দেখা গেলো বিরল সূর্যগ্রহণের পূর্ণগ্রাস, নেমে আসলো অন্ধকার

তথ‌্যপ্রযু‌ক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৬| আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১২
অ- অ+

মহাজাগতিক রহস্যের শেষ নেই। অনেক ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষকে নাড়িয়ে দেয়। অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে দিন রূপ নিলো রাতে। আর মেক্সিকোর মাজাতলানের বাসিন্দারা এটি প্রথম প্রত্যক্ষ করেছেন। গতকাল সোমবারের সৌরজাগতিক বিস্ময়ের সাক্ষী হলেন মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃত অংশের লক্ষ লক্ষ দর্শক। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ বলে কথা। যদিও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল আকাশে মেঘ থাকতে পারে।

সূর্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে এত ভিড় এর আগে উত্তর আমেরিকা আগে দেখেনি, এমনটাই বলা হচ্ছে। টেক্সাস ও অন্যান্য জায়গায় জনবহুল পথ ও মাঝদুপুরে চার মিনিটের বেশি সময় অন্ধকার নেমে আসার যে পূর্বাভাস ছিল, তার ফলেই এই অত্যুৎসাহ।

ক্রিস লমাস ব্রিটেনের গথাম থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি হোক বা রোদ “বাকিদের সঙ্গে অভিজ্ঞতাটা ভাগ করে নেওয়াই আসল।” ডালাসের বাইরে এক রিসোর্টে আছেন তিনি। এই রিসোর্টে তিল ধারণের জায়গা নেই।

টিম রাস্ট নামের ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলেন, ‘সর্বশেষ যখন পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয় সে সময় আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে পারিনি। তবে এবার ছিল পুরো পূর্ণগ্রাস।’

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে ১০ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে মেক্সিকোর মাজাটলান শহরে এসেছেন লরদেস কারো (৪৩)। আরও হাজারো মানুষের সঙ্গে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখেছেন তিনি। লরদেস বলেন, ‘সর্বশেষ যখন সূর্যগ্রহণ দেখি তখন আমার বয়স ৯। আবার কবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে পাব জানি না। তাই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।’

সোমবারের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে চাঁদ সূর্যের সামনে এসে একে ঢেকে দেয়। সূর্যের বহির্ভাগের বাতাবরণ বা করোনা অংশটি কেবল দেখা যায়। এর ফলে যে গোধূলি পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাতে পাখি ও অন্যান্য জীব কিছুটা বিচলিত হয়েছে। এই মাপের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পাবে আরও ২১ বছর পর।

পূর্ণগ্রাসের পথ আনুমানিক ১১৫ মাইল (১৮৫ কিলোমিটার) বিস্তৃত। এই বিস্তীর্ণ পথে অনেক বড় শহর যেমন ডালাস, ইন্ডিয়ানাপোলিস, ক্লিভল্যান্ড, বাফেলো, নিউ ইয়র্ক ও মন্ট্রিল রয়েছে। এই পথে আনুমানিক ৪৪ মিলিয়ন মানুষের বাস এবং ২০০ মাইলের (৩২০ কিলোমিটার) মধ্যে আরও কয়েকশো মিলিয়ন মানুষ রয়েছেন।

নাসা ও বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞকে সূর্যের এই পরিক্রমা-পথ বরাবর নিযুক্ত করা হয় যাতে গবেষণামূলক রকেট, আবহাওয়া সংক্রান্ত বেলুন উৎক্ষেপণ করা যায় এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যায়।

মেক্সিকোর পর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্য থেকে সূর্যগ্রহণ দৃষ্টিগোচর হতে থাকে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্থান থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। তবে সবখানে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায়নি। যুক্ত

তিন দেশের যেসব অঞ্চল থেকে সূর্যগ্রহণ সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে, কয়েক দিন ধরেই সেসব এলাকায় ভিড় করছিলেন কৌতূহলী ও উৎসুক মানুষজন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, প্রায় চার কোটি মানুষ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ স্বচক্ষে দেখতে বিভিন্ন এলাকায় সমবেত হয়েছিলেন।

এর আগে কানাডায় এ রকম সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল ১৯৭৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। মেক্সিকোতে ১৯৯১ সালের ১১ জুলাই ও যুক্তরাষ্ট্রে শেষ এ রকম সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের এ ক্ষণকে গাঁটছড়া বাঁধার জন্য বেছে নিয়েছিলেন তিন শতাধিক জুটি। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের রাসেলভিলেতে এই গণবিয়ের আয়োজন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/৯ এপ্রিল/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এই মুহূর্তে ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল 
সরকারি হস্তক্ষেপে বিমানের টিকিটের দাম কমেছে ৭৫ শতাংশ
শ্রীপুরে কারখানায় ডাকাতি
খুলনায় শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা