কঠিন, তবুও আশা বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুন ২০১৯, ০৮:২৫

সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়ে এবার বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সেই আশার মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা। তবে, শুরুটা যেভাবে হয়েছিল সেটার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেনি টাইগাররা। প্রথম ম্যাচ জিতে টানা দুই ম্যাচে হেরে বসে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করে হারলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারটা ছিল লজ্জাজনক।

বাংলাদেশে রচতুর্থ ম্যাচটি ছিল শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। সম্প্রতি সময়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের যে পারফরম্যান্স তাতে এই ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্টই প্রাপ্য ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় মাশরাফিদের। ১৭ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রেকর্ড জয়ের মাধ্যমে টানা তিন ম্যাচের হতাশা ভোলে টাইগাররা। এদিন ক্যারিবীয়দের দেয়া ৩২২ রানের টার্গেট তাড়া করে ৫১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় মাশরাফি-সাকিবরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ছয়টি ম্যাচ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ২০ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মুশফিকু ররহিমের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড রান করে হারেও ৪৮ রানে হারে বাংলাদেশ। ছয় ম্যাচ পর বাংলাদেশের পয়েন্ট ৫। সেমিফাইনালে উঠতে হলে অন্তত ১০ পয়েন্ট প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশের বাকি আর তিন ম্যাচ। এই তিন ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান। অর্থাৎ, তিনটিই দক্ষিণ এশিয়ার দেশ।

এই তিনটি দলের মধ্যে সহজ দল আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে তাদের পারফরম্যান্সও ভালো না। র‌্যাঙ্কিংয়েও তারা বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। ধরা যাক, ২৪ জুন আফগানিস্তানকে বাংলাদেশ হারাল। এরপরও দুইটিতে জয় পেতে হবে। অর্থাৎ, ভারত ও পাকিস্তানকে হারাতে হবে। কিন্তু সেটি কি সম্ভব? যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে সর্বশেষ ২০১৫ সালে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর দুইবার এশিয়া কাপ ও একবার নিদাহাস ট্রফির ফাইনালসহ বেশ কয়েকটি ম্যাচে ভারতের কাছে হারে বাংলাদেশ। তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপে ভারত দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছে তারা। ২ জুলাই ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। লন্ডনের ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম লর্ডসে ৫ জুলাই মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। সরফরাজ আহমেদের দলের এবারের অবস্থা খুব ভালো না। স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারালেও অন্যদের বিরুদ্ধে টানা হেরেই চলেছে তারা। কিন্তু তাদের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা সহজ হবে বলে মনে হয় না। সব মিলিয়ে সেমিফাইনালে খেলাটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকটা হলো ব্যাটিং। প্রথম ছয় ম্যাচের মধ্যে টাইগাররা তিনবার ৩০০ এর উপরে রান করেছে। অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে টাইগররা ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের সেরা স্কোরের রেকর্ড গড়েছে। প্রথম ছয় ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন। দুইটি সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব আল হাসান। একটি সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। দুজনই এবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করলেন। তবে, এবারই প্রথম এক বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি করলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। এর আগে ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ দুইটি সেঞ্চুরি করেছিল বাংলাদেশ। দুইটি সেঞ্চুরিই এসেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে।

এবার বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই ক্রিকেট বিশ্লেষকরা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে সেমিফাইনালিস্ট হিসাবে ধরে রেখেছিলেন। বাস্তবে হয়তো সেটিই হতে চলেছে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যতোগুলো ম্যাচ হয়েছে তার পরিসংখ্যান সেটাই বলে। এই চারটি দলই অপ্রতিরোধ্য। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। তারা কাউকেই ছেড়ে কথা বলছে না।

তবে, টুর্নামেন্টে এখনো অনেক পথ বাকি। তাছাড়া এই বিশ্বকাপে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে আর ম্যাচ পরিত্যক্ত হচ্ছে তাতে সামনে হিসাব নিকাশ উল্টে যেতেও পারে। মাশরাফি বিন মর্তুজার দল হয়তো সকল পরিসংখ্যান উলোট পালোট করে দিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিবে সেটিই টাইগারভক্তদের প্রত্যাশা। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল জানিয়েছেন, যতক্ষণ সুযোগ আছে ততক্ষণ সেমির আশা ছাড়ছি রান আমরা।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এসইউএল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :