অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা-৩৬

আলম রায়হান
| আপডেট : ১০ আগস্ট ২০১৭, ১৩:২৬ | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০১৭, ১৩:২২

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের পরামর্শে আমরা হাইকোর্টে গেলাম। বাঁচা গেল ঢাকার সবচেয়ে দাপুটের এবং কার্যকর মেয়র মির্জা আব্বাসের মামলার যন্ত্রণা থেকে। মেয়র হানিফের সময় ঢাকা সিটি করপোরেশনের আওয়ামী ঘরানার উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা একান্ত আলাপচারিতায় বলেছিলেন, ‘এখন মির্জা আব্বাস মেয়র থাকলে কাজ করা যেত। হানিফ সাহেব তো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না; অফিসেই আসে বেলা একটার পর; তাও সর্বক্ষণ ঘিরে থাকে কর্মী আর চামচারা; কোনো ফাইল নিয়ে আলোচনা করা যায় না!’

মির্জা আব্বাসের মামলা হাইকোর্টে ঝুলে যাবার পরও তার সঙ্গে আমাদের তিক্ত ঘটনা প্রবাহ থেমে যায়নি। এবার আমরা লাগলাম তার বিরুদ্ধে; ঈগলের পেছনে ফিঙ্গ দলের মতো। তবে এ ব্যাপারে হাউজে তীব্র বিরোধিতা ছিল। মিটিং-এ প্রায় সবাই বললো, আমরা নতুন করে বাড়াবাড়ি করলে মামলার পরিবর্তে এবার হামলা হবে! খুবই যৌক্তিক আশংকা। এর বিপরীতে আমার যুক্তি ছিল, যেহেতু মামলা করে ওপেন হয়েছেন সেহেতু আমাদের ওপর হামলা করাতো দূরের কথা; আমাদের প্রটেকশন দেয়ার দায়িত্ব এখন মির্জা আব্বাসের; তাকে দারোয়ানের কাজ করতে হবে!

তবে যত জোর দিয়েই বলি না কেন, আমার এ যুক্তি অন্যদের কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে হয়নি। কারণ, সবাই চুপ ছিল। আমার কথায় মুখ ফুটে সায় দেয়া তো দূরের কথা, কেউ মাথাও নাড়েনি; সবাই নীরব ছিল। আর এ নীরবতা সম্মতির লক্ষ্যণ ছিল না। এরপরও আমি সিদ্ধান্ত দিলাম, ‘সুগন্ধা ওয়াচ ডগের মতো মেয়র আব্বাসের পেছনে লেগে থাকবে। হামলা হলে তো আমার উপর হবে, সমস্যা কী?’ এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো; অবশ্য আমার সিদ্ধান্ত কার্যকর না হবার সুযোগ সুগন্ধায় মোটেই ছিল না। তবে আমি একক সিদ্ধান্ত দিতাম না। যতটুকু মনে পড়ে, আমি দুইবার একক সিদ্ধান্ত দিয়েছি। ৯১ সালের সংসদ নির্বাচানে বৃহত্তর সিলেটের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে সন্তোষ শর্মার রিপোর্ট দিয়েছিল। যাতে নানান সম্ভাবনার মধ্যে বলা হয়েছে, সিলেট সদরে আওয়ামী হারবে এবং পরাজিত হবে ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুরও। হাউজের ‘সর্বসম্মত বিরোধিতা’ উপেক্ষা করে এ রিপোর্ট আমি ছেপে ছিলাম; নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল, সন্তোষ শর্মার প্রিডিকশনই একশভাগ ফলেছে। যতদূর স্মরণে আছে, মির্জা আব্বাসের পেছনে লাগার বিষয়টি ছিল একক সিদ্ধান্ত দেবার দ্বিতীয় ও শেষ ঘটনা। মির্জা আব্বাসের পেছনে লাগার অর্থ এই নয় যে, মামলার হয়রানিতে ব্যক্তিগতভাবে খুবই ক্ষেপে গিয়েছিলাম। বিষয়টি মোটেই ব্যক্তিগত ছিল না। লক্ষ্য ছিল, সুগন্ধাকে পাঠকের কাছে অধিকতর জনপ্রিয় ও ‘পাওয়ারফুল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এ বিষয়ে পত্রিকার মালিক সৈয়দ মোয়াজ্জেম সাহেবের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমার চেয়ে আপনি অনেক ভালো বোঝেন; সিদ্ধান্ত আপনার। গ্রিন সিগনাল পবার পর শুরু হলো প্রতি সংখ্যায় ‘আব্বাস নামা’; অব্যাহত থাকলো মোহাম্মদ হানিয়ের সঙ্গে সিটিং মেয়রের নিদারুণ পরাজয় পর্যন্ত।

এর ফলে সুগন্ধার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল খুবই শক্ত অবস্থান; এরপর আর সুগন্ধার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। আর মেয়র নির্বাচনে চট্টগ্রাম ও ঢাকার ফলাফল নিয়ে সুগন্ধার রিপোর্ট ফলেছে পুরোপরি; যে রিপোর্ট তৈরি করেছিল সন্তোষ শর্মা। মোহাম্মদ হানিফ ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছবি দিয়ে নির্বাচনের আগে সুগন্ধার প্রচ্ছদ রিপোর্টের শিরোনাম ছিল, ‘ঢাকার মেয়র হানিফ: চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন চৌধুরী।’

মেয়র নির্বাচনে মোহাম্মদ হানিফের সঙ্গে পরাজয় মির্জা আব্বাসকে রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়। তবে অনেক বছর পরে খণ্ডিত ঢাকার মেয়রের জন্য নির্বাচনী লড়াইতে মির্জা আব্বাসের পরাজয় রাজনীতিতে তাকে অন্য ব্যাপ্তি দিয়েছে; তার পরিবারে বেড়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মামলার হয়রানির কারণে তিনি এ নির্বাচনী প্রচাররে অংশ নিতে পারেননি। এ অবস্থায় তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস নির্বাচনী প্রচারে হাল ধরেন এবং বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এ সূত্র ধরেই রাজনীতিতে তার একটি শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে। এটি রাজনীতিতে একটি বিশেষ ঘটনা।

একই সময় আরেকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হয়েছে। তা হচ্ছে, ঢাকার মেয়র নির্বাচনে পিতা-পুত্রের কাছে মির্জা আব্বাসের দুই দফায় পরাজয়ের রেকর্ড। এ রকমের রেকর্ড সম্ভত কেউ আর ভাঙতে পারবে না!

এদিকে সাপ্তাহিক মিটিংয়ে লম্বা আওয়াজ দিলেও আমি ভয়ে থাকতাম, ভেতরে এক রকমের আতঙ্ক কাজ করতো। আর সতর্ক থাকতাম যাতে মির্জা আব্বাসের মুখোমুখি না হই। কারণ চড়-থাপ্পর একবার দিয়ে দিলে তার আর কোনো প্রতিকার হয় না; টিউব থেকে টুথপেস্ট বের করে ফেলার মতো। এপরও একদিন তার সঙ্গে দেখা হলো সে সময়ের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের অফিসে। সদ্য সাবেক মেয়রকে প্রবেশ করতে দেখে বেশ বিব্রত হলাম। উঠতে চাইলাম। আকবর ভাই বসতে ইশারা করলেন। বসলাম। কিন্তু কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছিলাম না। সে এক নিদারুণ অস্বস্তিকর অবস্থা। এ সময় আকবর ভাই বললেন, আব্বাস এই তোমার শত্রু আলম রায়হান! পরিবেশ কিছুটা হালকা হলো। জনাব আব্বাস বললেন, আপনি যা করেছেন..!

: মামলা করতে গেলেন কেন?

: লাঠি চালান না দিয়ে, মামলা করেছি..!

আমি আর কথা বাড়ালাম না। কারণ মির্জা আব্বাস বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। পরমুহূর্তেই আবার একদম শান্ত হয়ে গেলেন শীতের নদীর মতো। নিজে থেকে বলতে থাকলেন, আরে ভাই; যেখানে যাই সেখানেই প্রশ্ন, কেন সাংবাদিক খ্যাপালাম, সংসদেও শান্তি নেই। আমার যুক্তি কেউ শোনে না; মামলা করে যেনো গান্ধা পোকা ধরলাম....।

: কেন, আপনি কি সাংবাদিকদের জোনাকী পোকা মনে করেছিলেন....! আমার এ বাঁকা উক্তির কোন জবাব দিলেন না ঢাকার ডাকসাইটের সদ্য বিদায়ী মেয়র। প্রায় আধা ঘণ্টা পর আমি বিদায় নিলাম। এসময় আসামির সঙ্গে হ্যান্ডশেক করলেন বাদী। এরপরও কিছুদিন আতঙ্কে ছিলাম। এদিকে কিছু দিন পর এক পর্যায়ে ধারণা হলো, অই সাক্ষাতের বিষয়টি ঘটনাচক্র ছিল না; কর্নেল আকবর হোসেন ঘটিয়েছেন।

এদিকে কর্নেল আকবর হোসেনের বাসায়ই মির্জা আব্বাসের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল; সম্ভবত ১৯৮৫ সালে। তখন তিনি নগণ্য রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে কেবলই সাবেক কমিশনার। আকবর হোসেন থাকতেন বনানী ডিওএইচএস’র শ্বশুরের বাসায়। যদিও সম্ভ্রান্ত শ্বশুরের কন্যাটি তার সঙ্গে শেষতক থাকেননি। আর এর দায় যেকোনো বিচারে জনাব আকবরের ওপর বর্তায়। সে অন্য এক উপাখ্যান।

রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া আমার সনাতনী অভ্যাস। ১৯৭৩ সালে ক্লাস নাইনে পড়াকালে শুরু হওয়া রাজনীতির বারান্দায় হাঁটাচলা এর সূচনা কারণ হতে পারে। আর বিষয়টিকে অনেক বেশি এগিয়ে দিয়েছেন ইব্রাহিম ভাই, জনকথা সম্পাদক ইব্রাহিম রহমান, ১৯৮৩ সালে। তিনি অনেক নেতার কাছে আমাকে নিয়ে গেছেন। কিছুদিন পর তিনি আমাকে একা পাঠাতেন। ইব্রাহিম ভাই বলতেন, ‘তোমার লক্ষ্য হবে কেবল অড্ডা দেয়া। নেতাদের কথায় কেবল ‘হ’ পুরাবা, ডিফার করবা না। তারা তাদের প্যাচাল পাড়বে; এ থেকে সত্যটা বুঝে নেবা।’

নেতাদের মধ্যে গল্প করতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো আতাউর রহমান খান ও কর্নেল আকবরের সঙ্গে। কোনো রকম হিপোক্রেসি ছিল না তাদের। এক সময়ের মুখ্যমন্ত্রী ও এরশাদের নয় মাসের কাগুজে প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ রাজনীতিক আতাউর রহমান খান ধীরে ধীরে নানা বিষয় নিয়ে স্মৃতিচারণ করতেন। আমি ছিলাম মুগ্ধ শ্রোতা। তিনি লেখক হিসেবেও ছিলেন উচ্চ মানের। তার অনেক গুলো বই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু যে বইটি প্রকাশ করার আগে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন সেটির নাম নির্ধারণ করেছিলে, ‘মানুষ-অমানুষ।’ আর এ বইটি লেখার জন্য অনুপ্রানিত হয়েছিলেন সে সময় রাজনীতির এঘর-সেঘরে যাতায়াতকারী জয়নুল আবদিন ফারুকের কারণে। জনাব ফারুক পরে মহান জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ হয়েছিলেন; তখন আতাউর রহমান খান কবরে! তা না হলে হয়তো তিনি আর একটি বই লেখার জন্য অনুপ্রাণিত হতেন, ‘এ কি দেখিলামরে!’

কর্নেল আকবর হোসেন একটু দ্রুত লয়ে কথা বলতেন। তিনিও বই লিখেছেন। তবে তা সুপাঠ্য বলা যাবে না। লেখার চেয়ে তিনি অনেক ভালো বলতেন। তার গল্পে কোনো কিছু বাদ যেতো না; শুরু করলে থামতে জানতেন না। সেনাবাহিনীতে তার চাকরি জীবন, রাজনীতি, প্রশাসন, দল এমনকি ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও খোলামেলা কথা বলতেন তিনি। একদিন ফান করে বললাম, এইযে এতোসব কথা বলেন; যদি গোপন ফাঁস হয়ে যায়।

: তোমার কি ধারণা, এসব কাহিনী আমি ছাড়া আর কেউ জানে না; একা কোন কাজ করা যায়? আমি কি মঙ্গল গ্রহ থেকে এসেছি!

: যারা জানে তারা তো আর সাংবাদিক না।

: অনেক সাংবাদিক জানে।

: সাংবাদিকদের এ কথা বলা কি ঠিক?

: রাখো মিয়া, কে সাংবাদিক আর কোনটা সাংঘাতিক- সে জ্ঞান আমার আছে।

এই বলে তিনি সিগারেট ধরিয়ে একটা লম্বা টান দিলেন। আমি বললাম, এইমাত্র না ভাবি সিগারেট খেতে নিষেধ করলো! তিনি বললেন, দেখবে না; সে তো ভিতরে।

: আমি যদি বলে দেই?

: তুমি বলবা না, সে বোধও আমার আছে; ইয়ার্কি মাইরো না!

সব মিলিয়ে আমার ধারণা, কেবল রাজনৈতিক নেতা নন; আকবর হোসেন ছিলেন মানবিক, ছিলেন বুদ্ধিদীপ্ত; দলের প্রতি অনুগত এবং মন্ত্রী হিসেবের ছিলেন বিশেষ দক্ষতার। আসলে তিনি ছিলেন, দার্শনিক গোছের মানুষ। এই আকবর হোসেনের বাসায়ই আমার প্রথম দেখা হয় মির্জা আব্বাসের সঙ্গে। সেদিন সকাল ১১টার দিকে আমি যখন তার বাসায় যাই তখন তিনি ঘুমে। সকালের নাস্তার পর একটু অলস ঘুমাবার অভ্যাস ছিল তার। ভাবি, জাহানারা আকবর, বললে আকবরকে ডেকে দেব? আমি বারণ করলাম। কারণ আমি এখনের মতো তখনও মানতাম, ঘুম হচ্ছে আল্লাহর রহমত। ঘুমের অপরিসীম গুরুত্ব নিয়ে ইসলাম ধর্মসহ বিভিন্ন ধর্ম এবং আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক কথা বলা আছে।

মিনিটপাঁচেক পর মির্জা আব্বাস এলেন। তাকে আমি আগে থেকে জানতাম, কিন্তু দেখা হয়নি। এর আগেই আপ্যায়ন সামগ্রি চলে এসেছিল। জমিদারি স্টাইলে সেই আপ্যায়ন আমরা উপভোগ করতে করতে আলাপ করছিলাম বিভিন্ন বিষয়ে। এক পর্যায়ে মনে হলো, আকবর ভাই একটু বেশি ঘুমালে ভালো। এ সময় ভাবি আবার এসে বললেন, আকবরকে ডেকে দেব? আমি নিষেধ করলাম, জনাব আব্বাসও সায় দিলেন। আলাপচারিতা আমরা দুজনই বেশ উপভোগ করছিলাম।

সেদিন প্রায় বিশ মিনিট একান্তে কথা হয়েছিল মির্জা আব্বাসের সঙ্গে। এ সময় সামরিক শাসক জেনারেল জিয়ার দিকে নতুন একটি ফোকাস গেল। জেনারেল জিয়ার সম্পর্কে অনেক ভয়ংকর কথা সাধারণভাবে বাজারে চালু আছে। যেমন, ক্ষমতার রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সৃষ্টি করার জন্য জাসদের সঙ্গে চরম বিশ্বাস ঘাতকতা, রহস্যজনক বন্ধীদশা থেকে উদ্ধারকারী কর্নেল তাহেরকে সাজানো বিচারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো, শতশত সেনা কর্মকর্তা-সদস্যেকে ফাঁসিতে হত্যা, নিজে মুক্তিযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতাবিরোধীরে কাছে টানা, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রটেকশন দেয়া, এ খুনের নেপথ্যে থাকা; সর্বোপরি রাজনীতির বারোটা বাজনো। জেনারেল জিয়ার বিষয়ে এগুলো প্রচলিত জানা কথা। এর বিপরীত কথা যাদের কাছে ব্যাক্তিগত আলোচনায় শুনেছি তাদের মধ্যে কর্নেল আকবর হোসেন, অধ্যক্ষ ইউনুস খান ও মির্জা আব্বাস আমার কাছে বিশেষ মনে হয়েছে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :