‘সরকারের দালাল’ বলে বিএনপি নেতাকে কর্মীদের মারধর
নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির কর্মিসভায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানও।
রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাঁদমারী এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের পাশে অবস্থিত হিমালয় চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বিএনপি ও ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী তাকে লাঞ্ছিত করেন বলে জানা গেছে। বিএনপির রাজনীতি করলেও আবুল কালাম আজাদ ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, দুপুর থেকে নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হতে শুরু করে। দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রনি ও পান্না মোল্লাহসহ আরও কয়েকজন কর্মী সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বিএনপি ও ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মীরা আবুল কালামকে ‘সরকারের দালাল’ আখ্যায়িত করে শ্লোগান দিয়ে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এসময় জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীবসহ অন্যরা এসে উত্তেজিতদের শান্ত করেন। পরে সম্মেলন শুরু হয়।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভিড়ের কারণে কিছু কর্মীর সঙ্গে আমার ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের অনুষ্ঠানে একটু ধাক্কাধাক্কি হতেই পারে।’ তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে লাঞ্ছিত করবে কেন-আমরা দায়িত্বে ছিলাম তাই দায়িত্বে থাকলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে।’
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কর্মিসভা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে সভাস্থলের সিঁড়িতে বিশৃঙ্খলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে দলীয় নেতাকর্মীরা উত্তম-মধ্যম দিয়েছে বলে শুনেছি। এটা তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেই হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’
জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে কর্মিসভায় বক্তব্য দেন সাংগঠনিক টিমের সদস্য বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বদরুজ্জামান খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক রেজাউল করিম, মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূইয়া, আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ প্রমুখ।
কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুরের মেয়র অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা, হামলা ও হয়রানির শিকার। তারা কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারে না। কখন কাকে ধরে নিয়ে যাবো, তা কেউ জানে না। আবার নিয়ে যাওয়ার পর দেখা যাবে সে নিখোঁজ। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যায় পাওয়া যাবে তার লাশ।’
এমএ মান্নান অভিযোগ করেন, ‘মিডিয়ায় সত্য ঘটনা প্রকাশ করা যায় না। গণমাধ্যমের বাকস্বাধীনতাও হরণ করা হয়েছে।’ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। দেশ থেকে ছয় লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/০৭মে/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন