কয়লা ‘গায়েবের’ ঘটনা অনুসন্ধানে দুদকের কমিটি
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা গায়েবের ঘটনা অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক এ এস এম তাজুল ইসলামকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ঢাকাটাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রণব বলেন, দুদক আইন অনুযায়ী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর এই অনুসন্ধান কাজের তদারকি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দুদক পরিচালক কাজী শফিকুল আলমকে।
দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে তোলা এক লাখ ৪২ হাজার টন কয়লার কোনো হদিস মিলছে না। বর্তমান বাজার দরে ২২৭ কোটি টাকার কয়লা এখন মজুদ থাকার কথা থাকলেও পরিদর্শন করে এর কিছুই পাওয়া যায়নি। কয়লা কী হয়েছে, সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন ন।
নথিপত্রের হিসাব অনুযায়ী, খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা যেখানে স্তূপ করে রাখা হয়, সেখানে মজুদ ছিল এক লাখ ৪২ হাজার টন। অথচ সেখানে এখন এক টন কয়লাও নেই বলে জানান কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক।
প্রতি টন কয়লার বর্তমান বাজার মূল্য ১৬ হাজার টাকা। সেই হিসাবে, হদিস নেই ২২৭ কোটি টাকার কয়লার। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সদস্য আবু সাঈদ কয়লা খনি এলাকা গত সোমবার পরিদর্শনে যাওয়ার পর কয়লা গায়েব হওয়ার কথা প্রথমে ধরা পড়ে।
এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন মহাব্যবস্থাপককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সাথে আরও একজন মহাব্যবস্থাপক ও উপ-মহাব্যবস্থাপককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কয়লা খনি কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কয়লা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রবিবার রাত ১০টার দিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম বিদ্যুৎ সংকটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রংপুর বিভাগের আট জেলায়। জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা চুরি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/এএকে/জেবি)