গুলিতে যুবক আহত: পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ৫
ফরিদপুরে এক ব্যক্তিকে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে একটি মেহগনির বাগানে নিয়ে হাবিব ফকির (৩২) নামে এক ব্যক্তির দুই পায়ে গুলি করে আহত করার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পিস্তলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়েছে ফরিদপুরের কোতয়ালি ও সালথা থানায় ।
ফরিদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় পুলিশ। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ মো. আব্দুল্লা বিন কালাম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গোপন সংবাদে কোতয়ালি থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই পাঁচজন হলেন, সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের মো. সোহেল ফকির (২৮), ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার শেখ খসরু (৩৬) ও মো. রিপন ওরফে লিমন (২৫) এবং শহরের শাহীন মোল্লা (৩৭) ও মো. তুষার (৫৩)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে যে পিস্তল দিয়ে হাবিব ফকিরকে গুলি করা হয়, সেই পিস্তল, একটি গুলি, তিনটি ধারাল চাকু ও এক বোতল দেশীয় মদ উদ্ধার করা হয়।
হাবিব ফকিরকে গুলি করার ঘটনায় তার ভাই আক্কাস ফকির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অপরদিকে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে সালথা থানায় ওই পাঁচ ব্যক্তিকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটিসহ আরও দুটি মামলা করেছেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান ওরফে তিতাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। আহত হাবিব ফকির কৃষ্ণপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক। একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি গত মঙ্গলবার সকালে আদালতে এসেছিলেন। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে একটি ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ইজিবাইকটি দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে পৌঁছালে কৃষ্ণপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামানের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী ইজিবাইকের গতিরোধ করে হাবিবকে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে হাবিবের দুই পায়ে গুলি করে। এছাড়া তার বাম পায়ে কুপিয়ে জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে আহত করে।
হাবিব ফকির বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
হাবিব ফকির সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের গোলাপ ফকিরের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, ফরিদপুর কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফফার, পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিল হোসেন, পরিদর্শক (পুলিশ কন্ট্রোল) সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাবিব ফকিরের ওপর হামলার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বলেন, বুধবার বিকালে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া ওই পাঁচ ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
(ঢাকাটাইমস/০১জানুয়ারি/এলএ)