প্রদর্শনী
জাদুঘরে দেখে আসুন কুরআনের দুর্লভ ছায়ালিপি
রাজধানী ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে চলছে হাতে লেখা দুর্লভ কুরআনের এক প্রদর্শনী। যা ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (রা.) এর সময় প্রস্তুত করা হয়েছিল। জাদুঘরে প্রবেশ করে হাতের ডান দিকে তাকালেই চোখে পড়বে কাচের দেয়ালে আবৃত একটি কুরআন শরিফ। পাশে তথ্য সংবলিত একটি লেখা আছে। যাতে বলা হয়েছে, ‘‘হযরত ওসমান (রা.) এর সময়ের হাতের লেখা কুরআন শরিফ ‘মাযহাফে ওসমানীর ছায়ালিপি তথ্য’।’’ এর দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি, প্রস্থ ১ ফুট, উচ্চতা তিন ফুট, ওজন ৭ কেজি ৫০০ গ্রাম এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৭২।
জাদুঘরে আসা অনেকেই হাতে লেখা কুরআন শরিফ দেখছেন। জাদুঘর দেখতে আসা ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকা এসেছি ডাক্তার দেখাতে। আমাকে কয়েকদিন ঢাকায় থাকতে হবে। ঢাকায় দেখার মতো সব কিছু ঘুরে দেখছি। এরপর জাদুঘরে এলাম। এখানে এসে হযরত ওসমান (রা.) এর সময়ের হাতে লেখা কুরআন শরিফ দেখে খুবই ভালো লাগছে। কুরআন শরিফটি দেখে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’
এই কুরআন শরিফ সম্পর্কে জাতীয় জাদুঘরের কিপার এবং ইতিহাস ও ধ্রুপদী ডিপার্টমেন্টের প্রধান ড. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর রাশিয়ার নেতৃত্বে একটি মধ্যস্থতা হয় তাসখন্দে। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের তাসখন্দে বসেন। তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে কুরআন শরিফটি উপহার দেন। সআইয়ুব খান আবার পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানকে এটি উপহার দেন। এক পর্যায়ে মোনায়েন খান ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কুরআন শরিফটি প্রদান করেন। তারপর যখন বাংলাদেশ হয় এটি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে স্থান পায়।
জাদুঘর থেকে জানা যায়, ১৮ মে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে কুরআন শরিফের সেই ছায়ালিপি হস্তান্তর করেন। এভাবে এটি জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহশালায় চলে আসে। ১৯ মে সহাতে লেখা কুরআন শরিফটি সবার জন্য জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সপ্তম শতকের হাতে লেখা এই কুরআন শরিফটির লিপিশৈলী ‘কুফি’।
হাতে লেখা কুরআন শরিফের বিশেষ প্রদর্শনীটি চলবে ঈদুল ফিতরের পরের দিন পর্যন্ত। এরপর এটি কোথায় রাখা হবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানালেন স্বপন কুমার বিশ্বাস।
ঢাকাটাইমস/৫জুন/এসএস/টিএমএইচ
মন্তব্য করুন