একসঙ্গে থাকতে আসামে দুই নারীর হলফনামা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৫২

গ্রামে একসঙ্গে বড় হয়েছেন। পরস্পরকে ছেড়ে থাকতে পারেন না। একজন— গুলশারা আলি দুই সন্তানের জননী। অন্যজন, আমিনা খাতুনের বয়স মাত্র ১৯। এখনও বিয়ে করেননি।

আনন্দবাজার জানায়, আজীবন এক সঙ্গে থাকার (লিভ ইন) অঙ্গীকার করে সম্প্রতি আদালতে হলফনামা দিয়েছেন আসামের ধুবুড়ির এই দুই নারী। আর তারপরেই ছিঃ ছিঃ রব গ্রামে। ছুটে আসে জনতা, এগিয়ে আসে বুম-ক্যামেরা! শান্তিতে থাকতে চাওয়া দুই মেয়ের সাফ কথা, তারা এক সঙ্গে থাকছেন। তবে সম্পর্ক নিয়ে এর বেশি কিছু বাইরের লোকের কাছে বলবেন না। আর বলবেনই বা কেন? আইনজীবী জয়ন্তী দাস জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ‘লিভ ইন’ করতে চেয়ে হলফনামা দেয়ার ঘটনা আসামে এই প্রথম।

বালাজান পার্ট-১ গ্রামের বাসিন্দা, গুলজার আলির কন্যা গুলশারা। পাশের বালাজান পার্ট-২ গ্রামেই থাকেন আহমেদ আলির মেয়ে, আমিনা। ছোটবেলা থেকে একই সঙ্গে খেলাধুলো। আমিনা তেমন লেখাপড়া করেননি। গুলশারা সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর গুলশারা সন্তানসহ গ্রামে ফিরলে আমিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। দুই মেয়ের ঘনিষ্ঠতা যে কেউ ভালো চোখে দেখবে না, তা নিয়ে সতর্ক করা হয় দুজনকে। আমিনার পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে পালিয়ে যান দুই বন্ধু। আমিনার পরিবারের তরফে থানায় গুলশারার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়।

এই অশান্তির মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরে ৩৭৭ ধারা নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের কথা জানতে পারেন গুল এবং আমিনা। যোগাযোগ শুরু করেন আইনজীবীদের সঙ্গে। স্বয়ং জেলা পুলিশ সুপার লংনিত তেরং তাদের পাহারা দিয়ে গ্রামে ফিরিয়ে দিয়ে যান। এ-ও সাফ জানিয়ে দেন, আইন দুই কন্যার পক্ষে। অশান্তি হলে পুলিশ মেয়েদের নিরাপত্তা দেবে।

শেষ পর্যন্ত গত ৪ অক্টোবর ধুবুড়ি আদালতে গিয়ে আমিনারা আজীবন এক সঙ্গে থাকা এবং পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব পালন করার অঙ্গীকার করে ‘নোটারি অ্যাফিডেভিট’ করেন। তারপরে একসঙ্গে থাকা শুরু, সন্তানদের নিয়ে। গুলশারা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়েই স্পষ্ট, দুজন মেয়ে যদি নিজেদের ইচ্ছেয়, কোনও পুরুষকে বিয়ে না করে এক সঙ্গে থাকে তাতে দোষের কিছু নেই। আইন আমাদের পক্ষে। আমরা যত দিন বাঁচব এক সঙ্গে থাকব।’ আমিনার সাফ কথা, ‘বিয়ে করিনি। বন্ধু হিসেবে আজীবন থাকার অঙ্গীকার করেছি মাত্র। এই সম্পর্ক নিয়ে অন্যদের কাটাছেঁড়া করা নিষ্প্রয়োজন।’

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/এসআই)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :