শেরপুরের রানী হত্যা মামলার আসামিকে নির্দোষ দাবি

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১৫:০৭
অ- অ+

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী মির্জাপুরে ঝলমলি রানী হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামিকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মামলার বাদী। সোমবার বিকালে মামলার বাদী সপ্না রানীর উদ্যোগে উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের কয়রাকুড়ি গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত ঝলমলি রানীর ছোটবোন সপ্না রানী বলেন, আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ। আমাদের বিয়ের পর একটা কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অভাব অনটনের সংসার হওয়ায় পরবর্তীতে আমরা চলে যাই টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানাধীন সোহাগপাড়া এলাকায়। সেখানে আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ নাসির গ্লাস কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

এর আগে আমার বড়বোন ঝলমলি রানীর সঙ্গে প্রায় ১৭ বছর আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের সন্যাসী ভিটা গ্রামের অমূল্য মাস্টারের ছেলে প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। ওই অবস্থায় তাদের ঘরে দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এর কয়েক বছর পর বড়বোন ঝলমলি, তার স্বামী প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ও তাদের দুই মেয়েকে নিয়ে তারাও চলে যান টাঙ্গাইলে।

মির্জাপুর থানার সোহাগপাড়া বাজার সংলগ্ন জৈনক রবিন সরকারের ছয় তলা বাড়ির তৃতীয় তলার উত্তর পূর্বপাশে পাশাপাশি রুম ভাড়া নিয়ে আমরা থাকতাম। আমার স্বামী মির্জাপুর থানাধীন নাসির গ্লাস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে বোনজামাই প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ও আমার বড়বোন ঝলমলি রানী তারা দুজনও ওই কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আর আমি সবসময় বাসায় থাকতাম। গত ৫ জুলাই ২০১৮ সাল রাত ৯টার দিকে বাসায় আমার বোন জামাই প্রানকৃষ্ণ এবং বোন ঝলমলি রানী তাদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।

বিষয়টি কে বা কারা বাসার মালিককে জানায়। পরে বাসার মালিক রবিন সরকার এসে কিছু না জেনে আমার স্বামী রনজিৎ বর্মনকে নানান রকম হুমকি দেন এবং ওই বাসা থেকে বের করে দেন। এরপর আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণ তার কর্মস্থল নাসির গ্লাস কোম্পানির কর্মস্থলে নাইট ডিউটি করতে যান। সি-সিফট ডিউটি হয় রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। তিনি যাবার পর আমার একমাত্র শিশু মেয়ে অনুরাধা ও বড়বোনের দুই মেয়ে পিপাসা রানী ও পাপিয়া রানীকে সঙ্গে নিয়ে আমার রুমে ঘুমিয়ে পড়ি।

সপ্না রানী বলেন, ‘পাশের রুমে আমার বোন ঝলমলি রানী ও তার স্বামী প্রানকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন ঘুমিয়ে পড়েন এবং প্রাণকৃষ্ণের ড্রইং রুমে প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মণের বাবা অমূল্য মাস্টার, তার বোন জামাই অনুকূল তারাও ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ভোরে ঘুম থেকে জেগে উঠে আমি বাথরুমে যাবার সময় তাদের ঘরের দরজার দিকে তাকালে দরজাটা বাইরে থেকে সিটকারি লাগানো দেখতে পাই এবং দরজার সামনে অন্যান্য দিনের মতো সেখানে কারও পায়ের সেন্ডেল ও জুতা না থাকায় সন্দেহ হয়।’

‘পরে দরজা খোলে রুমের ভেতরে গিয়ে বড়বোন ঝলমলি রাণীর গলা কাটা লাশ ও ফ্লোরে রক্ত মাখা দা পড়ে থাকতে দেখতে পাই। তাদের ড্রইংরুমে যারা রাতে ঘুমিয়েছিল সকালে কেউ ছিল না। পরে আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন আসে। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।’

এরপর আমার অজান্তে বড়বোন ঝলমলি রানীর স্বামী প্রাণকৃষ্ণ চন্দ্র বর্মনকে এক নাম্বার আসামি ও আমার স্বামী রনজিৎ বর্মনকে দুই নাম্বার আসামিসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায় আমি সপ্না রানীকে ওই মামলার বাদী করে লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

স্বপ্না বলেন, ‘এর আগে লিখিত ওই অভিযোগটি প্রস্তুত করে বাসার মালিক রবিন সরকার আমার সই নেন। আমাকে পড়তে দেয়া হয়নি লিখিত ওই অভিযোগপত্র। বোনের হত্যা মামলার আসামি কাকে দেয়া হয়েছিল আমি কিছুই জানতাম না। পরদিন সকালে ঘটনার রাতে ডিউটি করে অফিস ছুটি হওয়ার পর নাসির গ্লাস কোম্পানির মেইন গেইট থেকে বের হয়ে আসার সময় আমার স্বামী রনজিৎ বর্মণকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং আমার স্বামী ২৮ মাস জেল হাজত খাটেন তিনি।’

আমার জানামতে বড়বোন ঝলমলি রাণীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই আমার স্বামী জড়িত ছিলেন না, তিনি নির্দোষ। কে বা কারা আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সু-সম্পর্ক বিনষ্ট করতে বোনের হত্যা মামলায় আমার স্বামী রণজিৎ বর্মণকে আসামি করেছে। আমি আমার স্বামীকে নির্দোষ দাবি করছি। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তদন্তের মাধ্যমে তাদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।

(ঢাকাটাইমস/৯নভেম্বর/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ পৌরসভায় শেষ হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ: অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল মারল কে?
কিছু ঘটলেই যমুনায় যাওয়ার প্রবণতা সহ্য করা হবে না: উপদেষ্টা মাহফুজ 
সিলেট থেকে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে মদিনায় গেল প্রথম হজ ফ্লাইট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা