নারকেল গাছে হোয়াইট ফ্লাইয়ের সংক্রমণ, কমছে ফলন

বিভাষ দাস, চিতলমারী (বাগেরহাট)
| আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৩৯ | প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:৩৪

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ‘হোয়াইট ফ্লাই’য়ের আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। আক্রান্ত নারকেলগাছের পাতায় প্রথমে ছাই-কালো রঙের দাগ পড়ে। গাছের সবুজ রং নষ্ট হয়ে যায়। সাথে সাথে আক্রান্ত গাছের ফলন কমে আসে। এরপরে এক সময় গাছগুলো মারা যায়।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, হোয়াইট ফ্লাই নামক এক ধরনের পোকার আক্রমণে নারকেলগাছগুলো রোগাক্রান্ত হচ্ছে। চিতলমারী উপজেলায় মাছের ঘেরের পাড় এবং বসত বাড়ি এলাকায় রয়েছে অসংখ্য নারকেলগাছ। গাছের এই সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে কৃষকরা দাবি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী কৃষকের মতে, আক্রান্ত নারকেলগাছের ফলন আগের তুলনায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে।

চিতলমারী উপজেলার রায়গ্রামের কৃষক তাপস বাড়ৈ জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে নারকেলগাছে সাদা সাদা মাছির মতো পোকা দেখা যাচ্ছে। এই পোকা যে নারকেলগাছে পড়ে সেই গাছের নারকেলের সাইজ ও উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়।

চিতলমারীর হিজলা ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক সুকুমার বিশ্বাস জানান, তার পুকুর পাড়ের নারকেলগাছগুলো বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোন কোন গাছ মরে যাচ্ছে।

কুরমুনি গ্রামের লিটন বড়াল জানান, এলাকার নারকেলগাছগুলোর ফলন এখন আর আগের মতো হয়না। গাছের পাতার উপর ছাই-কালো রঙের ছোপ্ ছোপ্ দাগ পড়ে। কিছুদিন পরে গাছ মরে যায়।

ওই পোকাকেই বলা হয় ‘হোয়াইট ফ্লাই’ বা ‘সাদা মাছি’ এই তথ্যটি জানান চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস।

তিনি আরও জানান, পোকাগুলো প্রথমে পাতায় ওপর বসে। পরে পাতায় মাকড়সার জালের মতো আবরণ তৈরি করে। প্রতিদিন এর পরিমাণ বাড়তে থাকে। পোকাগুলো পাতার রস চুষে নেয়, ফলে ধীরে ধীরে ওই গাছের পাতা অস্বাভাবিকভাবে বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যায়। গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। গাছের ফল দেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। একপর্যায়ে গাছ মারা যায়।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আজিজুর রহমান জানান, বর্তমানে নারকেলগাছে ‘হোয়াইট ফ্লাই’ বা ‘সাদা মাছি’ ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছে। এটি ২০১৯ সালে প্রথম দেখা যায়। বর্তমানে নারকেলের ফলন বিগত অর্থ-বছরের তুলায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে জেলার প্রায় তিন হাজার ৬১৯ হেক্টর জমির নারকেলগাছ হতে ৩০ হাজার ৯৩৬ মেট্রিকটন নারকেল উপাদন হয়।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একদল বিজ্ঞানী এসে সরেজমিনে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা দেখেছেন ৬১টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছে এই পোকা আক্রমণ করে। বিশেষ করে নারকেল, কলা এবং পেয়ারা গাছে এই পোকা অবস্থান করে। ভালোভাবে এই পোকা দমন করতে হলে সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থার (আইপিএম) গাইড লাইন দরকার। কৃষকদেরকে ‘ইমিডা ক্লোরোফিড জাতীয়’ ঔষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। নারকেলগাছ লম্বা বিধায় ফুট পাম্পের মাধ্যমে স্প্রে করতে হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :