দেশে উৎপাদন হচ্ছে ২৪০ ধরনের পাটপণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ মার্চ ২০১৮, ২৩:০১ | প্রকাশিত : ০৭ মার্চ ২০১৮, ২২:৩২

দেশে ২৪০ ধরনের পাটপণ্য উৎপাদন হচ্ছে জানিয়ে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, বর্তমানে আমাদের উদ্যোক্তারা ২৪০ ধরনের পাটপণ্য উৎপাদন করছে, যেটা গত বছর ছিল ১৩৫টি।

বুধবার জাতীয় পাট দিবস-২০১৮ উপলক্ষে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথভাবে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘পাট শিল্পের উন্নয়নে পাটের বহুমুখীকরণ’ শীর্ষক সেমিনার মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম বলেন, বাংলাদেশের চার কোটি মানুষ সরাসরি পাট খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সরকার ‘জুট প্যাকেজিং অ্যাক্ট’ এর মাধ্যমে প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে পাটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার কারণে দেশের পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাট চাষিরা ভালো মূল্যে পাট বিক্রি করতে পারছে। প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সালে দেশের পাটের উৎপাদন ছিল ৬৫ লাখ বেল, ২০১৫ সালে ৭০ লাখ বেল, ২০১৬ সালে ৮৫ লাখ বেল এবং ২০১৭ সালে ছিল ৯২ লাখ বেল।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পাট খাতের দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উপলব্ধি করে, সরকার ইতোমধ্যে ছয়টি টেক্সটাইল কলেজ এবং ১২টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছে। তিনি পাট পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য পাট বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম আরও বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন।

পাট প্রতিমন্ত্রী স্বল্পমূল্যে পাটের তৈরি ব্যাগ উৎপাদন করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে দেশের মানুষকে পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আরো উৎসাহিত করা যাবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সুপ্রাচীন কাল হতে পাটের মাধ্যমেই কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে এবং পাট শুধু আমাদের সোনালী অতীতই নয়, সোনালী ভবিষ্যৎও বটে। তিনি বলেন, গত কয়েক দশক ধরে তৈরি পোশাক খাত এবং প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালক হিসেবে কাজ করেছে, এখন সময় এসেছে নতুন চালক খুঁজে বের করার এবং এক্ষেত্রে পাটের সম্ভাবনা খুবই বেশি।

তিনি আরও বলেন, পাটের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের নিকট তা সঠিক ভাবে উপস্থাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাট ও পাট পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ ৯৬২.৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, তবে পাট পণ্যের বহুমুখীকরণ, বাণিজ্যিক সৃজনশীল-জ্ঞান স্বল্পতার জন্য পাটের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের ব্যাপক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের মোট পাটের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করে এবং প্রায় কাঁচাপাটের ৯০ শতাংশ রপ্তানি করে। তিনি বলেন, পাট খাতকে এবং দেশে ও বিদেশে পাটের বাজার পুনরুজ্জীবিত করতে “জুট পাল্প পেপার অ্যাক্ট” এবং “পাট আইন” প্রণয়ন একান্ত আবশ্যক।

ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, পাট কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে বিপর্যয় রোধে সর্বোৎকৃষ্ট বিকল্প, তাই বাজারের চাহিদা ও ক্রেতার পছন্দের ভিত্তিতেই পাট পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর আরো মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই’র পাটের বহুমুখীকরণ বিষয়ক বিশেষ কমিটির আহ্বায়ক, এবং নির্বাহী পরিচালক, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড মো. রাশেদুল করিম মুন্না মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, পরিবেশ সচেতনতা ও সবুজ পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পাটের তৈরি শপিং ও ফুড গ্রেড ব্যাগ, কম্পোজিট, জিও-টেক্সটাইল, পাল্প ও কাগজের বিশাল বাজার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, ইন্টারন্যাশনাল জুট স্টাডি গ্রুপের তথ্যানুযায়ী বিশ্ব বাজারে শপিং ব্যাগ-এর বার্ষিক চাগিদা ৫০ বিলিয়ন পিস এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৯ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কিনা আমাদের পাট শিল্পের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক একটি বিষয়।

তিনি ঘোষিত “জুট প্যাকেজিং এ্যাক্ট”-এর কার্যকর বাস্তবায়ন, পাট পণ্যের জন্য রিফাইন্যান্সিং ফান্ড বা গ্রিন ফান্ড-এর আওতায় ঋণ সুবিধা প্রদান, প্রযুক্তিগত সহায়তা বৃদ্ধি এবং দক্ষ জনবল বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।

নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন-এর উপদেষ্টা (গবেষণা)বাবুল চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর প্রাক্তন পরিচালক ড. এ এফ এম আকতারুজ্জামান এবং বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন-এর চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল হাসান অংশগ্রহণ করেন।

মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচালক এস এম জিল্লুর রহমান, ডিসিসিআই’র প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এম এস সেকিল চৌধুরী, প্রাক্তন পরিচালক আহম্মদ হোসেন মজুমদার, এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ শামছুল আলম, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (জিটিপিডিসি)’র পরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ জুট গুডস্ এক্সপোরটার্স এসোসিয়েশন-এর সভাপতি এনামুল হক পাটোয়ারী প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭মার্চ/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

বে গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি শামসুর রহমান মারা গেছেন

দেশে রিজার্ভ কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন

হজ ক্যাম্পে এক্সিম ব্যাংকের সেবা বুথ উদ্বোধন 

ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বুথ উদ্বোধন

সাউথইস্ট ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ইউনিয়ন ব্যাংক ও মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ারের চুক্তি স্বাক্ষর

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অপারেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ 

ডাক বিভাগকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিল নগদ

সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে স্বেচ্ছায় একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভ্যাল মঙ্গলবার শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :