বাস বন্ধ কেন জানেন না সড়কমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:৫০ | প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:০৫
ফাইল ছবি

রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের দিক রাজধানীমুখী দূর ও স্বল্পপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ কেন, সে প্রশ্নের জবাব নেই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে।

গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে এমন প্রশ্ন পেয়ে মন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাব চাইতে পাশে থাকা এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দেখিয়ে দিলেন। রাঙ্গা বলেন, অতীতে বিএনপির কর্মসূচিতে নির্বিচারে বাস পোড়ানো হয়েছে দেখে মালিকরা আজ বাস বের করতে ভয় পাচ্ছেন।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় জাতীয় সড়ক পরিবহন নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৫তম সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের কাছে বিনা নোটিশে বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের দিন সকালে রাজধানীর নিকটবর্তী জেলাগুলো থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। যাদের জরুরি কাজ আছে তারা ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে, কখনও দীর্ঘ পথ হেঁটে রাজধানীতে এসেছেন। তবে নগরের ভেতরের পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো না। স্বাভাবিকের তুলনায় বাস কম থাকায় এখানেও দীর্ঘ পথ হেঁটে বা অন্য যানবাহনে চলতে হচ্ছে লাখো মানুষকে। আবার নগরের ভেতরে কোনো কোনো এলাকায় যানজটও দেখা দিয়েছে।

বিএনপির অভিযোগ, তাদের সমাবেশে বাধা দিতে সরকারই বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা খতিয়ে দেখতে হবে। খোঁজ নিতে হবে বাধাটা কে দিচ্ছে।’

‘বিএনপিতো নিজেরাই নিজেদের বাধা দেয়। অতীতে আমরা যখন এসব অভিযোগের খোঁজ-খবর নিয়ে দেখি, তখন অনেক সময় দেখা যায় এসব অভিযোগের বাস্তব কোন ভিত্তি নেই। আসলেই কথায় কথায় নালিশ করা বিএনপির পুরনো অভ্যাস।’

‘সরকার বাধা না দিলে ঢাকায় প্রবেশের মুখে রাস্তায় যানবাহন সংকট এবং দূরপাল্লার পরিবহনও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না কেন’- এমন প্রশ্নে সড়কমন্ত্রী তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দেখিয়ে বলেন, ‘এটা আমি জানি না, উনি জানেন।’

রাঙ্গা বলেন, ‘রাস্তা তো অলরেডি ব্লক হয়ে গেছে, এগুলো তো (বাস) ফিরে এসে আবার যেতে হবে। তারপর আবার অতীতে তো গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, যাত্রী পুড়িয়ে দেওয়া... এটা তো কারো না করো অভ্যাস ছিল। এখন পরিবহন মালিকরা কোন রিস্ক নিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢাকায় আসবে?’।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে গিয়ে বিএনপি শহর অচল করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কাদের। বলেন, সরকারি দল তাদের কর্মসূচি পালনের সময় জনভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রাখলেও বিএনপি সেটি কখনও করে না।

কাদের বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতির জন্য আমরা সমাবেশ দিয়েছি শনিবার দেখে। এ ধরনের সমাবেশে জনভোগান্তি হবেই এটাকে সহনীয় মাত্রায় রাখা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। কিন্তু আজকে তো সহনীয় মাত্রায় নেই। সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করে এখন রাস্তা অচল হয়ে গেছে।’

‘বেগম জিয়ার সংবর্ধনার দিনও (যুক্তরাজ্য থেকে ফেরার দিন) একই অবস্থা হয়েছিল। আমরা শেখ হাসিনাকে যে সংবর্ধনা দিয়েছিলাম সেখানে আমাদের মহিলা কর্মীদের উপস্থিতিও তাদের সম্মিলিত উপস্থিতির চেয়েও বেশি ছিল। তারপরও আমরা ছিলাম সুশৃঙ্খল পরিবেশে, নেতাকর্মীরা ছিল ফুটপাতে।’

‘যারা আজকে রাস্তা অচল করে সভা সমাবেশ করে, তারা ক্ষমতায় আসলে তারা দেশ অচল করবে।’

বিএনপি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার না কি সহায়ক সরকার চায়, এই বিষয়টি আজকের জনসভায় খালেদা জিয়া স্পষ্ট করবেন বলেও আশার কথা জানান কাদের।

‘তারা একবার বলে সহায়ক সরকার আবার বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আসলে কী চান তারা? ...আমাদের কথা তো পরিষ্কার, সহায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক তো মামার বাড়ির আবদার। আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। পৃথিবীর অন্যন্য গণতান্ত্রিক দেশে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন সরকার হয়।’

এর আগে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৫তম সভায় সড়কমন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলার, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধ করা কঠিন। কারণ এটা নির্বাচনী বছর।

‘আমি চাইলেও জনপ্রতিনিধিরা তা করতে দেবে না। এটা করলে ভোটের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাস্তবতা বুঝতে হবে। আপতত এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/টিএ/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :