টেকনাফে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান, অস্ত্র-সরঞ্জাম উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। এ সময় অস্ত্র ও বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অস্ত্রের কারিগর মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টারকে। মনিরুল ইসলাম রামু ঈদগড়ের মৃত আবদুল জলিলের পুত্র।
শুক্রবার এই অভিযান চালানো হয়। র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আবু সালাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, র্যাবের কাছে খবর আসে টেকনাফ হ্নীলার পশ্চিম জুম্মাপাড়া এলাকার লামা শীলের ঝিরি পাহাড়ের পাদদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদক নিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী অবস্থান করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি টিম সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানে র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর সময় অস্ত্রের কারিগর মনির মাস্টারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আরও ৩/৪ জন ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে ওই স্থান থেকে ২টি দেশীয় তৈরি এক নলা বন্দুক, ২টি দেশীয় তৈরি এলজির ব্যারেল, ২টি হাতল ব্যতীত দেশীয় তৈরি এলজির বডি, লোহার তৈরি দেশীয় এলজির ট্রিগারের বিভিন্ন ছোট অংশ ১৪টি, ১টি কাঠের হাতল যুক্ত করাত, ১টি লোহার তৈরি ড্রিল মেশিন, লোহার তৈরি বেঞ্চ বাইছ ১টি, ১টি লোহার টি আকৃতির বস্তু (যার লোহা পিটানো কাজে ব্যবহৃত হয়), হাতুড়ি ২টি, ব্লেড সংযুক্ত একটি হেস্কো মেসিন (যা লোহা কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়) ও হেস্কো ব্লেড ৫টি, প্লাস ২টি, কাটিং প্লায়ার ১টি, লোহার তৈরি চিমটি ১টি, স্ক্রু ড্রাইভার ১টি, বাটাল ১টি, রামদা ১টি, লোহার পাইপ ৫টি এবং তার কাটা ৬৬টি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, কক্সবাজারের অন্যতম শীর্ষ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতা ও যোগানদাতা হলেন মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল স্বীকার করে সে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছে এবং অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে মনিরুল ইসলাম থেকে মনির মাস্টার উপাধি পেয়েছে। এছাড়াও সে জানায়, তার পিতার কাছ থেকে সে অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ নেয় এবং দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ অস্ত্র তৈরি পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে এবং অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের সহযোগিতায় নিজেরা পরস্পর পরস্পরের জ্ঞাতস্বারে এবং সহযোগিতায় কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র বর্ণিত গোপন আস্তনায় তৈরি করে কক্সবাজার শহর ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং আরসা সদস্যদের নিকট উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে থাকে।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেপ্তারকৃত ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এআর)

মন্তব্য করুন