নতুন বউ সোফাতে, ছেলের সঙ্গে ফুলশয্যার খাটে ঘুমাচ্ছেন মা! কলকাতার ধারাবাহিক নিয়ে ছি ছি

ওপার বাংলার টিভি সিরিয়ালের গল্প থেকে শুরু করে একাধিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই দর্শকের ও নেটিজেনদের কটাক্ষের মুখে পড়েন নির্মাতারা। তবে এবার শুধু সমালোচনা নয়, কার্যত রেগে লাল দর্শকরা। এবার ‘কার কাছে কই মনের কথা’ নামে একটি সিরিয়ালে দেখানো হলো, রাতে নতুন বউ বসে আছেন সোফাতে, ওদিকে ছেলেকে নিয়ে ফুলশয্যার খাটে ঘুমাচ্ছেন মা!
এখানে নতুন বউ শিমুলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মানালি দে। তার স্বামীর চরিত্রে আছেন বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায় এবং স্বামীর মা অর্থাৎ শাশুড়ির চরিত্রে আছেন স্নেহা চট্টোপাধ্যায়।
জি বাংলায় প্রচারিত ধারাবাহিকটির একটি দৃশ্যে দেখা যায়, অন্যতম মূল চরিত্র শিমুলের ফুলশয্যার খাটে শুয়ে তার স্বামী ও শাশুড়ি। শিমুল অর্থাৎ মানালি বসে আছেন চেয়ারে। সেখান থেকেই শুরু বিতর্ক।
ধারাবাহিকের গল্পে দেখা যাচ্ছে, শিমুলের স্বামী পরাগ ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। মা-ই তার সব। একদিকে সদ্য বিবাহিতা শিমুল শ্বশুরবাড়িতে আসার পর থেকেই তার শাশুড়ি তাকে সহ্য করতে পারছেন না। তাকে পদে পদে অপমান করছেন। স্বামী ভাইও কথায় কথায় অপমান করেন শিমুলকে।
অন্যদিকে পরাগ অর্থাৎ, শিমুলের স্বামীর কড়া নির্দেশ, তার মায়ের মুখের উপর কোনো কথা বলা যাবে না। এর মাঝেই ফুলশয্যার রাতের একটি দৃশ্য ঘিরে তৈরি হয় শোরগোল।
ফুলশয্যায় শিমুল তার স্বামীর জন্য উপহার আনলেও পরাগ কোনো উপহার আনেননি। এই উপহার বদলের মাঝেই তাদের ফুলশয্যার রাতে ঘরে শাশুড়ি চলে আসেন। আচমকাই শরীর খারাপের নাটক শুরু করেন তিনি। শেষমেশ দেখা যায়, ফুলশয্যার খাটে ছেলের সঙ্গে শুয়ে পড়ল মা আর নতুন বউ বসে রইল সোফায়।
জি বাংলা চ্যানেলের তরফ থেকে তিনটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘ফুলশয্যার দিন কেন সোফায় শুতে হলো শিমুলকে?’ সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সেই ধারাবাহিকের নির্মাতাদের প্রতি ধেয়ে এসেছে কটাক্ষের ঝড়। এই দৃশ্য যে দর্শকদের একেবারেই পছন্দ হয়নি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কমেন্ট বক্সে অনেকেই এই দৃশ্যকে ‘নোংরামি’ বলে দাবি করেছেন। অনেকেই লেখেন, এই দৃশ্যটি অন্য ভাবে সাজাতে পারতেন নির্মাতারা। এক দর্শক লেখেন, ‘এটা কোনো গল্প? মায়ের সাথে ছেলে ফুলশয্যার খাটে? এসব দেখে কি শিখবে সমাজ? কার চিন্তা ভাবনা এত জঘন্য?’
অন্য এক ব্যক্তি লেখেন, ‘কী নোংরা জঘন্য সিরিয়াল! ফুলশয্যার রাতে নাকি ছেলে আর মা খাটে একসাথে শুয়ে আছে, বউ শুয়ে আছে সোফাতে, এগুলো শুধু হাস্যকর নয়, রীতিমতো নোংরামি অসভ্যতামি।’
এক দর্শকের অনুরোধ, ‘একটাই রিকোয়েস্ট এই সিনটা দেখানোর কোনো মানে হয় না। এটা দেখানো মানে প্রত্যেকটা মায়ের অপমান, প্রত্যেকটা মেয়ের অপমান, এটা দেখানোর জন্য সমাজ যে কতটা নিচে নামতে পারে। নোংরামি দেখানোরও একটা সীমা আছে। আপনারা টিআরপির জন্য যা ইচ্ছা কেন দেখান?’ আরেক ব্যক্তির মন্তব্য ‘বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকে। সেটাও ছাড়িয়ে গেল’।
অনেকে আবার দর্শকদের কটাক্ষ করেছেন। এক ব্যক্তি লেখেন, ‘ভালো সিরিয়াল অন্য রকম সিরিয়াল কাকিমা মাসিমারা দেখে না, এরকম কুৎসিত নোংরামি মানসিকতা যুক্ত সিরিয়াল দেখাই বাংলার দর্শকদের রুচি, যেখানে চাহিদা আছে সেখানে যোগান আছে।
তাদের মতে, লেখক-লেখিকা-পরিচালককে দোষ দিয়ে লাভ কী? আমাদের নিম্ন রুচির জন্য সিরিয়ালও নিম্ন মানের হচ্ছে, এগুলো যদি দর্শক না দেখতে চাইতো তাহলে এসব সিরিয়াল হতো না। চ্যানেল আর প্রযোজক সংস্থা ব্যবসা করতে এসেছে ভাই, ভালো মানের সিরিয়াল এখন আর চলে না।
(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/এজে)

মন্তব্য করুন