ভাগ্যের চাকা ঘুরলো না শিবচরের শাওনের পরিবারের
চিরচেনা পরিবেশ, পরিবার-পরিজনের মায়া ত্যাগ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকার শাওন। আর্থিক কষ্ট কাটিয়ে উঠাতে, পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে বিদেশের মাটিতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করে উপার্জিত টাকা পাঠাতেন দেশের বাড়িতে। হাসি ফুটতো পরিবারের মুখে। দূর হতো আর্থিক কষ্টও।
ভাগ্যের এই চাকা পুরোপুরি সচল হবার আগেই পাড়ি জমাতে হলো না ফেরার দেশে। বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, পরিবারের সদস্যদের বুক ফেটে আসা কষ্টে রেখে।
পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে ২০১৪ প্রায় ছয় কাঠা জমি বিক্রি করে বাহরাইনে পাড়ি জমান উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মৃত ফারুক মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া। আট ভাই-বোনের মধ্যে শাওন ছিল ৬ষ্ঠ। আর ভাইদের মধ্যে মেঝ।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ৩টার দিকে বাহরাইনের মোহাররক কাজিনা গার্ডেন এলাকায় একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান তিন বাংলাদেশি। হতভাগ্য এই তিনজনের একজন শিবচরের শাওন!
আসছে ঈদুল ফিতরের দেশে আসার কথা ছিল শাওনের। গত সাত মাস আগে দেশে এসে বিয়েও করেন তিনি।
আসছে ঈদে নববধূসহ সবাই প্রতীক্ষায় ছিলেন শাওনের দেশে আসার। হয়তো আসবেনও। তবে চোখ মেলে আর কাউকে দেখা হবে না। মায়ের কাঁধে মাথা রেখে বিদেশের গল্প বলা এখন শুধুই স্মৃতি! এ ফিরে আসা যে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বুকফাটা আর্তনাদ পরিবারের কাছে!
শাওনের মৃত্যুর খবর মুঠোফোনে পৌঁছালে এমন আকস্মিক মৃত্যুতে কোনো সান্ত্বনায় যেন থামাতে পারছে না স্বজনদের কান্না। স্ত্রীও শোকে পাথর। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
তেমন কথা বলতে পারছে না পরিবারের কেউ। শুধু শাওনের লাশ চাইছেন তারা। এখন আর কিছুই চাওয়ার নেই আকাশ ভেঙে পড়া পরিবারটির!
শাওনের মা সুরাইয়া বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রিয় সন্তানের মুখতো জীবিত অবস্থায় আর দেখা হলো না। তার মৃত মুখটা এক নজর দেখতে চাই। তার লাশটি যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনে এটাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি।’
(ঢাকাটাইমস/২৪মে/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন