গোবিন্দর কাছে আজও ‘ঋণী’ অজয়-সালমান

বিনোদন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ১০ মে ২০২০, ১২:০৬

তারকা-তারকা বন্ধু, তাও আবার হয় নাকি? বিনোদন দুনিয়া মানেই তো রেষারেষি, একে অন্যকে টক্কর দেয়ার চেষ্টা। সেখানে এমন বন্ধুত্ব! শুধুমাত্র বন্ধুত্বের খাতিরে আত্মত্যাগ বলিউড পাড়া খুব কমই দেখেছে। এক্ষেত্রে আরেক উঠতি তারকার জন্য আত্মত্যাগের সবচেয়ে বড় উদাহরণ কমেডি কিং গোবিন্দ।

সময়টা ১৯৯৮ সাল। সে সময় গোবিন্দর বাজার একেবারে তুঙ্গে। ‘হিরো নম্বর ওয়ান’, ‘কুলি নম্বর ওয়ান’, ‘দুলহে রাজা’, ‘নসিব’- একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অভিনেতা সে সময় ঠিক করেন, বিখ্যাত হলিউড সিনেমা ‘ফ্রেঞ্চ কিস’-এর হিন্দি রিমেকে অভিনয় করবেন।

সে মতোই শুরু হয় প্রস্তুতি। ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রী, সংগীত পরিচালক সবই চূড়ান্ত হল। নামও ঠিক হল, ‘দিল দিওয়ানা মানে না’। ছবির শুটিং শুরু হবে হবে করছে। এমন সময় গোবিন্দর কাছে খবর আসে, অজয় দেবগণও একই কনসেপ্টের একটি ছবিতে অভিনয় করছেন। ‘ফ্রেঞ্চ কিস’ থেকেই অনুপ্রাণিত সে ছবির ইতিমধ্যে শুটিংও এক মাস হয়ে গেছে।

অজয় দেগণ তখন বলিউডে নবাগত। অন্যদিকে গোবিন্দর জনপ্রিয়তার আকাশ তখন সুবিশাল। এই অবস্থায় সাধারণত সিনিয়রদেরই জায়গা ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু গোবিন্দ খবর পাওয়া মাত্রই ফোন করলেন অজয়কে। জিজ্ঞাসা করলেন ছবির খুঁটিনাটি। অজয়ও সবিস্তারে জানালেন সব কথা। ছবিতে অজয়ের নায়িকা ছিলেন কাজল। পরিচালক ছিলেন অনীশ বাজমি।

কাজল এবং অজয় জুটির অন্যতম সেরা এবং জনপ্রিয় সে ছবির নাম ছিল ‘প্যায়ার তো হোনা হি থা’। সব কিছু শুনে গোবিন্দ এক মুহূর্ত চিন্তা না করে তার নিজের ছবির আইডিয়া বাতিল করে দেন। একই কনসেপ্ট নিয়ে বলিউডে দুটি ছবির কোনো মানে হয় না, এমনটাই মনে করেছিলেন তিনি।

জোর খাটাতে পারতেন গোবিন্দ। নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করে বন্ধ করে দিতে পারতেন অজয়-কাজলের সেই ছবির শুটিং। কিন্তু সেটা তিনি করেননি। নিজের বিশাল অংকের টাকা নষ্ট হবে জেনেও সরে এসেছিলেন। জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলেন নতুনকে। সেখান থেকেই তাদের বন্ধুত্ব নতুন মোড় নেয়। সেই বন্ধুত্ব আজও অটুট।

গোবিন্দর আত্মত্যাগের এরকম আরও অনেক উদাহরণ আছে। ১৯৯৭ সালে সুপারস্টার সালমান খানের হিট ছবি ‘জুড়ুয়া’তে প্রথমে গোবিন্দকেই পছন্দ করা হয়েছিল। কিন্তু সালমানের একটি ফোন কল এবং অনুরোধই সমস্ত হিসাব-নিকাশ বদলে দিয়েছিল। এক মুহূর্ত চিন্তা না করে সেই ছবি সালমানকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এই মহানুভব মানুষটির ২০০০ সালের পর থেকে কেরিয়ারে ভাঁটা পড়তে শুরু করে। একের পর এক ফ্লপে ভরে যায় তার ফিল্মি কেরিয়ার। তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ভোটে জিতে সাংসদ হলেও পরবর্তীকালে তেমন কিছু সুবিধা করতে পারেননি।

ঠিক সেই সময়েই গোবিন্দর পাশে দাঁড়ান সালমান। যে সাহায্য কয়েক বছর আগে গোবিন্দ করেছিলেন, সেই সাহায্যই ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ভাইজান। ‘পার্টনার’ ছবিতে তিনি প্রায় জোর করেই গোবিন্দকে নেয়ার কথা বলেন প্রযোজকদের। অবশেষে নেয়া হয় গোবিন্দকে। সেই ছবি বক্স অফিসে সাফল্যও পায়।

এর পরেও অনেক ছবিতে কাজ করেছেন গোবিন্দ, সাফল্য পাননি। তবে গোবিন্দার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে প্রতি বার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার তারকাখ্যাতি বিলুপ্তির পথে। কিন্তু গোবিন্দর নিখুঁত অভিনয়, কমেডি সেন্স, নাচ আর মহানুভবতার জন্য তার কাছে আজও ‘ঋণী’ অজয়-সালমান সহ অনেকে।

ঢাকাটাইমস/১০মে/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :