সভায় বিকেএমইএর পক্ষ থেকে কেনিয়া-বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে বিশেষ করে নিট শিল্প রপ্তানি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনার (শর্ট প্রেজেন্টেশন) মাধ্যমে কেনিয়ায় বাংলাদেশের নিট পণ্য রপ্তানির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও সমস্যাসমূহ তুলে ধরা হয়।
একই সাথে বাংলাদেশের নিটশিল্প খাতের সার্বিক কার্যক্রম উন্নয়নে বিকেএমইএর অবদান সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
কেনিয়ার প্রতিনিধি দলও কেনিয়ায় বাংলাদেশের নিট শিল্পের চলমান অবস্থা, বাধা এবং সফলতা সম্পর্কে বিকেএমইএর মতামত জানতে চান।
শনিবার দুপুরে কিকেএমইএর ঢাকা অফিসের সম্মেলন কক্ষে সংগঠনের প্রথম সহ-সভাপতি এ, এইচ আসলাম সানির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সি শাফিউল হক এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি শামসুল হক (আফ্রিকা উইং) প্রমুখ।
কেনিয়ার প্রতিনিধি দলের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন- শিল্প, বাণিজ্য ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এজি. ডিরেক্টর, চার্লস মাহিন্দা।
এছাড়াও ভবিষ্যতে কেনিয়ায় নিট শিল্পের জন্য বিকেএমইএ পক্ষ থেকে যে কোন বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য আহবান জানান।
প্রসঙ্গত, এ প্রতিনিধিদল এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বিকেএমইএর ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি এ,এইচ আসলাম সানি বলেন, আফ্রিকা অঞ্চলে অন্যান্য দেশের মতো কেনিয়া বাংলাদেশের নিট পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় একটি দেশ। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে ২৫% শুল্ক বাঁধা ক্রানে কেনিয়ায় রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। কেনিয়া শুল্ক বাঁধা নিরসনে দ্রুত যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো বেশি শক্তিশালী হবে। একই সাথে কারিগরি সহায়তা বৃদ্ধির জন্য দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির বিষয়ে উভয় দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের আন্তরিক হওয়ার বিষয়ে আহবান জানান।
কেনিয়া বাংলাদেশ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১০.৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে যার মধ্যে নিটওয়্যার আমদানির পরিমাণ ০.৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অপর দিকে ২০১৬ সালে আফ্রিকা অঞ্চলে বাংলাদেশ ৭৮.৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করেছে। আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মতো কেনিয়ার সাথে পারস্পারিক সমঝোতার মাধ্যমে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে এ অঞ্চলে নিটওয়্যার পণ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে আরো বিস্তৃত পরিসরে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ফেব্রিক্স ও সুতা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, যার মাধ্যমে উন্নত মানের নিট পোশাক উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
বিকেএমইএ কর্তৃপক্ষ উৎপাদিত উন্নতমানের নিট পণ্য কেনিয়াসহ আফ্রিকান অঞ্চলে রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আশু করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও নারায়ণগঞ্জের শান্তির চরে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া নিটপল্লীতে বিনিয়োগের জন্য কেনিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে আহবান জানান।
কেনিয়ার প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে রাজিভ আরোরা সংক্ষিপ্ত বর্ণনার (শর্ট প্রেজেন্টেশন) মাধ্যমে উল্লেখ করেন, কেনিয়া আফ্রিকা অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে বৈদেশিক বাণিজ্যে সর্বোচ্চ আকর্ষণীয় দেশ হিসেবে পরিচিত এবং আগামী দিনে পূর্ব এশিয়ার তৈরি পোশাক শিল্পের অন্যতম প্রতিনিধিত্বকারী দেশ হিসেবে নিজেদেরকে তৈরি করছে। তাই উভয় দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের ভিত্তিতে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধি, কাঁচামালের সহজলভ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আগামী দিনে তৈরি পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উভয় দেশ লাভবান হতে পারে।
সভায় বিকেএমইএর পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি (অর্থ) জি.এম ফারুক, পরিচালক এম, আই সিদ্দিক (সেলিম মাহবুব), পরিচালক মোস্তফা জামাল পাশা, পরিচালক মো. মোর্শেদ সরোয়ার, পরিচালক শহিদ উদ্দীন আহম্মেদ আজাদ এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলভ চৌধুরী প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/৪মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)