শিশুর মৃত্যু: মায়ের মামলায় বাবা ও দাদা গ্রেপ্তার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৪৭
অ- অ+

পঞ্চগড়ে জাহিদ হাসান (৯) নামের এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যুর ৩ মাস পর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে শিশুটির মা।

জাহিদ পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের পাহাড়বাড়ি এলাকার আল-আমিনের ছেলে। সে স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) শিশুটির মা লভলী বেগম (২৫) পঞ্চগড় সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহার দায়েরের পর পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত জাহিদের বাবা আল-আমিন (৩৬) এবং আল-আমিনের বাবা আমিরুল ইসলাম (৫৫)। পলাতক রয়েছেন মামলার আরেক আসামি আল-আমিনের ছোট ভাই আব্দুস সামাদ (৩০)।

জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের ৭ অক্টোবরের। ঘটনার পর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশে জাহিদের চিৎকার শুনে তার দাদা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে সুতার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। পরে সেখান থেকে তিনি দ্রুত জাহিদকে নামানোর পর তার মৃত্যু হয়।

ওই দিন রাতেই সদর থানার পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। একই সাথে শিশুটির বাবা একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, ঘটনার প্রায় তিন মাস পর গত ৬ জানুয়ারি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যার তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন জাহিদ মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসে। এমন সময় তার বাবা তাকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের আলোকে প্রশ্ন করতে থাকেন। প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় জাহিদকে মারধর করে বাবা আল-আমিন। এক পর্যায়ে হাত-পায়ে ধরে টেনে হিচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়।

মামলার বাদী জাহিদের মা লাভলী বেগম বলেন, জাহিদকে বেধড়ক মারপিট করলে সে কান্নাকাটি করছিল। কান্না থামাতে আমি তাকে ভাত খেতে দেই এবং বাড়ির পূব দিকে গরুকে ঘাস দিতে যাই। ঘণ্টা খানেক পরে এসে দেখি ছোট ছেলে জিহাদ (৪) ছাড়া বাড়িতে আর কেউ নেই। জিহাদের কাছে জানতে পারি জাহিদকে তার বাবা মারপিট করে টেনে হিচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে গেছে। লাভলী বেগম আরও বলেন, খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে দেখি বাড়ির পূর্ব দিকে পানের বরজের কাছে একটি মেহগনি গাছ থেকে জাহিদের বাবা আল-আমিন নিচে নামছেন। গাছের ডালে রশির সাথে ফাঁসিতে ঝুলছে জাহিদ। নিচে দাঁড়িয়ে ছিল জাহিদের চাচা আব্দুস সামাদ ও দাদা আমিরুল ইসলাম। আমি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ছিলাম। এছাড়া সব সময় আতঙ্কে থাকতাম। জাহিদের স্মৃতিচারণ করে বিলাপ করলে তার বাবা আমাকে এসব ভুলে যেতে বলতো। আর বলতো সংসার করার ইচ্ছা থাকলে যেন এসব কাউকে না বলি।

পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামসুজ্জোহা সরকার জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে নিশ্চিত হয়েছি শিশুটিকে কেউ মেরে ফেলেছে। প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/কেআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে দুই ককটেল বিস্ফোরণ
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১৬৯০ জন
এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধাদের স্মরণে ‘বিআরপি’র মশাল মিছিল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা