নতুন বছর ২০২৪: সরকার গঠন, আন্দোলন নিয়ন্ত্রণসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ

বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একদিকে নতুন সরকার গঠন, অন্যদিকে বিরোধী পক্ষের আন্দোলন মোকাবিলা। তাই অন্যান্য বছরের মতো এবার রাজনীতির প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের মন্তব্য, অতীতের মতো সকল বাধা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে তারা। দেশের রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার সক্ষমতা আওয়ামী লীগের আছে।
তাই নতুন বছরে যেসব চ্যালঞ্জ আসবে তা মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করে নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখার কথা বলছে ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ নেতারা।
নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিএনপি ভোট বর্জন করতে জনগণকে ডাক দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমমনা দলগুলো। নির্বাচন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আগামীতে আরও জোরালো আন্দোলন করার কথা বলছে বিএনপি। আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে সরকারের ওপর। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির আন্দোলনকে রাজপথে থেকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিরোধী পক্ষের এ আন্দোলনকে মোকাবিলা করে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠান চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
নতুন বছরের চ্যালেঞ্জগুলো
বছরের প্রথম মাসে প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে নতুন সরকার গঠন করে বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করা। এই নির্বাচনের দিকে শুধু দেশের জনগণই নয়, বিশ্বের বড় বড় দেশও নজর রাখছে। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে বিশ্ব থেকে আসতে পারে বড় ধরনের কোনো নিষেধজ্ঞা। নির্বাচনের পরে বিরোধী রাজনীতি শিবিরের জোড়ালো আন্দোলন মোকাবিলা করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বললেও এটা দলটির জন্য নতুন বছরে বড় চ্যালেঞ্জে হিসেবে দেখছেন শীর্ষ নেতারা। একই সঙ্গে বিশ্ব রাজনীতির কারণে অর্থনীতির অবস্থা টালমাটাল। সেই প্রভাব বাংলাদেশও আছে। তাই ডলার সংকট দূর করা ও দেশের অর্থনীতির অবস্থার ধরে রাখা ক্ষমতাসীন দলটির জন্য আরেক চ্যালেঞ্জ।
বিরোধী পক্ষকে সামাল দিতে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বললেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। যা সমাধানে বেশ বেগ পেতে হতে পারে দলটিকে। বিরোধী পক্ষকে মোকাবিলা করে দলের কোন্দল মিটানো আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ। সবকিছু মিলে বছরটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই।
গত বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে দলের ইশতেহার ঘোষণা করার সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে যাচ্ছে দেশ। এই উত্তরণ যেমন একদিকে সম্মানের, অন্যদিকে বিশাল চ্যালেঞ্জেরও। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, নতুন বছরে আওয়ামী লীগ নতুন সরকার গঠন করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিয়ে পঞ্চম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী করবেন শেখ হাসিনাকে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিরোধী পক্ষ নেই। কারা আন্দোলন করবে? বিএনপি তো আগুন সন্ত্রাস করে, গুপ্ত হামলা করে। এদেরকে বিরাধী পক্ষ ভাবি না, এরা সন্ত্রাসী দল। এদেরকে দেশের মানুষ প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগ জনগণের দল জনগণের জন্য চ্যালেঞ্জ নেয়।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি ঢাকা টাইমসকে বলেন, আওয়ামী লীগের একটাই চ্যালেঞ্জ শুধু নির্বাচন করা। সুষ্ঠু নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ নতুন সরকার গঠন করবে। আওয়ামী লীগ শান্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী, কোনো দমন-পীড়নের রাজনীতি করে না। দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্রের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। তার মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
(ঢাকাটাইমস/১ জানুয়ারি/জেএ/বিবি)

মন্তব্য করুন