ভালো অবস্থানে দেশের শেয়ারবাজার

ইউনুছ আলী আলাল
 | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:২৬

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন গতকাল একটি নতুন মাইলফলক অতিক্রম করেছে। চার লাখ কোটির ঘরে প্রবেশ করেছে বাজার মূলধন। সেই সঙ্গে গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচকের নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর রেকর্ড হয়। সূচক ছয় হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। আমাদের পুঁজিবাজার যে ক্রমেই একটি শক্তিশালী বাজারে পরিণত হচ্ছে আর বিনিয়োগকারীরাও এখানে আস্থা রাখছেন তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

দেশের শেয়ারবাজার গত সপ্তাহে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ৬০০০ পয়েন্টে অতিক্রম করেছে। এমনকি ডিএসই৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকেও সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে। এছাড়াও বর্তমান শেয়ারবাজারে বাজার মূলধনের পরিমাণ ৪ লাখ ৭ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ বাজার মূলধন। অর্থাৎ বিদায়ী সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজার বিভিন্ন রেকর্ড দিয়ে পার করেছে।

ডিএসই তথ্যে জানা যায়, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের ৪ কার্যদিবসের মধ্যে এক দিন বাদে তিনদিনই বেড়েছে সূচক। এর ফলে সব ধরনের সূচক বাড়লেও লেনদেন আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আলোচিত সপ্তাহটিতে লেনদেন কমেছে ৬.৯১ শতাংশ। তবে গড় লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে ১৪৮ কোটি ৭৫ লাখ ১৭ হাজার ২০৩ টাকা।

সাপ্তাহিক ব্যবধানে ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক ১০৮.৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই৩০ সূচক ৩৯.৭৮ পয়েন্ট বেড়ে ২১৭৮ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ২৫.৭৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৩৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৮টি কোম্পানির। দর কমেছে ১৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির এবং লেনদেন হয়নি একটি কোম্পানির শেয়ার। এগুলোর ওপর ভর করে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয় ৪ হাজার ২৩০ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা। যা এর আগের সপ্তাহে ছিলো ৪ হাজার ৫৪৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৬ টাকা। সেই হিসেবে গত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৩১৩ কোটি ৯৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৫৭ টাকা।

সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৭.৭১ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৫.৮৯ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪.৭৮ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১.৬২ শতাংশ। আর সপ্তাহশেষে ডিএসইর বাজার মূলধন অবস্থান করছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ ১২ হাজার ৫০৩ টাকা। গত সপ্তাহে যার পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২ হাজার ৯০ কোটি ৮১ লাখ ৯ হাজার ২৭৮ টাকা। সে হিসেবে এ সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ১.৪১ শতাংশ।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক বেড়েছে ২২৫.২৭ পয়েন্ট। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৮৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৪টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১১২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর সপ্তাহশেষে লেনদেন হয়েছে ২১১ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৭৮৩ টাকার শেয়ার।

ডিএসইর পিই রেশিও বেড়েছে

সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও বেড়েছে ০.৫২ পয়েন্টে বা ৩.২৫ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৬.৫৯ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৬.০৭ পয়েন্ট। সে হিসেবে সাপ্তাহিক ব্যবধানে পিই রেশিও বেড়েছে ০.৫২ পয়েন্ট।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ১১.৯০ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ২১.৩৭ শতাংশ, প্রকৌশল খাতের ২৩.৫২ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ২৪.৬৭ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১৩.৩৭ পয়েন্টে, পাট খাতের পিই রেশিও ৩৩৩.৩৪ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৯.৯৭ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২০.৩৬ পয়েন্টে, কাগজ খাতের মাইনাস ৯৩.৮৫ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ২৮.৫১ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতের ১৪.২৫ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ৩৫.৮৯ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ৩০.৬৩ পয়েন্টে, চামড়া খাতের ২৬.৩৯ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৫.৫০ পয়েন্টে, সাধারণ বিমা খাতে ১৭.৫৬ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ২৮.৫৭ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতে ১৯.৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সাপ্তাহিক রির্টানে দর বেড়েছে ১৩ খাত: বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) দর (রিটার্ন) বেড়েছে ১৩ খাতে, কমেছে ৭ খাতে। লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, আলোচিত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে পেপার ও প্রিন্টিং খাতে। গত সপ্তাহে এ খাতে দর বেড়েছে ১৪.৯১ শতাংশ। এরপরেই আছে জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাত। এ খাতে দর বেড়েছে ৫.৫৭ শতাংশ। দর বাড়া অন্যান্য খাতের মধ্যে ব্যাংক খাতে ৩.৬৪ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ০.৫৫ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতে ০.২৬ শতাংশ, লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে ৪.৩৩ শতাংশ, জুট খাতে ২.৭৫ শতাংশ, বিবিধ খাতের ১.২১ শতাংশ, ফার্মাসিটিক্যাল খাতে ০.৯৭ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে ০.৯৫ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ০.০৩ শতাংশ এবং টেলিকমিনেকেশন খাতে ৪.২৮ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

এদিকে দর কমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে। এ খাতে দর কমেছে ১.১৬ শতাংশ। দর কমার অন্যান্য খাতের মধ্যে সিরামিক খাতে ০.২৬ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ০.৫৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ০.২৪ শতাংশ, আইটি খাতে ০.৭২ শতাংশ, আর্থিক খাতে ০.০৫ শতাংশ এবং বস্ত্র খাতে ০.৪২ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।

ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে স্বেচ্ছায় একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভ্যাল মঙ্গলবার শুরু

চাঁদপুরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের রেমিট্যান্স গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প নির্মাণে ব্যবহৃত হবে বসুন্ধরা সিমেন্ট

চামড়া শিল্পের উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

ন্যাশনাল ব্যাংকের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে

ফের বাড়ল সোনার দাম, প্রতি ভরি এক লাখ ১৭ হাজার টাকা

সরকারের আর্থিক সম্পদের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিতে অডিট কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করার তাগিদ

ইসলামী ব্যাংকের বরিশাল জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সিটি ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি স্বাক্ষর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :