হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্রকে অব্যাহতি

ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া, স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্রবাদী শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব পদ থেকে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন সাধারণ সম্পাদক ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়।
শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সাগর-রুনি’ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহাজোটের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব উত্তম কুমার দাস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. সোনালী দাস, সিনিয়র সহসভাপতি লায়ন বিমল কৃষ্ণ শীল, সহসভাপতি তপন কুমার হাওলাদার, চিন্ময় মজুমদার, মিঠু রঞ্জন দেব, সাধন চন্দ্র মণ্ডল, বিষ্মভর কুমার নাথ, অধ্যাপক দিলিপ মজুমদার, সুশীল পাইক, সমন্বয়কারী অ্যাড. তারক চন্দ্র রায়, জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রিপন দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. হেমন্ত কুমার দাস প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের বিরুদ্ধে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, একক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া, জামায়াত, স্বাধীনতা বিরোধী ও উগ্র মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে কানেকশন, আর্থিক অনিয়মম, কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ও পদবীর বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ, ব্যক্তির নামে বাণিজ্যিক লোগো রেজিস্ট্রেশন, স্বেচ্ছাচারিতা ও ফেসবুক লাইভ, সংগঠনের কর্মীদের বিপদে এগিয়ে না আসা, একাধিক সংগঠনের জন্ম ও সাংগঠনিক কর্মসূচি বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
উত্তম কুমার দাস বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট বাংলাদেশে প্রচলিত কোনো রাজনৈতিক দলের তাবেদারী করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। এটি কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন, যা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে ও দেশের সংবিধানের আলোকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কথা বলা এবং সর্বদা সোচ্চার থাকতে সচেষ্ট।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করা গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিকের একঘোয়েমি, স্বেচ্চাচারিতা, ব্যবসায়ী মনোভাব ও ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তার কারণে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সবার সম্মতিতে গোবিন্দ চন্দ্রকে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাজোট এর প্রধান সমন্বয়ক পদটি বিলুপ্ত করা হয় বলে জানান উত্তম কুমার। তিনি বলেন, প্রধান সমন্বয়ক বিজয় ভট্টাচার্য্য যেহেতু বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ নামে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নতুন একটি সংগঠনের কর্ণধার, সেহেতু তাকে সকল সাংগঠনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
গংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সঞ্জয় ফলিয়া, লিটন নন্দী, এডভোকেট উদয় বসাক, এডভোকেট রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, সুশীল মিত্র, ইঞ্জিনিয়ার সৌমিত্র সরদার, তথ্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আরুন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্রমহাজোটের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান যুব বিষয়ক সম্পাদক সমিরন বড়াল, সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বিজন সানা, চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ কথক দাস, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী সুজন ভৌমিক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক কার্তীক চক্রবর্তী, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট বনরূপা রায়সহ অনেকে।
ঢাকাটাইমস/০৭ফেব্রুয়ারি/ইএস

মন্তব্য করুন