দলত্যাগী নেতাদের গয়েশ্বরের ‘তুলোধুনো’!

ফাইল ছবি

সম্প্রতি নানা অজুহাতে বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দুই জন শীর্ষ নেতা। গুঞ্জন আছে দলত্যাগী নেতার তালিকা আরো লম্বা হতে পারে। তবে দুই একজন নেতা চলে গেলে তা নিয়ে বিচলিত না হতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় তিনি দল থেকে পদত্যাগী নেতাদের সুসময়ের নেতা আখ্যা নিয়ে তাদের কঠোর সমালোচনা করেন। বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি দলের সুসময়ে বিভিন্ন মানুষকে এমপি-মন্ত্রী হওয়া। কারণ তারা আন্দোলন সংগ্রাম করে বর্ণাঢ্য জীবন লাভ করেন নাই। আমাদের নেতাকর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া যে সরকার গঠন করেছিলেন তখন অনেক নামিদামি নাদুসনুদুস নেতারা আমাদের দলে এসেছেন। তাদের মনে হয় দেশের এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে, আর সহ্য হচ্ছে না। সেই কারণে তারা প্রস্থান করতে চান। এগুলো নিয়ে মনে হয় বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই।’

সম্প্রতি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এম মোরশেদ খান। কিছুদিন আগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। বার্ধক্যজনিত সমস্যার পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতি নিয়েও তাদের অভিযোগ আছে বলে জানা গেছে। তবে তাদের দল ছাড়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেছেন।

পদত্যাগী এসব নেতার দিকে ইঙ্গিত করে গয়েশ্বর বলেন, দুই-একজন নেতাকর্মী দল ছাড়লে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। কমলাপুরে গিয়ে দেখবেন কতগুলো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে আবার অপর পাশ থেকে কতগুলো ট্রেন আবার আসছে। তারপরও আপনারা দেখবেন প্লাটফর্মে লোকের অভাব নেই।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘বিএনপি একটি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম, একটি বটগাছ। ক্লান্ত শরীর নিয়ে মানুষ এখানে আসবে বিশ্রাম নিবে পিপাসা মেটানোর পরে আবার চলে যাবে- এটাই স্বাভাবিক। এদেরকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার দরকার নেই। আমাদের বিচলিত হওয়ারও কিছুই নেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নাই। মানুষের স্বাধীনতা নাই। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার নাই। যার কারণে দেশে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তারপরেও কিন্তু খেলা থেমে নেই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আগ্রাসী শক্তির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করাই ছিল ৭ নভেম্বরের চেতনায় চেতনাবোধ। আজকে আগ্রাসী শক্তির কাছে আমরা যেন মাথা বিক্রি করে দিছি। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের স্বার্থ সম্পদ সব বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমরা কোনভাবেই যেন ধৈর্য হারা না হই।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মাদ জসিম, নাজিম উদ্দিন মাস্টার, কৃষক দলের আহবায়ক কমিটির সদস্য নাসির হায়দার, জিয়াউল হায়দার পলাশ, মাইনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/বিইউ/ইএস)