এইচএসসি ও সমমনা পরীক্ষায় বসলেন সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

করোনা ও ডেঙ্গুর শঙ্কার মধ্যে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সারা দেশে আজ থেকে একযোগে শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হওয়া লিখিত পরীক্ষা চলবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর ১১ আগস্ট থেকে শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা, যা চলবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ১০ লাখ ৫৫ হাজার, আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজার এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৯ হাজারের বেশি। পরীক্ষাগুলো দেশের দুই হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রশ্নফাঁসের গুজব প্রতিরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে রয়েছে। এ ছাড়া ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
পরীক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—
পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ
ওএমআর শিটে সঠিক তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট
উত্তরপত্র ভাঁজ না করা
শুধু সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার
মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
পরীক্ষায় আলাদাভাবে তত্ত্বীয়, এমসিকিউ ও ব্যবহারিক অংশে উত্তীর্ণ হতে হবে
পরীক্ষার আসন নির্ধারণ করা হয়েছে অন্য প্রতিষ্ঠানে
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৩৩ দফা নির্দেশনায় আরও জানিয়েছে—প্রতি ২০ পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক, শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব, প্রশ্নপত্র নির্ধারিত সেট অনুযায়ী খোলা এবং অব্যবহৃত সেট ফেরত পাঠানো বাধ্যতামূলক।
পরীক্ষার সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন না হয়, সে জন্য স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসকে আগেভাগে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে শুধুমাত্র এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহার করা যাবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সমন্বয়ক খন্দকার এহসানুল কবির জানিয়েছেন, “সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন পুরো সময়জুড়ে সতর্ক থাকবে।”
স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে কঠোরভাবে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা পরিচালনার দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থী, কক্ষ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্টদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশনাও রয়েছে।
এদিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৭টি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধিগুলো হলো-
১. কেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।
২. পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
৩. ডেঙ্গু বিস্তার রোধে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে এবং আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৪. পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে মশক নিধন ওষুধ স্প্রে করতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।
৫. পরীক্ষা কক্ষের আসন বিন্যাস বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে।
৬. প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের মেডিকেল টিমকে সক্রিয় রাখতে হবে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।
৭. জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের জটলা নিরুৎসাহিত করার প্রচারণা চালাতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৬ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন